সোমবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতিতে ধ্বংস হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা: বদিউল আলম ◈ সার্কিট ব্রেকারের শীর্ষে চার কোম্পানির শেয়ার ◈ নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ৬ মাসের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন ◈ গাজায় ইসরায়েলের জাতিগত নিধন অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত ◈ ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ◈ স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যা: পুলিশ ◈ ভারি বৃষ্টিপাতে প্লাবিত হতে পারে ৯ জেলার নিম্নাঞ্চল ◈ টাইফয়েডের টিকা পাবে ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশু, দিবে যেদিন থেকে ◈ মেগাসিরিয়াল ‘খুশবু’র আইটেম গানে মাহি ◈ মৃত্যুর পাঁচ বছর পর এন্ড্রু কিশোরকে কর পরিশোধের নোটিশ

পুতিনের আস্থাভাজন প্রিগোশিন যেভাবে ক্রেমলিনের শত্রু হয়ে ওঠেন

প্রকাশিত : ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ণ, ২৮ আগস্ট ২০২৩ সোমবার ১২০ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ভাড়াটে যোদ্ধা গ্রুপ ভাগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিনকে অবশেষে মৃত বলে ঘোষণা করেছে মস্কো। বুধবার বিমান দুর্ঘটনার পর থেকেই প্রিগোশিনের নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে ডিএনএ পরীক্ষা শেষে রোববার তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয় ক্রেমলিন থেকে। কিন্তু একসময় যে কিনা মস্কোর অন্যতম আস্থাভাজন ছিলেন সে কি করে হয়ে ওঠে মারাত্মক শত্রু?

২৪ জুন তারিখে মস্কোমুখি একদিনের সশস্ত্র বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রিগোশিন। তার আগ পর্যন্ত ক্রেমলিনের অন্যতম আস্থাভাজনই ছিলেন তিনি। বিদ্রোহে তার লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের অপসারণ। এই বিদ্রোহকে বিশ্লেষকরা পুতিনের শাসনকালের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের পর ২৪ জুন, ২০২৩ তারিখ ছিল রাশিয়ার ইতিহাসের অস্থিরতম দিন। সেদিন রাশিয়ার রোস্তব অন দন শহর থেকে সামরিক সজ্জিত ভাগনার গ্রুপ তার যোদ্ধাদের নিয়ে প্রিগোশিনের নেতৃত্বে মস্কো অভিমুখে যাত্রা করে। রোস্তভ অন দনের সামরিক স্থাপনাও দখলে নিয়েছিল ভাগনার।

বিদ্রোহের দিন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল রুশ ঘাঁটিতে হামলা করেছে ভাগনার। তখন ভাগনার বলেছিল, দেশের সামরিক নেতৃত্ব যে দুষ্টতা এনেছে তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিন শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশী বেলারুশে বিদ্রোহীদের এবং প্রিগোশিনকে নির্বাসনের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটান। কিন্তু তখন আফ্রিকাতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন ভাগনার প্রধান।

রাষ্ট্রপতি পুতিন ঘটনার পর প্রিগোশিনকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে অভিযোগ করেন। ওয়াগনার গ্রুপ ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই রাশিয়ার হয়ে সেনা পাঠিয়েছিল। এর আগেও তারা রাশিয়ার হয়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় যুদ্ধ করেছে। তিনি পুতিনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। ওয়াগনার প্রধান হিসেবে নিজেকে ঘোষণার পর প্রিগোশিন সাধারণ ক্ষমার বিনিময়ে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার কারাগার থেকে পদাতিক সেনা নিয়োগ দিয়েছিলেন।

বাখমুতসহ ইউক্রেনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলের নেতৃত্ব দিয়ে জনসাধারণের প্রশংসা অর্জন করেন প্রিগোশিন। কিন্তু তিনি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিস্টেমিক অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ জানাতে শুরু করেন।

পূর্ব ইউক্রেনে সীমিত লাভের জন্য ব্যয়বহুল যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মাসব্যাপী ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত হন প্রিগোশিন। তিনি এর আগে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে ওয়াগনার থেকে রসদ ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ করেন এবং মস্কোর আমলাতন্ত্রকে নিন্দা করেন।

তিনি সরাসরি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে তার যোদ্ধাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে বলেন, মস্কো পর্যাপ্ত গোলাবারুদ সরবরাহ করেনি। প্রাক্তন হটডগ বিক্রেতা এবং পুতিনের নিজ শহর সেন্ট পিটার্সবার্গের সন্তান প্রিগোশিন সোভিয়েত আমলে প্রায় এক দশক জেলে ছিলেন। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে তিনি স্বীকার করেন যে তিনি ফাইটিং ফোর্স প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সেন্ট পিটার্সবার্গে সদর দপ্তর খুলেছেন।

ধীরে ধীরে ইয়েভজেনি প্রিগোশিন রাশিয়ার প্রাক্তন সাম্রাজ্যের রাজধানীর একটি বিনয়ী পটভূমি থেকে পুতিনের ঘনিষ্ঠ অভ্যন্তরীণ বৃত্তের অংশ হয়ে ওঠেন। তিনি জালিয়াতি এবং চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে ইউএসএসআর-এর চূড়ান্ত সময়কালে নয় বছর কারাগারে কাটিয়েছেন এবং ১৯৯০-এর বিশৃঙ্খলার সময় তিনি মাঝারিভাবে সফল একটি ফাস্ট ফুড কোম্পানি শুরু করেন।

এরপর তিনি রেস্তোরাঁ ব্যবসায় সময় দেন যা সেন্ট পিটার্সবার্গে একটি অভিজাত এলাকায় খোলা হয়েছিল। তার নিয়মিত গ্রাহকের মধ্যে প্রেসিডেন্ট পুতিনও ছিলেন। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে খাবার সরবরাহ থেকে ক্রেমলিনে খাবার সরবরাহ শুরু করেন তিনি। এরপর স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ভাগনার প্রধান। রাষ্ট্রীয় চুক্তিতে অর্জিত বিশাল সম্পদের কারণে ইয়েভজেনি প্রিগোশিনকে বিলিয়নিয়ার খেতাব দেওয়া হয়। তবে তার প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ ছিল অজানা।

এক সময় ওয়াশিংটন প্রিগোশিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগে তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

জুলাই ২০১৮ সালে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে ভাগনারের অভিযান নিয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় একটি সংবাদ মাধ্যমে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট তিন সাংবাদিক তখন অতর্কিত হামলায় নিহত হয়।

মালিতে সামরিক জান্তাকে সহায়তা করার জন্য প্রিগোশিনের ব্যক্তিগত ফাইটিং গ্রুপকে অভিযুক্ত করে পশ্চিমা দেশগুলো। তার কারণে দেশটিতে প্রায় এক দীর্ঘ দশক সামরিক অভিযান শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয় ফ্রান্স।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT