রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া পেরিয়ে লঙ্কার আগুন পৌঁছল নেপালে

প্রকাশিত : ০৫:৫৫ অপরাহ্ণ, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার ২০ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল। লঙ্কায় লাগা আগুন ছড়িয়ে পড়ল পুরো এশিয়ায়। বাংলাদেশ পেরিয়ে ইন্দোনেশিয়া, তারপর নেপাল। অধিকার আদায়ের দাবি শেষপর্যন্ত রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে। দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আর বঞ্চনার চিৎকার। এক সময়কার স্থিতিশীল দেশ বলে পরিচিত নেপাল এখন অস্থিরতা আর অনিশ্চয়তার মুখে।

বাংলাদেশে এক বছর আগেই ছাত্র-যুবকদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনে পতন ঘটে ফ্যাসিবাদী সরকারের। সেই আন্দোলনের অনুরণনই এখন যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে নেপালের রাজপথে। বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাংলাদেশের মতো নেপালও ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে।

রাজধানী কাঠমান্ডু ও আশপাশের এলাকায় বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করছে। ইতোমধ্যেই অন্তত ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয় কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বরে ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবন এলাকায়। সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন বহু মানুষ। শুধু রাজধানী নয়, সিংহদুর্বার, নারায়ণহিটিসহ সংবেদনশীল প্রশাসনিক এলাকায় বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়, ভাঙচুর চালায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকার কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ওলি জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন। সেনাবাহিনীকে নামানো হয় রাস্তায়। সংসদ ভবনে বিক্ষোভকারীদের আগুন লাগানোর পর সরকার পরিস্থিতি ‘জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি’ হিসেবে ঘোষণা করে। তবুও আন্দোলন থামেনি।

এই বিক্ষোভের সূত্রপাত ছিল একেবারেই ভিন্ন কারণে। গেল বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, ফেসবুক, ইউটিউব, এক্সসহ আন্তর্জাতিক সব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে দেশে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। কিন্তু নির্দেশ মানেনি এসব প্রতিষ্ঠান। এর জেরে চলতি বছরে সরকার আকস্মিকভাবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, এক্স নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। অথচ নেপালে শুধু ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের সক্রিয় ব্যবহারকারীই প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ। তাদের অনেকেই ব্যবসা, শিক্ষা কিংবা দৈনন্দিন যোগাযোগে পুরোপুরি নির্ভরশীল এই প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর।

হঠাৎ করে এগুলো বন্ধ হয়ে গেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ছোট উদ্যোক্তারা ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রাস্তায় নামে। তরুণরা স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখে প্রতিবাদ শুরু করে। প্রথমে আন্দোলন ছিল কেবল সোশ্যাল মিডিয়া খোলার দাবিতে। কিন্তু দ্রুত সেটি রূপ নেয় দুর্নীতি ও সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনে।

সরকার অবশ্য বলছে, তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। পুলিশি দমনপীড়ন, গুলি ও কারফিউ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। পুলিশ স্বীকার করেছে, শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ ঘোষণার জেরে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর বাইরে আরও মৃত্যুর খবর আসছে বিভিন্ন এলাকা থেকে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নেপালের এই পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক অস্থিরতারই প্রতিচ্ছবি। অর্থনৈতিক বৈষম্য, বেকারত্ব, দুর্নীতি আর রাজনৈতিক অচলাবস্থা মানুষের ক্ষোভকে প্রতিদিনই বাড়িয়ে তুলছে। বাংলাদেশের মতো নেপালও একই ধরনের সঙ্কটে জর্জরিত। আর তাই শ্রীলঙ্কায় শুরু হওয়া আগুন এখন পেরিয়ে যাচ্ছে সীমান্তের পর সীমান্ত, তৈরি করছে এক নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT