anusandhan24.com
নাভালনির অসম্পূর্ণ কাজ করার অঙ্গীকার ইউলিয়ার
শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:১১ পূর্বাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

কারাগারে রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া বলেছেন, ‘আমি আলেক্সি নাভালনির কাজ চালিয়ে যাব।’

মিউনিখের সিনিয়র রাজনীতিবিদদের জন্য সংরক্ষিত একটি মঞ্চে ইউলিয়া এ প্রতিশ্রুতি দেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক নাভালনির মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের (পুতিন ও তার সহযোগীদের) বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হবে বলেও জানান।

ক্যামেরার সামনে খুব একটা আসতে চাইতেন না ইউলিয়া। যিনি প্রচার থেকে সব সময় দূরে থাকতেন। এবার নিজেকে বদলে ফেলছেন তিনি। পুতিনের চোখে চোখ রেখে লড়াই করার জন্যই যেন প্রস্তুত হচ্ছেন তিনি। নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে ইউলিয়ার রাশিয়ায় যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এখন নির্বাসনে থেকে কিভাবে তার স্বামীর সংগঠনকে নেতৃত্ব দেওয়া যায়, তা খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে একই ধরনের সমস্যায় পড়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক বিষয়ক কাউন্সিলের একটি বৈঠকে প্রবেশ করে ইউলিয়া নাভালনায়া নিজের লক্ষ্যর কথা তুলে ধরেন। নাভালনির দুর্নীতি দমন ফাউন্ডেশন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা এবং স্বাধীন রাশিয়ান মিডিয়াতে শিরোনাম তৈরি করেছে; কিন্তু সংস্থাটি রাশিয়ান জনসংখ্যার কাছ থেকে বৃহত্তর সমর্থন জোগাড় করতে বা রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়েছে। ইউলিয়া নাভালনায়া এখন সেই জনসমর্থন সংগ্রহের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যেতে চান। এ কারণে রাশিয়ায় এবার প্রধান বিরোধী মুখ নাভালনির স্ত্রী!

বিরোধী নেত্রী হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘পহেলা নম্বর’ শত্রু হয়ে ওঠাই যেন এখন ইউলিয়ার লক্ষ্য। এটি একজন নারীর একটি উচ্চাভিলাষী বিবৃতি। যিনি একবার হার্পারস বাজারের রাশিয়ান সংস্করণের সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, তার মূল কাজ সন্তান এবং বাড়ির যত্ন নেওয়া।

ইউলিয়া নাভালনায়া রাশিয়ার বিরোধীদের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার এবং সবচেয়ে উত্তাল সময়ের মধ্যে নেতৃত্ব দেবেন। বিরোধী দল ভেঙে গেছে এবং নাভালনির মৃত্যু এটিকে একটি গুরুতর আঘাত করেছে। এখন প্রশ্ন হলো- নাভালনায়া কি তার স্বামীর সৈন্যদের একত্র করতে পারবেন? পুতিনকে যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে কাজ করতে পারবেন? বিশেষ করে যখন মার্চে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর পুতিন ক্রেমলিনে আরও ছয় বছর দায়িত্ব পালনের পথে রয়েছেন।

পুতিন ক্রমবর্ধমানভাবে বাকস্বাধীনতার ওপর ক্র্যাকডাউন করেছেন এবং রাশিয়ার মধ্যে ভিন্নমত পোষণকারী বিরোধী ও সমালোচকদের জেলে ভরেছেন। তিনি এবং নাভালনি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিবাহিত জীবন কাটিয়েছেন। রাশিয়ায় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় স্বামীর পাশে ছিলেন। তিনি তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য পুতিনকে অভিযুক্ত করেছেন। যদিও তা উড়িয়ে দিয়েছে ক্রেমলিন।

শুক্রবার নাভালনির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই তিনি একই পরিস্থিতির শিকার বেলারুশিয়ান বিরোধী নেতার স্ত্রী সভিয়াতলানা সিখানৌস্কায়ার সঙ্গে দেখা করেন। ২০২০ সালে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে জেলে যাওয়ার পর সিখানৌস্কায়া তার স্বামী, বেলারুশিয়ান বিরোধী নেতা সিরহেই সিখানৌস্কির কাছ থেকে রাজনৈতিক ব্যাটন হাতে তুলে নিয়েছিলেন। তিনি একটি সফল প্রচারাভিযান চালিয়েছিলেন; কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো পশ্চিমে ব্যাপকভাবে জালিয়াতি হিসেবে বিবেচিত একটি নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করার পরে বেলারুশ থেকে পালিয়ে যান।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে