নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীরও পদত্যাগ চায় জেন-জি
প্রকাশিত : ১০:৩৬ অপরাহ্ণ, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সোমবার ৪ বার পঠিত
অস্থির নেপাল স্থির হতে না হতেই আবারও আন্দোলনের হাওয়া বইছে কাঠমান্ডুতে। রাজনৈতিক সংকট রূপ নিয়েছে নতুন পর্বে। এবার দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিরও পদত্যাগ চাইছেন জেন-জিরা।
রোববার মধ্যরাতে আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকা সুদান গুরুংয়ের নেতৃত্বে বালুওয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। সুশীলার পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। সোমবার নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারে যুক্ত হন তিন মন্ত্রী। এদিন দুপুরে শীতল নিবাসে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে শপথ নেন তারা।
রোববার মধ্যরাতের কিছু আগেই এই অনুমোদন দেন সুশীলা। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। আবারও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তরুণরা। অভিযোগ, তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ দিয়েছেন সুশীলা। কাঠমান্ডু পোস্ট।
বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, তরুণদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করা হয়েছে।
গুরুং ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা যদি আবার রাস্তায় নামি, কেউ আমাদের থামাতে পারবে না। আমরা যেখান থেকে নেতা বসিয়েছি, সেখান থেকেই তুলে ফেলব।’
তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, অ্যাডভোকেট ওম প্রকাশ আর্যাল ভেতর থেকেই নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানাচ্ছেন! এতে গত সপ্তাহের বিক্ষোভে হতাহতদের স্বজনদেরও সঙ্গে এনেছিলেন গুরুং।
মন্ত্রণালয়ে সাবেক অর্থসচিব রমেশ্বর খনালকে অর্থমন্ত্রী, আইনজীবী ওম প্রকাশ আর্যালকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী পরিচালক কুলমান ঘিসিংকে জ্বালানি ও সেচমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা।
রোববার তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। সোমবার দুপুরে শীতল নিবাসে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে শপথ নেন তারা। প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। পাশাপাশি ঘিসিংকে পদ্ম কাঠামো ও পরিবহণ এবং নগর উন্নয়ন ও অতিরিক্ত আরও দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো, পদ্ম কাঠামো, পরিবহণ ও নগর উন্নয়ন। এ তিনজনসহ সুশীলার নতুন কার্যালয়ে সর্বোচ্চ থাকছেন ১৫ জন।
স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী ওম প্রকাশ আর্যাল : সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ওম প্রকাশ আর্যালকে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (সিআইএএ) প্রধান লোকমান সিং কার্কির নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট করে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি। পরে ওই মামলার রায়েই কার্কির অভিশংসনের পথ খোলে। সম্প্রতি তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি অলি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বালা রাম অধিকারীর বিরুদ্ধে গিরিবন্ধু চা বাগান জমি কেলেঙ্কারিতে আদালতের রায় বাস্তবায়ন না করার অভিযোগে রিট দায়ের করেছিলেন। আর্যাল অতীতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ও আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা (আইসিজে) জেনেভা অফিসে কর্মরত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী রমেশ্বর খানাল:
প্রশাসনে তিন দশকের অভিজ্ঞ সাবেক অর্থ সচিব রমেশ্বর খনালকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারি হিসাব, করনীতি ও ক্রয়নীতিতে সংস্কার আনার কৃতিত্ব তার। তিনি কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংকসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত বছর তার নেতৃত্বে গঠিত উচ্চস্তরের অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন সম্প্রতি ৪৪০ পৃষ্ঠার সুপারিশপত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে ভারতীয় রুপির সঙ্গে স্থায়ী বিনিময় হার পুনর্বিবেচনা ও রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়। খনাল ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি বেতন, সরকারি বাড়ি, গাড়ি বা দেহরক্ষী নেবেন না।
অবকাঠামো ও জ্বালানি মন্ত্রী কুলমান ঘিসিং:
বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে পরিচিত কুলমান ঘিসিংকে জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচ, নগর উন্নয়ন এবং শারীরিক অবকাঠামো ও পরিবহন এই তিনটি গুরত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালে নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসেবে তিনি শিল্প কারখানায় বিশেষ সংযোগ বন্ধ করে জনগণের মধ্যে বিদ্যুৎ বণ্টন করেন। পাশপাশি দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টার লোডশেডিং বন্ধ করতে সক্ষম হন। তার নেতৃত্বে নতুন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হওয়ায় বর্তমানে নেপাল বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।