সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষুধায় কাতর গাজাবাসী, দেওয়ার মতো রক্তও নেই শরীরে

প্রকাশিত : ০৮:২৪ পূর্বাহ্ণ, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ বুধবার ৬৯ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ইসরাইলের অবিরাম হত্যাযজ্ঞে নিশ্চিহ্নপ্রায় গাজা। চারদিকে মৃত্যুর মিছিল। এরই মধ্যে বাড়ছে ক্ষুধা। বন্ধ হয়ে গেছে বেকারিগুলো। বাজারগুলোও খালি পড়ে আছে। এক মাসেরও বেশি সময় অবরুদ্ধ গাজার শেষ খাবারটুকুও ফুরিয়ে আসছে। খাদ্যের অভাবে ইতোমধ্যে শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছে গাজার বসিন্দারা। একবেলা-আধপেটা খেয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র অপুষ্টি। যার জেরে ক্রমবর্ধমান আহত প্রতিবেশী-প্রিয়জনদের রক্ত দিতেও পারছেন না গাজাবাসী। খাদ্যাভাবে সৃষ্ট চরম অপুষ্টির কারণে রক্ত কমে গেছে তাদের নিজেদের শরীরেই!

মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে ক্রমবর্ধমান চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ইসরাইলের চলমান অবরোধ এবং অনাহার অভিযানের ফলে সৃষ্ট তীব্র অপুষ্টি অনেক ফিলিস্তিনিকে রক্তদানে বাধা দিচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে ইসরাইল। খাদ্য, পানি, জ্বালানি এবং মানবিক সাহায্য প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেয় বর্বর সেনারা।

পরবর্তী সময়ে থেমে থেমে কিছু ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত থাকলেও ২ মার্চ থেকে আবারও পূর্ণ অবরোধ পুনর্বহাল করে ইসরাইল। এতে আবারও তীব্র খাদ্য সংকটে পড়ে গাজাবাসী। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে রক্তদান কর্মসূচিতে। অপুষ্টির কারণে গাজার অনেকেই রক্তদান করতে অক্ষম হয়ে পড়ছেন। রক্তের ইউনিটের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।

স্বেচ্ছাসেবক আবদুল্লাহ আল-আরের বলেছেন, ‘আমি সাহায্য করার জন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রক্তদান করা আমার পক্ষে কঠিন ছিল। কারণ, আমাদের শরীর আগের মতো নেই। আমরা অনিরাপদ পানি পান করি। আমার কিছু বন্ধু রক্তদান করতে পারেনি। কারণ, তাদের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা খুব কম ছিল।’

গাজা ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে তরুণ স্বেচ্ছাসেবক ইয়াহিয়া আল-জারদ রক্তদান করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি একটি সম্পূর্ণ ইউনিট (৪৫০ গ্রাম) সম্পূর্ণ করতে পারেননি। মাঝপথে থামতে হয়েছিল তাকে। তিনি বলেন, ক্ষুধার কারণে আমি দুর্বল হয়ে পড়ি। এজন্য রক্তদানে ব্যর্থ হই।

হাসপাতালের রক্তদান অভিযানের তত্ত্ববধানকারী ল্যাব বিশেষজ্ঞ হুদা আবু দালাল বলেছেন, রক্তদান করতে আসা ২০ থেকে ৩০ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবক রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। রক্তের মজুত কম থাকায় এবং দাতার সংখ্যা অপর্যাপ্ত হওয়ায় জর্ডান এবং পশ্চিম তীরের দিকে ঝুঁকছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে ইসরাইলি অবরোধের নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো।

তা সত্ত্বেও গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ২৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের বোমা হামলায় জীবন্ত পুড়ে মরেছেন একই পরিবারের ১১ জন। একাধিক বিমান হামলার কারণে খান ইউনিসে ওই বাড়িতে আগুন লেগে যায়। গাজা শহরের পশ্চিম অংশে বিমান হামলায় একটি পরিবারের সাত সদস্যও নিহত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন প্রস্তাব কাতার-মিসরের : হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ বন্ধে নতুন একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর। আলোচনার সঙ্গে যুক্ত এক জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। ওই কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন এ প্রস্তাব কার্যকর হলে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি থাকবে পাঁচ থেকে সাত বছর।

এই সময়ে জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস, বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে নেতানিয়াহু প্রশাসন। এই চুক্তির আওতায় গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে। হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দারবিশ এবং প্রধান আলোচক খালিল আল হাইয়া এই আলোচনায় থাকবেন। তবে নতুন এ প্রস্তাব সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরাইল।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT