বুধবার ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পেঁয়াজের বাজারে ফের অস্থিরতা

প্রকাশিত : ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ, ২৩ আগস্ট ২০২৩ বুধবার ১২৫ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ভারতের বর্ধিত শুল্কারোপের পেঁয়াজ এখনো দেশে আসেনি; কিন্তু ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যেই দাম বাড়িয়ে অস্থির করে তুলেছেন বাজার। পেঁয়াজের মূল্য দুদিনে আমদানি পর্যায়ে ১০ এবং খুচরায় কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। গত কয়েক বছর ধরেই পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে; একেক সময় একেক অজুহাতে বাড়ানো হয় দাম।

ঠুনকো অজুহাতেও অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের বাজার অস্থির করে তোলেন। বছরের কোন কোন সময় দেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে, তা চিহ্নিত করে সংকট শুরু হওয়ার আগেই আমদানির ব্যবস্থা করা দরকার। তা না হলে পণ্যটি নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির আশঙ্কা থেকেই যায়।

সবশেষ ভারত থেকে ৩৮-৪৬ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। বর্ধিত শুল্কারোপের পর পেঁয়াজ আমদানি করলে এর মূল্য কেজিপ্রতি ৫৩ থেকে ৬৫ টাকা হওয়ার কথা। অথচ এখন পুরোনো আমদানিকৃত পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে শত টাকা কেজি।

পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের শুল্ক আরোপের খবরে অল্প সময়ের ব্যবধানে আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এ থেকেই স্পষ্ট দেশে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা কতটা দুর্বল। একদিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

পেঁয়াজ, আদাসহ বিভিন্ন মসলাজাতীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি উদ্বেগজনক। কয়েক মাস আগেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি দরে; এখন তা কেজিপ্রতি ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য ভালো মানের পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। পেঁয়াজ, আদা নিয়ে বড় ধরনের কারসাজির বিষয়টি বহুল আলোচিত। সম্প্র্রতি আদার মূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিলেও ভোক্তারা এর সুফল পাননি।

দেশে গত কয়েক বছরে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে; তারপরও বাজারে অস্থিরতা দূর হচ্ছে না। বর্তমানে কৃষকরা নিজেদের বাড়িতেই দেশীয় পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে থাকেন। তাতে পণ্যটি নষ্ট হওয়ার হার বেশি। উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি সারা দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা না হলে বাজারের অস্থিরতা দূর হবে কিনা, তা বলা মুশকিল।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা না থাকায় বর্তমানে কৃষক ফসল ঘরে তোলার পরপরই তা বিক্রি করে দেন। কাজেই সারা দেশে পণ্যটি সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য প্রণোদনা প্রদানের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা দরকার।

প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি। জীবনযাত্রায় বাড়তি ব্যয়ের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ; সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছেন সীমিত ও স্বল্প আয়ের মানুষ। সুযোগ বুঝে অসাধু ব্যবসায়ীরা সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

কাজেই অসাধুদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর দুর্বলতার কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া মুনাফা করার সুযোগ পায়। অভিযোগ রয়েছে, বাজার পর্যবেক্ষণে জড়িত অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশের কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।

সিন্ডিকেট শনাক্তে এখনই জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কেউ যাতে অতিরিক্ত মুনাফা করার সুযোগ না পায়, তাও নিশ্চিত করা দরকার।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT