যখন মন ছুটে যায় বাংলাদেশে
প্রকাশিত : ০৭:৩২ পূর্বাহ্ণ, ১৬ মার্চ ২০২৩ বৃহস্পতিবার ১৩৩ বার পঠিত
দূর পরবাসে হাজারো কাজের ভিড়ে প্রতিদিনই কোন না কোন সময় মন ছুটে যায় সুদূর বাংলাদেশে পরিবার পরিজনের কাছে।
বিশেষ করে যখন পরিবারে কোন অনুষ্ঠান বা বিশেষ কোন উপলক্ষে আত্মীয় স্বজনদের মিলনমেলা হয় তখন প্রতিটি মুহূর্তে মন ছুটে যেতে চায় সেখানে।
কিন্তু প্রবাস, সেতো দূর বহুদূরের পরবাস। মন চাইলেই এখান থেকে যখন তখন ছুটে যাওয়া যায়না বাংলাদেশে পরিবার পরিজন এবং আত্মীয় স্বজনের কাছে। আর তার সঙ্গে স্বামী-সন্তান আর সংসার, সঙ্গে নিজের পড়াশুনাতো আছেই।
সম্প্রতি একটি পারিবারিক মিলনমেলায় মন ছুটে গিয়েছে বার বার। এ বছরের ১০ মার্চ (শুক্রবার) ভিন্ন রকমের কিন্তু ঐতিহাসিক এক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল আমাদের পরিবারে। মিলনমেলা বসেছিল আমার মায়ের মামাবাড়ি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার মশাউড়া গ্রামে। সেদিন সেখানে বসেছিল চার প্রজন্মের মিলন মেলা।
মিলন মেলা বসেছিল ফজর মোহাম্মদ বিশ্বাস ও সামসুন্নেসার ছেলে মেয়ে নাতি-নাতনি ও পুতি পুতনিদের নিয়ে। এ যেন এক বিশাল বটবৃক্ষ ও তার শাখা-প্রশাখা।
এই পরিবারের সবচেয়ে বড় নাতি ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন দানকারী শহীদ আ খ ম সাইফুল ইসলাম ঠান্ডু। মুক্তিযুদ্ধে তার অসীম বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ রাজশাহীর ভদ্রার মোড়ে নির্মিত হয়েছে ‘স্মৃতি অম্লান’ ভাস্কর্য।
উত্তরসুরীদের মহা মিলনমেলার উদ্দেশ্য ছিলো পারস্পরিক চেনা পরিচয় বৃদ্ধি করা, আত্নীয়তার সম্পর্ক মজবুত করা, পারস্পরিক সহযোগীতা বৃদ্ধি করা। একটা ফান্ড গঠন করে পরিবারের কোন সদস্যের লেখাপড়া, চিকিৎসা, বিবাহ ইত্যাদিতে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সেখানে সহযোগিতা করা সহ বিভিন্ন গঠনমূলক কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে অনুষ্ঠানে।
ফজর মুহাম্মদ বিশ্বাস ও সামসুন্নেসার কনিষ্ঠ কন্যা হাসিনা বানুর মেজ মেয়ে হাসিবা খাতুনের বড় মেয়ে আমি। বর্তমানে জার্মানির মাইঞ্জ শহরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি এবং জোহানেস গুটেনবার্গ ইউনিভার্সিটি অফ মাইঞ্জ এ পদার্থ বিজ্ঞানে গবেষণারত আছি।
প্রায় তিন শতাধিক আত্মীয় স্বজন অংশগ্রহণ করেছিল সেদিনের সে মিলনমেলায়। দেশের স্বজনদের প্রায় সবাই অংশগ্রহণ করেছিল সেই অনুষ্ঠানে।
কিন্তু আমরা যারা প্রবাসে তারা উপস্থিত হতে না পারলেও আমাদের মন পড়েছিল সেই মিলনমেলায়, চোখ ছিল মোবাইলের স্ক্রিনে অনুষ্ঠানের আপডেটের জন্য। কোন কাজেই যেন মন বসাতে পারছিলাম না। মনের ভিতর এক অন্য রকম আবেগ কাজ করছিল সারাদিন।
কষ্ট আরও বেড়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম যখন মিলনমেলার ভিডিও দেখে জার্মানিতে জন্ম নেওয়া আমার তিন বছরের মেয়ে বলে উঠে ‘মাম্মি আমার যেতে মঞ্চ (মন চায়)’। নিজের আবেগ আটকে রাখতে পারছিলাম না, দুই চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিলো। মেয়েকে বুকে নিয়ে কল্পনায় চলে গিয়েছিলাম পারিবারিক সেই মহা মিলনমেলায়।
ইনশাআল্লাহ্ কোন এক মিলন মেলায় আমিও আমার মেয়ে তাবিয়াহকে এবং মেয়ের বাবাকে নিয়ে সবার সঙ্গে উপস্থিত থাকব। আমার জার্মান মেয়ে সেদিন মঞ্চে উঠে গাইবে, ‘আমি বাংলায় গান গাই, আমি বাংলার গান গাই। আমি আমার আমিকে চিরদিন-এই বাংলায় খুঁজে পাই। আমি বাংলায় গান গাই….’
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।