রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬৮তম স্বাধীনতা দিবস: ঐক্যের উৎসবে প্রস্তুত মালয়েশিয়া

প্রকাশিত : ০৬:০৩ অপরাহ্ণ, ২৯ আগস্ট ২০২৫ শুক্রবার ১৫ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

মালয়েশিয়ার আকাশজুড়ে উৎসবের আমেজ। ৩১ আগস্ট দেশটি উদযাপন করবে ৬৮তম স্বাধীনতা দিবস বা হারি মেরদেকা। রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত রঙিন পতাকা, আলোকসজ্জা আর স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারপাশ।

‘মেরদেকা মানে স্বাধীনভাবে বাঁচা’

কুয়ালালামপুরের এক দোকানদার, ৬৫ বছর বয়সী হাজি সালেহ, যিনি স্বাধীনতার প্রথম দিনটি প্রত্যক্ষ করেছিলেন, স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বললেন, “আমি তখন শিশু। মনে আছে, লোকজন চিৎকার করে ‘মেরদেকা, মেরদেকা’ বলছিল। আজও সেই দিনের উত্তেজনা শরীর কাঁপিয়ে তোলে। স্বাধীনতার মানে শুধু বিদেশি শাসন থেকে মুক্তি নয়, স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার।”

পুত্রাজায়ায় এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সিতি নুরাইশা মনে করেন, স্বাধীনতা দিবস নতুন প্রজন্মকে দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা দেয়।

“আমাদের জন্য মেরদেকা মানে আধুনিক প্রযুক্তি, সমান সুযোগ আর বিশ্বে শক্তিশালী মালয়েশিয়া। আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে আরও এগিয়ে নিতে।”

থিমে ঐক্যের প্রতিফলন

এবারের মেরদেকা দিবসের প্রতিপাদ্য— “Malaysia MADANI: সেপাকত, বেরশামা, বারসামা”। সরকারের মতে, এই থিমের লক্ষ্য হলো জাতিগত, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মধ্যেও ঐক্যের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করা।

প্রস্তুতির শেষ মুহূর্ত

দেশটির দাতারান পুত্রাজায়াতে হবে প্রধান অনুষ্ঠান। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ, শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা এবং ঐতিহাসিক দৃশ্যপটের নাট্যরূপ দর্শকদের ফিরিয়ে নেবে ১৯৫৭ সালের সেই দিনটিতে।

জাতীয় সংস্কৃতি ও শিল্পকলা বিভাগের (জেকেকেএন) মহাপরিচালক মোহাম্মদ আমরান মোহাম্মদ হারিস বলেন, প্রস্তুতির সমন্বয় সাধনের জন্য একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চলাচল এবং মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান ইব্রাহিমের আগমন অন্তর্ভুক্ত।

বৃহস্পতিবার দাতারান পুত্রজায়ায় সাক্ষাৎকালে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরের বিষয়গুলো মোকাবেলা করার সময় জাতীয় দিবসের কর্মসূচি কমিটির সামনে এটি একটি চ্যালেঞ্জ।’

‘আমাদের অগ্রাধিকার হল সমগ্র অনুষ্ঠানটি সময়সূচি অনুসারে পরিচালিত হওয়া নিশ্চিত করা, মহামান্যের আগমন থেকে অনুষ্ঠান শেষ হওয়া পর্যন্ত দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে না চলা।

২০২৫ সালের জাতীয় দিবস উদযাপন রোববার সকাল ৭টা থেকে দেশের নেতা এবং সুলতান ইব্রাহিমের আগমনের মাধ্যমে শুরু হবে।

রয়েল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনীর কর্মীদের দ্বারা জালুর গেমিল্যাং উত্তোলন, রুকুন নেগারা অঙ্গীকার পাঠ এবং বিভিন্ন সংস্থার অংশগ্রহণকারীদের অংশগ্রহণে একটি কুচকাওয়াজের মাধ্যমে উদযাপন শুরু হবে।

এই বছরের মূল কুচকাওয়াজে মোট ১৪,০১০ জন অংশগ্রহণকারী, ৭৮টি যানবাহন, সাতটি সুসজ্জিত ভাসমান নৌকা, ১১৬টি প্রাণী এবং ২১টি মার্চিং ব্যান্ড অংশগ্রহণ করবে।

এই বছরের আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে আসিয়ান চেয়ারম্যানশিপ এবং ভিজিট মালয়েশিয়া ২০২৬ সহ সাতটি সংস্থার অংশগ্রহণে একটি ফ্লোট প্যারেড। সেই সঙ্গে ১৩০ জন ব্যাগপাইপ সঙ্গীতশিল্পীর অংশগ্রহণে মালয়েশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর একটি বিশেষ পরিবেশনা।

শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট ছোট অনুষ্ঠানও সমান আকর্ষণীয়। রাজধানীর বুকিত বিনতাংয়ে কর্মরত রিকশাচালক আমিরুল বলেন, “সারা বছর কষ্ট করি। কিন্তু স্বাধীনতা দিবস এলে মনে হয় আমরা সবাই এক পরিবার। সেদিন রাস্তায় কাজ করি, কিন্তু আতশবাজি দেখে বুক ভরে যায়।”

প্রবাসীদের হৃদয়ে মেরদেকা

দেশের বাইরে থাকা মালয়েশীয় প্রবাসীরাও এদিন ভুলে থাকেন না। তারা বিভিন্ন দেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পতাকা উত্তোলন আর মিলনমেলার মাধ্যমে স্বাধীনতার আনন্দ ভাগ করে নেন। এক প্রবাসী শিক্ষার্থী জানালেন, “দেশ থেকে দূরে থাকলেও মেরদেকার গান শুনলে বুক ভরে ওঠে। তখন মনে হয়, আমি কুয়ালালামপুরেই আছি।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দিনটি নতুন প্রজন্মকে জাতীয় চেতনার সাথে পরিচিত করায় এবং ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র নির্মাণে দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা দেয়।

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সম্পর্ক

১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া মুসলিম দেশ ছিল মালয়েশিয়া। সেই থেকে দুই দেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমেই দৃঢ় হয়েছে। ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশি কর্মীরা মালয়েশিয়ায় আসা শুরু করেন। বর্তমানে শ্রম, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, সামরিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রয়েছে দুই দেশের মধ্যে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT