anusandhan24.com
সংগঠনের দ্বন্দে অস্থিতিশীল ভোমরা স্থলবন্দর, বাণিজ্যে বিরুপ প্রভাব
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪ ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

সাতক্ষীরা ভোমরা স্থল বন্দরে বাড়ছে অস্থিতিশীলতা। যার নেপথ্যে নাম আসছে আমদানি ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন নামধারি প্রতিষ্ঠানের। তাদের কলকাঠিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্দরটিকে ব্যর্থ হিসেবে উপস্থাপন করার হীন চক্রান্ত বার বার সামনে আসলেও এখনো পর্যন্ত হয়নি কার্যকর কোনো সমাধান। উদ্ভুত পরিস্থিতি ভোমরা বন্দর কে আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ভোমরা কাস্টমস্ ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান বন্দরের অস্থিতিশীলতা তুলে ধরে জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ও ব্যাবসা-বাণিজ্যে ধ্বস নামানোর লক্ষ্য নিয়ে ভোমরা বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম ব্যহত করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট জেলার বিতর্কিত কয়েকেজনের নেতৃত্বে গঠিত হয় আমদানি ও রপ্তানীকারক অ্যাসোসিয়েশন। সেই সময় বিভিন্ন ভাবে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে তারা। দীর্ঘদিন পর তাদের কার্যক্রম এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রনে আসলেও ততক্ষণে বন্দর ত্যাগ করেন অনেক ব্যবসায়ী। ফলে কার্যত ক্ষতিগ্রস্থ হয় বন্দর। কমতে থাকে সরকারের রাজস্ব আয়। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সম্প্রতি আবারও বন্দরের কার্যক্রম চাঙ্গা হয়েছে। বাড়ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। এরই মধ্যে দুই বছর পর আবারও ভোমরা বন্দর দিয়ে ফল আমদানি শুরু হতে থাকে। আসতে থাকে অপ্রচলিত অনুমোদিত পন্য। তবে এরই মধ্যে আমদানি ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের কতিপয় গডফাদার ও চোরাকারবারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বন্দি হয়। ফলে প্রকাশ্যে আর বন্দর অস্থিতিশীলতার ষড়যন্ত্র করতে অপারগ হয়ে রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী (সভাপতি) ও অহিদুল ইসলামের (সাধারণ সম্পাদক) নেতৃত্বে আবারও আমদানি ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠন করে চলতি বছরের মার্চ মাসে। আলোচিত কমিটির নেপথ্য নায়ক সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন ও জেলার গুটিকয়েক বিতর্কিত ব্যাক্তি।

এরই মধ্যে বিতর্কিত সংগঠনের মাধ্যমে বন্দর এলাকা অস্থিতিশীল হয়েছে। তাদের প্ররোচনায় বিভিন্ন সংগঠনের অনিয়মের জন্য গদি হারানোর ভয়ে ভীত নেতারা যোগ দিয়েছে। ফলে ইতোমধ্যেই ব্যহত হয়েছে বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম। ওই চক্রের নেতৃত্বে মিথ্যা অপপ্রচার, ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করা, ভোমরা সংশ্লিষ্ট উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তার নামে মিথ্যা অপপ্রচার, মোটরসাইকেল শোডাউন, মিথ্য সংবাদ প্রকাশ ও বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার ভয়ে বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ।

এ বিষয়ে ভোমরা কাস্টমস্ ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন জানান, ‘এই চক্রান্ত নতুন কোন বিষয় নয়। তারা প্রতিনিয়তই কোনো না কোনো ভাবে বন্দরকে অস্থিতিশীল করেই চলেছে। তাদের কোনো ক্লান্তি নেই। তাদের মিশন একটাই বন্দরকে কার্যত অচল করে দেওয়া। তবে সিএন্ডএফ এজেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশন কোনো ভাবেই এটা বরদাস্ত করবে না। যে কোনো মূল্যে আমরা তাদের প্রতিহত করে বন্দরের চাকা আবার ঘোরাব।’

একই সুরে ভোমরা কাস্টমস্ ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এএসএম মাকসুদ খান বলেন, কতিপয় ব্যাক্তি নিজেদের সার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে আমদানি-রপ্তানিকারক সংগঠনের আড়ালে। এতে করে বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনিয়ম করার জন্য বিভিন্ন রকম চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। বন্দর কতৃপক্ষ অনিয়মের কাছে মাথা নত না করে সঠিক পন্থায় রাজস্ব আদায় করে যাছে এতে করে কতিপয় অসাধু আমদানী রপ্তানি ও কিছু সি অ্যান্ড এফ সদস্যরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভোমরা বন্দরের ভাবমুক্তি অক্ষুন্ন রাখাতে ও ব্যবসায়ীদের আস্থা আরো বাড়াতে পিছপা হবোনা ইনশাআল্লাহ।’

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কাস্টমস্ কর্মকর্তা জানান, সরকার নির্ধারিত শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার জন্য কিছু অসাধু এজেন্টদের দাবি না মানায় আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার করে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এভাবে চাপ প্রয়োগ অব্যাহতভাবে চলতেই থাকবে বলে তারা হুমকি দিচ্ছে। ফলে আমরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ স্বাভাবিক ভাবে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি না।