anusandhan24.com
তিন মাসে এফডিআই এসেছে ১৫৮ কোটি ডলার
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫ ০৭:২৭ পূর্বাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকট ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগে ভাটার টান ছিল। তবে চলতি বছরের শুরুতে সেই চিত্রে দেখা গেছে আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন। নতুন হিসাব বলছে, ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে মোট ১৫৮ কোটি ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছে দেশে। এর মধ্যে ৭১ কোটি ডলার বিভিন্ন মুনাফা ও অংশীদারিত্ব ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন বিদেশি উদ্যোক্তারা। ফলে নিট এফডিআই দাঁড়িয়েছে ৮৬ কোটি ডলারে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১৪ শতাংশ বেশি।

এই নিট বিনিয়োগ পরিমাণ ২০২২ সালের পর সর্বোচ্চ। সে বছরের জানুয়ারি-মার্চে নিট এফডিআই ছিল ৮৯ কোটি ডলার। ২০২৩ সালে তা নেমে এসেছিল ৪০ কোটিতে।

এফডিআই বলতে বিদেশি কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশে শিল্প-কারখানা স্থাপন, নতুন প্রকল্পে অর্থলগ্নি কিংবা স্থানীয় শেয়ার কিনে বিনিয়োগ করাকে বোঝায়। তবে এই বিনিয়োগের একটি অংশ পুনরায় বিদেশে চলে যায় মুনাফা বা শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে, যা ‘আউটফ্লো’ নামে পরিচিত। আউটফ্লো বাদ দিয়ে যে অংশ দেশে থেকে যায়, সেটিই ‘নিট এফডিআই’।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ২৭ কোটি ডলারের নিট ইক্যুইটি (নতুন মূলধনি বিনিয়োগ) এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি (১২ কোটি ডলার ছিল ২০২৩ সালে)।

অন্যদিকে, পুনর্বিনিয়োগ আয় থেকে এসেছে ১৯ কোটি ডলার এবং আন্তঃকোম্পানি ঋণ হিসেবে এসেছে আরো ৪০ কোটি ডলার। এর অর্থ, দেশে থাকা বিদেশি কোম্পানিগুলো আগের বিনিয়োগ

থেকেই আয়ের একটি বড় অংশ পুনরায় লগ্নি করেছে। এফডিআই বাড়াতে নীতিগত উদ্যোগও নিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি সরকার পাঁচ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে, যারা প্রণোদনার মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে সুপারিশ দেবে। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কমিটি এক মাসের মধ্যে তাদের মতামত জমা দেবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘এই বছরের এফডিআই প্রবাহে আমাদের প্রত্যক্ষ অবদান সীমিত। সিদ্ধান্তগুলো আগে নেওয়া ছিল, হয়তো প্রক্রিয়াটি একটু দ্রুত হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদিও বছরের শুরুতে এফডিআই প্রবাহে যে উত্থান দেখা যাচ্ছে, তা এক অর্থে আগের সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন, তবু এই গতি অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে হলে এখন প্রয়োজন স্থিতিশীল নীতিমালা, জ্বালানি সরবরাহের নিশ্চয়তা এবং প্রশাসনিক জটিলতা হ্রাস। তাহলেই এই প্রবণতা পরবর্তী প্রান্তিকগুলোতেও অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।