anusandhan24.com
২৪ লাখ টাকার চিনি ছিনতাই মামলায় ছিঁচকেরা আসামি, হোতারা আড়ালে
শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪ ০৮:২১ পূর্বাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

সিলেটের বিয়ানীবাজারে অস্ত্রের মুখে ২৪ লাখ টাকার চিনি ছিনতাইকাণ্ডে জড়িত হিসাবে উপজেলা, পৌর ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাদের নাম উঠে এসেছে। অথচ মামলায় তাদের নাম নেই। এজাহারে আসামি হিসাবে নাম এসেছে পাতি নেতা, ছিঁচকে এমনকি দিনমজুর কুলিদেরও।

তবে ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডে ছিনতাইয়ের পর কে কত বস্তা চিনি নিয়েছেন, ঘটনা থেকে রেহাই পেতে কি করণীয় তাও জানা গেছে। ঘটনায় জড়িতদের ফোনালাপে উঠে আসে সংশ্লিষ্ট অনেকের নাম। এরপরও পুলিশ প্রকৃত আসামিদের মামলা থেকে বাদ দিয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী চালান মালিকের।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চিনি ছিনতাইয়ের পর চালানের মালিক বদরুল ইসলামকে জিম্মি করে রাখা হয়। মামলা না দিতে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছিল। অভিযুক্তদের অধিকাংশই স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি সব সময়ই চেপে গেছেন বদরুল। তবে ফাঁস হওয়া অডিওতে সাগর, তাহমিদ, মুন্না, জুনেদ, সাব্বির, রুবেল, সালাউদ্দিন, সাকেল, নাবিলসহ চিনি ভাগাভাগিতে কারা ছিলেন তাদের নাম প্রকাশ পায়।

ফোনে কথোপকথনে একজন অন্যজনের কাছে সিলেটি ভাষায় বলেন- ‘ছোট গাড়ি অইলে খাইলিলে অসুবিধা আছিল না। বড় গাড়ি হওয়ায় সমস্যা অই গেছে। তাছাড়া সিএনজি ফোর স্ট্রোকে বোঝাই করে চিনি নিয়ে যায় ছাত্রলীগ কর্মীরা।’

তারা এও বলছেন, ৪০০ বস্তা চিনি থেকে যদি ২০০-২৫০ বস্তা ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে আপাতত বাঁচা যাবে।’

মামলায় কোন আসামির নাম থাকবে আর কে বাদ যাবে তাও বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে কলরেকর্ড থেকে জানা যায়।

বদরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ভিডিও ফুটেজ এবং কথোপকথনের এমন রেকর্ড থাকার পরও পুলিশ প্রকৃত আসামিদের মামলা থেকে বাদ দিয়েছে। চুনোপুঁটিদের আসামি করে মামলা করার পরও খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে বিয়ানীবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে যাদের নাম আসছে, সবকটি আমরা নোট করছি। সবাইকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ের পর ৮০ বস্তা চিনি, একটি পিকআপ উদ্ধার ও এজাহারনামীয় দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের হোসাইনপুর গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৬) ও মৌলভীবাজারের বড়লেখার বোবারতল গ্রামের মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে হাসান (২১)। এর মধ্যে লিটন পেশাদার অপরাধী। তার বিরুদ্ধে বিয়ানীবাজার থানায় ডাকাতির মামলা রয়েছে।

এদিকে চিনি লুটের ঘটনায় তোলপাড়ের পর সিলেট জেলা ছাত্রলীগের দুটি ইউনিটকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ইউনিট দুটি হলো- বিয়ানীবাজার উপজেলা ও বিয়ানীবাজার পৌর শাখা।

বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বারেক হোসাইন আপন।

উপজেলা শাখায় জুয়েল আহমদ শিপুকে সভাপতি ও জাহিদুল ইসলাম তাহমিদকে সাধারণ সম্পাদক এবং পৌর শাখায় আশরাফুল আলম সাকেলকে সভাপতি ও রেদওয়ান আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল।