সোমবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের মদদে ঘটেছে ট্রেন হাইজ্যাকিং, দাবি পাকিস্তানের

প্রকাশিত : ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ণ, ১৫ মার্চ ২০২৫ শনিবার ৬০ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী দাবি করে বলেছেন, বেলুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন হাইজ্যাকের মূল মদদদাতা ছিল ভারত।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

এদিন বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং ভারতীয় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ আনেন।

গত ১১ মার্চ দুপুর ১টার দিকে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে একটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরিত হয়। এরপর ভারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে ওই ট্রেনে হামলা চালায়।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ জানান, সন্ত্রাসীরা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে কাজ করছিল। একদল নারী ও শিশুদের ট্রেনের ভেতর আটকে রেখে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, অন্যদল যাত্রীদের বাইরে টেনে নিয়ে যায় এবং জিম্মি করে পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যায়।

সন্ত্রাসবিরোধী সফল অভিযান

পাকিস্তানের ফ্রন্টিয়ার কর্পস (এফসি) ‘জরর কোম্পানি’ বেলুচিস্তান ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুততার সঙ্গে একটি পরিকল্পিত অভিযান পরিচালনা করে। যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ৩৩ সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয় এবং সব জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় কোনো বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, যদিও অভিযানের আগে কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে।

বিদেশি যোগসূত্র ও ভারতীয় অপপ্রচার

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআর প্রধান বলেন, হামলাকারীরা আফগানিস্তানে অবস্থিত হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল এবং তারা বিদেশি অস্ত্র ব্যবহার করছিল।

তিনি বলেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং একটি বৃহত্তর সীমান্ত সন্ত্রাসী পরিকল্পনার অংশ।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ জোর দিয়ে বলেন, এ ঘটনায় ভারতীয় গণমাধ্যম মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও তৈরি করেছে, যা পরে ভারতীয় সংবাদ চ্যানেলগুলোতেও প্রচারিত হয়।

বেলুচিস্তান সরকারের প্রতিক্রিয়া

এদিকে বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, যারা বেলুচ জাতীয়তাবাদের নামে সন্ত্রাস চালায়, তাদের বেলুচ জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি এ সময় পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর দক্ষ প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জাতীয় কর্মপরিকল্পনার গুরুত্ব

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী পাকিস্তানের জাতীয় কর্মপরিকল্পনার কঠোর বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, সন্ত্রাস নির্মূলে ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে:

🔹 সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা;

🔹 সন্ত্রাসের অর্থায়ন বন্ধ করা;

🔹 গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্ত্রাসী প্রচারণা প্রতিরোধ;

🔹 সন্ত্রাসবিরোধী তদন্তের গতি বাড়ানো;

🔹 মাদ্রাসা নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ

তিনি জানান, ২০২৫ সালে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ১১,৬৫৪টি অভিযান পরিচালনা করেছে। যার মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১৮০টি গোয়েন্দা ভিত্তিক অভিযান পরিচালিত হয়।

আফগানিস্তানের ভূমিকা

আইএসপিআর প্রধান দাবি করেন, আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম পাকিস্তানে হামলার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

তার মতে,

🔸 আফগানিস্তানে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ ও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে;

🔸 মার্কিন বাহিনীর ফেলে যাওয়া অস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করছে;

🔸 আফগানিস্তান প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শত্রু শক্তির প্রক্সি হিসেবে কাজ করছে।

তিনি জানান, সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের অর্থায়নে চোরাচালানের ভূমিকা রয়েছে, যা পাকিস্তান সরকার কঠোরভাবে দমন করছে।

ভারতের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি

পাকিস্তান আইএসপিআর প্রধান এ সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ভারতকে পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে মদদ দেওয়ার জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক।

তার ভাষায়, ‘এটিই প্রথমবার নয় যে, পাকিস্তানের ভেতরে সন্ত্রাসী হামলায় ভারতের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। বিশ্বকে এ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে হবে’।

হামলার পটভূমি

গত ১১ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টায় কোয়েটা থেকে ৪৪০ জন যাত্রী নিয়ে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি রওনা দেয়। গুদালার ও পেরু কানরি অঞ্চলে পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা এতে হামলা চালায়। তারা প্রথমে গুলি চালায় এবং পরে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ২১ জন যাত্রী ও সেনাসদস্য শহিদ হন।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্রুত অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসীদের পর্বতমালার দিকে ধাওয়া করে এবং জিম্মিদের নিরাপদে উদ্ধার করে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে সদা সতর্ক রয়েছে। পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় যারা লিপ্ত, তারা ব্যর্থ হবে। আর আমাদের জাতীয় ঐক্য বিজয়ী হবে’।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT