anusandhan24.com
যুবককে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া, ভিডিও ভাইরাল
শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:১০ পূর্বাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

কুমিল্লায় এক যুবদল নেতাকে গণপিটুনির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার এক যুবককে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার ৩ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এসময় এক নারীকে তার শিশু সন্তানের সামনে হেনস্তা করা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের উনকোট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরদিন থেকে নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। নির্যাতনের শিকার যুবক মনছুর মিয়া (৩৫) পেশায় কাঠমিস্ত্রি এবং ওই ইউনিয়নের কটপাড়া গ্রামের হাফেজ আহমেদের ছেলে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, লুঙ্গি পরা এক যুবককে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করা হচ্ছে। কয়েকজন মিলে তাকে খাটের ওপর ফেলে কিল, ঘুষি ও লাথি মারছেন। এসময় তার পুরো শরীরে আঘাতের রক্তাক্ত চিহ্ন দেখা যায়। পাশে এক নারী ও তার ৫ বছরের শিশুসন্তান চিৎকার করছেন। এসময় শিশুটি তার মায়ের পিছু পিছু যাচ্ছে এবং তার মাকে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করছিল। নির্যাতনের শিকার যুবক বারবার বাঁচার আকুতি করেও রক্ষা পায়নি। একপর্যায়ে নির্যাতনকারীরা ওই যুবককে ঘর থেকে বের করে গাছের সঙ্গে বেঁধে তাকে পেটাতে থাকে। এরপর ওই যুবকের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার যুবক মনছুর মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমি প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে কাঠের কাজ করতে গিয়ে পরিবারটির সঙ্গে পরিচয় হয়। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় কাজের বকেয়া টাকা আনতে গেলে উনকোট গ্রামের নাছির ও সজীবের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন লোক আমাকে ধরে মিথ্যা অভিযোগে মারধর করে এবং একপর্যায়ে আমার মাথা ন্যাড়া করে দেয়। পরে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে তারা আমাকে ছেড়ে দিয়েছে।

নির্যাতনের শিকার মনছুরের বাবা হাফেজ আহমেদ বলেন, আমার ছেলে ঘরের কাজের টাকার জন্য ওই ঘরে গিয়েছিল। তাকে অন্যায়ভাবে আটক করে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি নজরে এসেছে। নির্যাতনের শিকার যুবক থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। তবে ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামে এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় যুবদল নেতা বিল্লাল হোসেনের প্রেমের অভিযোগ তুলে তাকে বেঁধে গণপিটুনি দেওয়া হয় এবং প্রবাসীর স্ত্রীকেও মারধর করা হয়। পরদিন স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।