রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিশুদের সিসিমপুর ১৯ বছরে পা দিল

প্রকাশিত : ০৪:১৮ অপরাহ্ণ, ১২ এপ্রিল ২০২৩ বুধবার ১৫৫ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের শেখাকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্য নিয়ে ‘সিসিমপুর’ নামে যে কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৫ সালে, তা ১৮ পেরিয়ে পা রাখছে ১৯তম বছরে। টেলিভিশনে সিসিমপুরের প্রথম প্রচারের দিন হিসেবে প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল তারিখটিকে ‘সিসিমপুর দিবস’ হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

সিসিমপুর তার টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও মুদ্রিত বিভিন্ন উপকরণের মাধ্যমে শিশুকে বর্ণ চেনা, শব্দ থেকে বর্ণ চিহ্নিত করা, বর্ণ দিয়ে শব্দ মেলানো, শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করতে সাহায্য করে। চারপাশের পরিবেশ থেকে উপকরণ খুঁজে নিয়ে সেগুলোর মাধ্যমে বর্ণ ও শব্দ চিনতে সাহায্য করে। যেমন: বল, ঘর, কলা, আম, টেবিল, ঘড়ি, গরু, গাছ, পাতা, কলম, বই ইত্যাদি শিশুর পরিচিতি বিভিন্ন শব্দ কোন বর্ণ দিয়ে শুরু হয়, তা বিনোদন ও খেলার ছলে শেখানো হয়। সিসিমপুরের চরিত্রগুলোর মাধ্যমে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান থেকে বিভিন্ন আকার-আকৃতির নাম, রঙের নাম, গাণিতিক ধারণা, ইত্যাদি শেখানো হয়।

বাংলা ভাষার শুদ্ধ উচ্চারণের বিষয়টিকে সিসিমপুর সব সময়ই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে। আর তাই সিসিমপুরের সব ধরনের পর্বে চরিত্র অনুযায়ী প্রত্যেকের শুদ্ধ উচ্চারণকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়, যাতে শিশুরা এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রমিত বাংলা শোনার ও চর্চা করার সুযোগ পায়। আবার একই সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা, ঐতিহ্য আর জীবনযাপনকেও তুলে ধরা হয়, যাতে করে শিশুরা সমানভাবে আঞ্চলিক ভাষা-সংস্কৃতি এবং ভিন্ন ভাষা-সংস্কৃতির মানুষের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হয়।

বর্তমানে টেলিভিশনে সিসিমপুরের ১৫তম সিজনের প্রচার চলছে। এই সিজন থেকে সিসিমপুরে যুক্ত হয়েছে ‘জুলিয়া’ নামে একটি নতুন চরিত্র। জুলিয়া অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু। বাংলাদেশের অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুদের প্রতিনিধিত্ব করছে জুলিয়া। জনপ্রিয় এই অনুষ্ঠান দুরন্ত, মাছরাঙা এবং বিটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে। তবে শুরু থেকেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১৮ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে সিসিমপুর সম্প্রচার একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যা বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং সিসিমপুরের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফল। তিনটি টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ দর্শক নিয়মিতভাবে সিসিমপুর উপভোগ করে।

বর্তমানে মৌলভিবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার ২৫০টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাজ করছে সিসিমপুর। ইউএসএআইডি/বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতায় এসব স্কুলের শিশুদের বিশেষ করে প্রান্তিক শিশুদের শেখার দক্ষতা বৃদ্ধি ও স্কুলে বৈষম্যহীন শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছে। এজন্য স্কুলগুলোর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, স্কুলগুলোতে শিক্ষা উপকরণ প্রদান ও সিসিমপুর পাঠাগার তৈরি, অভিভাবক ও কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে অভিভাবক সমাবেশসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে সিসিমপুর।

প্রতিবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শিশুদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের বিষয়ে পরিণত হয়েছে সিসিমপুর। মেলায় প্রতি শুক্র-শনি আর ছুটির দিনগুলোতে ইকরি, হালুম, টুকটুকি আর শিকুর সঙ্গে মজার সময় কাটাতে শিশুদের ঢল নামে, যা ইতিমধ্যেই অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে।

এ বছর প্রথমবারের মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ব্রেইলে লেখা ১০টি গল্পের বই প্রকাশ করেছে সিসিমপুর। এছাড়া অচিরেই সিসিমপুরের কিছু পর্বে যুক্ত করা হবে ইশারা ভাষা। দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের সিসিমপুরের সঙ্গে যুক্ত করতেই এই উদ্যোগ।

সিসিমপুরের ১৯ বছরে পা দেওয়া উপলক্ষ্যে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ১৮ বছর ধরে শিশুতোষ এই অনুষ্ঠান নির্মিত হচ্ছে তিন থেকে আট বছর বয়সী শিশুর প্রারম্ভিক শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে। সেই সঙ্গে সিসিমপুরের লক্ষ্য শিশুর পিতা-মাতা, যত্নকারী এবং শিক্ষকেরাও। আনন্দ আর খেলার ছলে সিসিমপুর ভূমিকা রেখে চলেছে শিশুর সামগ্রিক বিকাশে। ভাষা-বর্ণ; গণিত; পরিবেশ; সুষম ও পুষ্টিকর খাবার; স্বাস্থ্যসুরক্ষার মতো মৌলিক বিষয়গুলো ছাড়াও সিসিমপুর জেন্ডার সমতা; সামাজিক মূল্যবোধ; নিরাপদে খেলাধুলা করা, দুর্যোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যকর অভ্যাসচর্চা; ভূমিকম্প; রাস্তা পারাপার ও পানি ডুবি-বিষয়ক নিরাপত্তা; বিভিন্ন আঘাত প্রতিরোধে সচেতনতা; সঞ্চয় ও পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা এবং বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ইত্যাদি নানা বিষয় শিশুদের শিখতে সাহায্য করেছে সিসিমপুর। পাশাপাশি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মমত্ববোধ, অভিন্নত্ব ও বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাসহ দেশের সকল মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে সিসিমপুর।

সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের সব কার্যক্রমই সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় পরিচালিত হয়। গত ১৮ বছরে সিসিমপুর বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে এবং করছে। এ ছাড়া সিসিমপুরের পথচলায় পাশে আছে ইউএসএআইডি/বাংলাদেশ সহ আরও কিছু দাতা সংস্থা।

নিউইয়র্কভিত্তিক সিসেমি স্ট্রিট নামক শিক্ষামূলক টেলিভিশন-ধারাবাহিকের সহপ্রযোজনা সিসিমপুরের কার্যক্রম বাংলাদেশে পরিচালনা করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

২০২১ সালের মিসওয়ার্ল্ড তথা বিশ্বসুন্দরীর খেতাব পেয়েছেন পোল্যান্ডের মডেল ক্যারোলিনা বিলাস্কা।   বুধবার ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র পুয়ের্তো রিকোর রাজধানী সান হুয়ানে জমকালো এক অনুষ্ঠানে সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে সেরার মুকুট পরেন ক্যারোলিনা।    ৭০তম বিশ্বসুন্দরী হলেন এই পোলিশ তরুণী। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রী শাইনি আসেন ও আইভরি কোস্টের অলিভিয়া ইয়াস।  মিসওয়ার্ল্ডের অফিসিয়াল টুইটার পেজে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।      প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেওয়ার সময় দেওয়া তথ্য বলছে, ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স পাশ করছেন ক্যারোলিনা। পিএইচডি করতে চান তিনি। পাশাপাশি চালিয়ে নিতে চান মডেলিংটাও।  পিএইচডি শেষে মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবেও কাজ করার স্বপ্ন রয়েছে তার। মানবিক কাজে আত্মনিয়োগে আরো বেশি জড়িয়ে পড়তে চান।  ক্যারোলিনা জানান, দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালোবাসেন তিনি। এমন কিছু প্রকল্পে ইতোমধ্যে যুক্তও হয়েছেন। তার বিউটি উইথ আ পারপাস প্রোজের মাধ্যমে ছিন্নমূলদের সাহায্য করা হচেছ।  বাস্তুহারাদের নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। প্রতি রোববার পোল্যান্ডের লডজ শহরের ৩০০ মানুষকে খাবার, পানি, কাপড়, মাস্ক, জামাকাপড়, আইনি পরামর্শ, চিকিৎসাজনিত সাহায্য পৌঁছে দেয় প্রকল্পটি।    নিজ দেশের সরকারের সাথে সমন্বয় করে জনগণদের করোনা টিকা দিয়ে যাচ্ছে ক্যারোলিনার এই ফাউন্ডেশন। পোল্যান্ডের লডজ শহরে তাঁরাই প্রথম ‘সোশ্যাল বাথরুম’ তৈরি করে।  সামাজিক কর্ম ছাড়াও অবসর পেলে ক্যারোলিনা সাঁতার, স্কুবা ডাইভিং, টেনিস আর ব্যাডমিন্টন খেলেন।   প্রসঙ্গত, ‘মিসওয়ার্ল্ড ২০২১’ গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর হওয়া কথা ছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার কারণে এটি স্থগিত করা হয় সেই সময়।

২০২১ সালের মিসওয়ার্ল্ড তথা বিশ্বসুন্দরীর খেতাব পেয়েছেন পোল্যান্ডের মডেল ক্যারোলিনা বিলাস্কা। বুধবার ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র পুয়ের্তো রিকোর রাজধানী সান হুয়ানে জমকালো এক অনুষ্ঠানে সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে সেরার মুকুট পরেন ক্যারোলিনা। ৭০তম বিশ্বসুন্দরী হলেন এই পোলিশ তরুণী। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রী শাইনি আসেন ও আইভরি কোস্টের অলিভিয়া ইয়াস। মিসওয়ার্ল্ডের অফিসিয়াল টুইটার পেজে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেওয়ার সময় দেওয়া তথ্য বলছে, ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স পাশ করছেন ক্যারোলিনা। পিএইচডি করতে চান তিনি। পাশাপাশি চালিয়ে নিতে চান মডেলিংটাও। পিএইচডি শেষে মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবেও কাজ করার স্বপ্ন রয়েছে তার। মানবিক কাজে আত্মনিয়োগে আরো বেশি জড়িয়ে পড়তে চান। ক্যারোলিনা জানান, দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালোবাসেন তিনি। এমন কিছু প্রকল্পে ইতোমধ্যে যুক্তও হয়েছেন। তার বিউটি উইথ আ পারপাস প্রোজের মাধ্যমে ছিন্নমূলদের সাহায্য করা হচেছ। বাস্তুহারাদের নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। প্রতি রোববার পোল্যান্ডের লডজ শহরের ৩০০ মানুষকে খাবার, পানি, কাপড়, মাস্ক, জামাকাপড়, আইনি পরামর্শ, চিকিৎসাজনিত সাহায্য পৌঁছে দেয় প্রকল্পটি। নিজ দেশের সরকারের সাথে সমন্বয় করে জনগণদের করোনা টিকা দিয়ে যাচ্ছে ক্যারোলিনার এই ফাউন্ডেশন। পোল্যান্ডের লডজ শহরে তাঁরাই প্রথম ‘সোশ্যাল বাথরুম’ তৈরি করে। সামাজিক কর্ম ছাড়াও অবসর পেলে ক্যারোলিনা সাঁতার, স্কুবা ডাইভিং, টেনিস আর ব্যাডমিন্টন খেলেন। প্রসঙ্গত, ‘মিসওয়ার্ল্ড ২০২১’ গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর হওয়া কথা ছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার কারণে এটি স্থগিত করা হয় সেই সময়।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT