রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হলোকাস্ট অস্বীকারের মতো ঘৃণ্য গাজায় ক্ষুধা অস্বীকার

প্রকাশিত : ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ, ৪ আগস্ট ২০২৫ সোমবার ২৫ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ইহুদি হলোকাস্ট অস্বীকারের মতো ঘৃণ্য ঘটনা পৃথিবীতে খুব বেশি নেই। যারা এটি অস্বীকার করে তারা বলে, এটি আদৌ ঘটেনি, আর যদি ঘটেও থাকে, মৃতের সংখ্যা খুবই সামান্য ছিল। তেমনই ঘটনা ঘটছে এবার গাজা নিয়েও। সেখানে ক্ষুধার সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। অনাহার, অপুষ্টিতে উপত্যকায় প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে শিশু, কিশোর ও বৃদ্ধ।

হারেৎজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার পরিস্থিতি উপেক্ষা করতে প্রথমে হামাসকে দোষারোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যুদ্ধের সময় এমন হয়। এমনকি দাবি করা হয়েছে, গাজায় কোনো নির্দোষ মানুষ নেই। তবে ইসরায়েলের অপরাধ এতটা সীমা অতিক্রম করেছে, তা আর অস্বীকার করার উপায় নেই।

হারেৎজের সাংবাদিক নির হাসোন বলেন, গাজায় ইচ্ছাকৃতভাবে প্রাণঘাতী অনাহার শুরু করেছে দখলদার বাহিনী। এখন এ পরিস্থিতি অস্বীকার করাটা ঠিক ততটাই ঘৃণ্য, যতটা হলোকাস্ট অস্বীকার করা হয়। গণহত্যার উদ্দেশ্য গাজার মানুষকে জোরপূর্বক অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও অস্বীকার করেছে ইসরায়েল। গাজার অনাহারকে বলা হচ্ছে, ‘ইহুদিবিদ্বেষী ষড়যন্ত্র’। যদি ক্ষুধা থেকেই থাকে, তাহলে দায় হামাসের। এভাবেই বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

‘গাজায় অনাহার নেই’– এই দাবির পেছনে যুক্তি দেখানো হচ্ছে, ‘সীমান্তে তো ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে’, ‘ক্ষুধায় মারা যাওয়া শিশুদের মা-বাবা মোটা’, ‘হামাসের একটি ভিডিও আছে যেখানে তারা গুহায় বসে কলা খাচ্ছে’– যদিও ছবিটি ছয় মাস আগের এবং এটি ছড়াচ্ছে আইডিএফ মুখপাত্র, যিনি দেশের সবচেয়ে বড় মিথ্যা প্রচারক। এই অস্বীকার কেবল দায় এড়ানো না, এর চেয়ে বেশি ঘৃণার বিষয় ভিকটিমদের প্রতি অবমাননা করা হচ্ছে, বলেন হাসোন। যে মা তাঁর ক্ষুধার্ত, মৃতপ্রায় শিশুকে কোলে নিয়ে কাঁদছেন, তাঁকে বলা হচ্ছে, ‘এটি ইচ্ছাকৃত অনাহার নয়।’ এটি তাঁর যন্ত্রণাকে বিদ্রুপ করারই নামান্তর। গাজার ক্ষুধার্ত শিশুদের ছবি বিশ্বের সংবাদপত্র ও টিভি স্ক্রিনে ছেয়ে গেছে– তবুও ইসরায়েলিরা তা অস্বীকার করছে। কী আত্মবিশ্বাস নিয়ে তারা বলছে, এসব ছবি ভুয়া, ক্ষুধায় কেউ মরেনি।

‘চ্যাম্পিয়ন’ ফিলিস্তিনি কিশোরকে মরতে হলো অনাহারে
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অনাহার ও অপুষ্টিতে ভুগে শনিবার ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর মারা গেছে। আগে তার কোনো অসুস্থতা ছিল না। কিন্তু খাবারের অভাবে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে সে মারা যায়। কিশোরের স্বজন ও চিকিৎসাকর্মীরা এমনটাই বলেছেন। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজা উপত্যকার মানুষ তীব্র সংকটে আছে। সেখানকার মানুষ এখন খাবারের জন্য মরিয়া। ইসরায়েল সেখানে ত্রাণ পৌঁছাতে দিচ্ছে না। শনিবার মারা যাওয়া ওই কিশোরের নাম আতেফ আবু খাতের। গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের একটি সূত্র আলজাজিরাকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

গাজায় জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে খাবার নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে নিয়মিত গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। জাতিসংঘ চলতি সপ্তাহে বলেছে, গত মে মাসে এই সংস্থার কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এক হাজার তিন শতাধিক ত্রাণপ্রত্যাশী নিহত হয়েছেন।

আলজাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ বলেন, আতেফ স্থানীয়ভাবে খেলাধুলায় চ্যাম্পিয়ন ছিল। কিন্তু খাবার খেতে না পারায় তার ওজন কমে যায়। প্রচণ্ড অপুষ্টিতে ভোগার পর অবশেষে সে মারা যায়। আতেফ গাজায় তীব্র অপুষ্টির শিকার হাজার হাজার মানুষের একজন মাত্র।

আলজাজিরার যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আতেফের পরিবার তাকে শেষ বিদায় জানাচ্ছে। সেখানে তার শীর্ণকায় মরদেহ দেখা যাচ্ছে। তার মুখ ক্যামেরা থেকে আড়াল রাখা হয়েছে।

আতেফের পরিবার বলেছে, মৃত্যুর সময় তার ওজন কমে মাত্র ২৫ কেজি হয়েছিল। আগে তার ওজন ছিল ৭০ কেজি। ২৫ কেজি ওজন সাধারণত ৯ বছর বয়সী শিশুদের হয়ে থাকে। আতেফের গালে একটুও চর্বি ছিল না। মুখমণ্ডলের হাড়গুলো স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছিল।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT