বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৌদিতে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ, তবুও পিছিয়ে পড়তে পারেন বাংলাদেশি কর্মীরা

প্রকাশিত : ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ, ৩ আগস্ট ২০২৫ রবিবার ৪৫ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

সৌদি আরব আগামী ২০৩০ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপো ও ২০৩৪ সালে ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ উপলক্ষে তাদের ভিশন ২০৩০ রূপকাঠামো অনুযায়ী স্মার্ট শহর, বিমানবন্দর, মেট্রো, হাইওয়ে, স্টেডিয়াম, হোটেল এবং ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণে বিনিয়োগ করছে শত শত বিলিয়ন ডলার। ব্যাপক এই রুপান্তরের লক্ষ্যই হলো সৌদি আরবকে পর্যটন, ক্রীড়ানুষ্ঠান ও উদ্ভাবনের বৈশ্বিক পাওয়ারহাউজ হিসেবে গড়ে তোলা।

Video Player is loading.
Pause

Mute
Remaining Time -0:00
Unibots.com

দেশটির নির্মাণ ও সেবাখাতে এতে করে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে, যা আকৃষ্ট করবে বহুজাতিক কর্পোরেশনসহ লাখ লাখ পর্যটককেও। বাংলাদেশের মতো শ্রমশক্তি রপ্তানিকারক দেশের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ কি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে।

ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশি কর্মীরা সৌদি শ্রমবাজারের বড় একটি অংশ দখলে রেখেছে। কিন্তু এখন দেশটি আধুনিকায়নের পথে। ফলে শ্রমবাজারে চাহিদাও পরিবর্তিত হচ্ছে। এখন ইংরেজি ও আরবি ভাষাজ্ঞান, আন্তর্জাতিক মানের সফট স্কিল এবং উন্নত কারিগরি দক্ষতা অপরিহার্য – যেখানে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে।

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা)-এর সাবেক সহ-সভাপতি ও চার দশক ধরে উপসাগরীয় অঞ্চলে শ্রমশক্তি প্রেরণের সঙ্গে যুক্ত নোমান চৌধুরী বলেন, “সৌদি আরব এখন উচ্চদক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিক চায়। ইতোমধ্যেই তথ্য প্রযুক্তি ও উচ্চ বেতনের পেশার জায়গা দখল করছে অটোমেশন। এমনকি ক্লিনিং ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজও নিকট ভবিষ্যতে মেশিন দিয়ে করা হতে পারে।”

চাকরির বাজারে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন এক উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে সৌদি আরবের জাতীয়করণ প্রকল্পসমূহ। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত “নীতাকাত” কর্মসূচি, যা শ্রমবাজারে বড় ধরনের রূপান্তর আনছে।

এর আওতায় ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে স্বর্ণালঙ্কারের দোকান পর্যন্ত অনেক খাতে এখন শতভাগ সৌদি নাগরিক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি হেলপার বা সহকারীর মতো অদক্ষ পদের ক্ষেত্রেও—প্রতি ১০ জন বিদেশি শ্রমিকের বিপরীতে অন্তত একজন সৌদি নাগরিক নিয়োগ দেওয়া কোম্পানিগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই কড়াকড়ির ফলে ধীরে ধীরে অদক্ষ বিদেশি শ্রমিকদের স্থান সংকুচিত হচ্ছে।

নোমান চৌধুরী বলেন, “বহু বাংলাদেশি শ্রমিক ‘তাকামুল’ স্কিল সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারছে না, যা এখন অনেক সেক্টরে ভিসা পাওয়ার পূর্বশর্ত। যদি এটি সব খাতে প্রযোজ্য হয়, তবে প্রতিবছর সৌদিতে যাওয়া ৫-৬ লাখ বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা কমে ৫০ হাজারে নেমে আসতে পারে।”

সৌদি শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ হ্রাস পেতে পারে— বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে এমন শঙ্কা উঠলেও জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিষয়টিকে দেখছেন অনেক বেশি আশাবাদের চোখে।

তিনি বলেন, “আমি মনে করি না সৌদি আরব আমাদের কর্মীদের জন্য কাজের সুযোগ কমিয়ে দেবে। তারা বাংলাদেশিদের ওপর আস্থা রাখে। আমাদের সঙ্গে সৌদি আরবের একটি গভীর সাংস্কৃতিক বন্ধন আছে, এবং তাদের নিয়োগকারীরাও আমাদের কর্মীদের নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।”

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ এখন প্রো-অ্যাকটিভ (আগাম) পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে নতুন দক্ষতা যাচাইকরণ কর্মসূচি চালু—যা সৌদি আরবের পরিবর্তনশীল শ্রমবাজারের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।

তবে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, যদি সৌদি বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের, ভাষা শিক্ষা ও শ্রমবাজার বৈচিত্র্যকরণসহ জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত এবং দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়—তাহলে বাংলাদেশ সেই ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা হারাতে পারে, যেখানে একসময় অনেকটাই আধিপত্য বজায় করতো।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT