বুধবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুসলিম দেশগুলোর যৌথবাহিনী গঠনের ইঙ্গিত, থাকবে পাকিস্তানও

প্রকাশিত : ০৮:২৩ পূর্বাহ্ণ, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বুধবার ১৪ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা যেন এক অশেষ ধারাবাহিকতা। ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন কিংবা ইয়েমেন—যেখানেই চোখ রাখা যায়, সেখানেই আগুনের লেলিহান শিখা। তবে সাম্প্রতিক দোহা হামলা পরিস্থিতিকে এক নতুন মোড় দিয়েছে। কাতারের রাজধানীতে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ শুধু হামাসের বৈঠককে লক্ষ্য করেই হয়নি, বরং পুরো আরব বিশ্বকে যেন প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করেছে।

কাতারে এই হামলার পর নড়েচড়ে বসেছে আরব দেশগুলো। জরুরি বৈঠকে বসেন বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতারা। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ার বিষয়টি সামনে আনেন।

এ প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, যদি জাতিসংঘের বাইরে এমন কোনো কার্যকরী বাহিনী গঠিত হয়, তাহলে পাকিস্তান তা‌তে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা নেবে। মঙ্গলবার, (১৬ সেপ্টেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয় সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

দার বলেন, পাকিস্তানের ‘বিশাল এবং কার্যকর’ সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে, যা প্রচলিত যুদ্ধে সক্ষমতা দেখিয়েছে। তাই যদি কোনো বহুজাতিক ব্যবস্থা গঠিত হয়, যেখানে সদস্যরা তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী ভূমিকা রাখে, পাকিস্তান সেখানে অংশ নিতে প্রস্তুত থাকবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই বাহিনীকে আক্রমণের জন্য নয়—শান্তি প্রতিষ্ঠা, আগ্রাসী শক্তিকে থামানো ও দখলদারিত্ব রোধের জন্য গঠন করা উচিত।

সাক্ষাৎকারে দার আরও বলেন, এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলে এক ধরনের কঠোর অর্থনৈতিক পদক্ষেপ বা নিষেধাজ্ঞাও প্রয়োগ করা যেতে পারে, যাতে কোনো রাষ্ট্র তাদের কথা না শুনলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। তিনি বলেন, আরব দেশ ও আরব লীগের মধ্যে এই ব্যাপারে আলোচনা চলছে এবং এটি একটি যৌক্তিক প্রস্তাব।

তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়—পারমাণবিক শক্তিধর হিসেবে পাকিস্তানের কী ভূমিকা হবে? তাতে দার বলেন, পাকিস্তান উম্মাহর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে; পারমাণবিক অস্ত্র কেবল প্রতিরোধের মাধ্যম হিসেবে দেখা হয় এবং ব্যবহার করার ইচ্ছা নেই। তবে তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের ‘বড়, সুপরিচিত ও কার্যকর’ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী রয়েছে এবং প্রয়োজনে প্রচলিত পদ্ধতিতেও প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করা সম্ভব।

আল জাজিরার উপস্থাপক যখন নিরাপত্তা পরিষদের বিতর্ক ও ২০১১ সালের ওসামা বিন লাদেন হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টানেন এবং প্রশ্ন করেন—কোনো শক্তিশালী দেশের হামলার শিকার হলে পাকিস্তান কি একইভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে?—ইসহাক দার জবাবে বলেন, ‘আমরা আমাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতায় হস্তক্ষেপ বরদাশত করব না। ছোট অথবা বড়—যে দেশই হোক না কেন আমরা প্রতিক্রিয়া দেখাব।’ তিনি যুক্ত করেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে থামাতে কার্যকর কিছু করেনি, তবু কিছু ঘটনা—যেমন ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময়—যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতিতে ভূমিকা রেখেছ।

কাতারে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে দার বলেন, কাতারে হামলা অযৌক্তিক এবং “দস্যুবৃত্তি” বলে তিনি অভিহিত করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল বহু দেশে হামলা চালিয়ে এসেছে অথচ আন্তর্জাতিক আইন ও নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তগুলো তার ওপর কার্যকর হচ্ছে না। তাই তিনি বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার সমসাময়িক সংস্কারের প্রয়োজন যে ভীষণ তা বারবার বলেছেন।

দার বলেন, ‘বিশ্বে শান্তি রক্ষার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু অনেক প্রস্তাব বছরের পর বছর উপেক্ষিত থেকে যায়। গাজা ইসরায়েলের হাতে আর কাশ্মির ভারতের হাতে—এমন পরিস্থিতিতে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় কী আশা করা যায়?’ তিনি যুক্ত করেছেন, সব রাষ্ট্র—বড় হোক বা ছোট—সমান মর্যাদা পাওয়া উচিত।

গাজা যুদ্ধ সমাপ্তির বিষয়ে দার কূটনীতি ও আলোচনাকেই প্রধান সমাধান হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, আলোচনা সময় নেবে, কিন্তু আন্তরিক হলে সমাধান সম্ভব। অন্যথা, নেপথ্যে খারাপ উদ্দেশ্য থাকলে কোনো সমাধান মিলবে না।

অবশেষে ইসহাক দার আবারও জোর দিয়েছেন—পাকিস্তান শান্তি চায় এবং পারমাণবিক অবস্থানের কারণে অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে চায় না। তবু নাগরিকদের সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যখন বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার প্রভাব কমে যায়, তখন বিকল্প ব্যবস্থা বা প্রয়োজনে কার্যকর পদক্ষেপের দরকার হতে পারে—এমনটাই তার দৃঢ় অবস্থান।

সূত্র : ডন

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT