রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেঁকে বসেছে শীত বিপর্যস্ত উত্তরের জনপদ

প্রকাশিত : ০৯:০০ পূর্বাহ্ণ, ৩ জানুয়ারি ২০২৪ বুধবার ১২৩ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রকৃতিতে এবার বিলম্বে শীতের আগমন। তবে পৌষের মাঝামাঝিতে জেঁকে বসেছে হাড় কাঁপানো শীত। এতে মানুষের জীবনযাত্রায় ছন্দপতন শুরু হয়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তর জনপদে। এখানকার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসে এক থেকে দুটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সবমিলে পৌষের মাঝামাঝি শুরু হওয়া শীতের তীব্রতা দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা জাগাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বেশিরভাগ এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, ফরিদপুর ও মাদারীপুর এবং খুলনা বিভাগের যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার বেশ কিছু এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। আর ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলিসয়াস।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। যার ফলে প্রকৃতিতে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়বে। এটি দেশের কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ এবং সড়ক যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এদিকে ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব অঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করছে।

ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় ছন্দপতন শুরু হয়েছে। গরম কাপড়ের ব্যবহার বেড়েছে। শীতবস্ত্রের বিক্রিও বেড়েছে। আর তাপমাত্রা কমার কারণে শীতকেন্দ্রিক রোগবালাই বাড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুসারে তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মাঝারি, ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তীব্র এবং তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রির নিচে নেমে এলে তাকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, সারা দেশের তামপমাত্রা আরও একটু কমতে পারে। উত্তর অঞ্চলে মঙ্গলবার সৈয়দপুরের সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল। দিনাজপুরে ছিল ১০ এবং তেঁতুলিয়ায় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। ফলে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এছাড়া যশোর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, নওগাঁ, সিলেটের শ্রীমঙ্গল, চট্টগ্রামের রাঙামাটি বান্দরবান, ঢাকার গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর এসব জায়গায় তামপাত্রা কমে যেতে পারে। ফলে শীতের অনুভূতি একটু বাড়বে।

তিনি বলেন, প্রথমত এখন বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বাংলাদেশের দিকে। হিমালয়ের পাদদেশ থেকে আসা ঠান্ডা হিমেল বাতাস বাংলাদেশের তাপমাত্রাকে কিছু অবনমন করে শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

উত্তর জনপদে কনকনে শীত : দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দেশের উত্তর জনপদে হঠাৎ জেঁকে বসেছে শীত। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এই জনপদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। মঙ্গলবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ২টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। আর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে এই জনপদ। উত্তর জনপদে তিন দিন ধরে বইছে পশ্চিমের হিমেল বাতাস।

এদিকে হঠাৎ কনকনে শীত অনুভূত হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল, অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষ। খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। ঘন কুয়াশার চাদরে আচ্ছাদিত হওয়ায় সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।

বগুড়া ব্যুরো জানায়, মঙ্গলবার বগুড়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন ১২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। প্রচণ্ড শীতে জনগণ বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা কষ্ট পাচ্ছেন। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শীতজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্টেশন, সড়ক বিভাজন ও বিভিন্ন খোলা স্থানে আশ্রয় নেওয়া ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট বেড়েছে। খেটে খাওয়া দিনমজুর ও দরিদ্র মানুষও কষ্ট পাচ্ছেন। রাজশাহী ব্যুরো জানায়, মধ্য পৌষের এ সময়টায় শীতের গভীরতা বাড়া স্বাভাবিক ঘটনা হলেও উত্তর থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় জবুথবু রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ। মঙ্গলবার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এতে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের মধ্যভাগে এসে সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে।

এদিকে প্রচণ্ড এই শীতে নগরীতে ছিন্নমূল মানুষরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। ঘন কুয়াশার কারণে মঙ্গলবার বিমানের ফ্লাইটগুলো কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে ওঠানামা করেছে রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দরে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT