anusandhan24.com
সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি: মেরামত ও পুনর্বাসনে জোর দিতে হবে
মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪ ০৮:১০ পূর্বাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার নগরীর বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে। উজানের উপজেলাগুলোয়ও উন্নতি দেখা দিয়েছে। জৈন্তা, গোয়াইনঘাটসহ আশপাশের উপজেলাগুলোর পানিও সরে যাচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। তবে বন্যার প্রকোপ শেষ হওয়া মানেই সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। পানি নেমে যাওয়া শুরু হতেই দুর্ভোগ বাড়ছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর অধিবাসীদের। স্পষ্ট হচ্ছে বন্যাজনিত ক্ষতগুলো। বন্যার পানিতে গ্রামীণ সড়কগুলো হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে বিঘ্ন ঘটছে যাতায়াতের ক্ষেত্রে। যেসব সড়কে বন্যার পানির তোড়ে গর্ত তৈরি হয়েছে, সেসব সড়ক ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। যেসব এলাকা থেকে পানি সম্পূর্ণ নেমে গেছে, সেখানে ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ। আবার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে অনেক এলাকায় ভেঙে পড়ছে কাঁচা ঘরবাড়ি।

বন্যা পরিস্থিতির বর্তমান পর্যায়ে এসে বন্যার ক্ষত সারানো এবং পুনর্বাসনের প্রশ্ন দুটি সামনে চলে এসেছে। বন্যায় সরকারি সম্পত্তি ও অবকাঠামোর যে ক্ষতি হয়েছে, সেগুলো মেরামতের দায়িত্ব সরকারেরই। কিন্তু সাধারণ মানুষের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেগুলো পূরণ হবে কীভাবে? এক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই সরকারের যথেষ্ট কিছু করার আছে। প্রথমত, বন্যার সময় পানিবাহিত যেসব রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, সেগুলোর নিরাময়ে উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে। অধিক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমন পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিও জরুরি। আগামী দিনগুলোয় বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকসমাজ যাতে তাদের কৃষিকাজ যথাযথভাবে চালিয়ে নিতে পারে, সে জন্য তাদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে ব্যাংকঋণের। আমরা লক্ষ করেছিলাম, বন্যা শুরু হওয়ার সময়টাতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা প্রতিরক্ষামূলক ও সেবাধর্মী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়েছিল। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া দুর্গতদের প্রয়োজনীয় খাবার ও বিশুদ্ধ পানিও সরবরাহ করা হয়েছে। আমাদের কথা হলো, স্থানীয় প্রশাসনকে বন্যা-পরবর্তী পরিস্থিতিও সমান আন্তরিকতা দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকেও সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলোরও বন্যাকবলিত দুর্গত মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো উচিত। আমরা মনে করি, সব মহলের যৌথ উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় সিলেটের বন্যাকবলিত মানুষ আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করতে সক্ষম হবে।