anusandhan24.com
ভাষার মাস ছাত্রসমাজ ফুঁসে ওঠে
বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২১ পূর্বাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

ভাষা আন্দোলনের পক্ষ নেওয়ায় ‘পাকিস্তান অবজারভার’ নিষিদ্ধ করা হলো। অন্যদিকে ‘মর্নিং নিউজ’ পুরোপুরি ভাষা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রীতিমতো মিথ্যাচার করতে শুরু করল।

পাকিস্তান অবজারভারের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা প্রকারান্তরে ভাষা আন্দোলনের ওপরই আঘাত। তাই রাজনীতিসচেতন ছাত্র সমাজ একুশকে সামনে রেখে আরও ফুঁসে উঠছে। অন্যদিকে মর্নিং নিউজের মিথ্যাচারকে তুলে ধরছে অন্যান্য পত্রিকা।

একুশের দিনলিপি গ্রন্থে ১৯৫২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নিয়ে বলা হয়- দিনটি আগের মতোই একুশ নিয়ে আবেগ, উত্তাপ ও তৎপরতায় একইভাবে চলছে। তবে রাজনীতিমনস্ক ছাত্রদের মধ্যে আলোচনা পাকিস্তান অবজারভার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা নিয়ে। ছাত্র সমাজে এর পাঠকপ্রিয়তা কম ছিল না।

এদিনও আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় এটি। এর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ঢাকাই নবাববাড়ির ইংরেজি দৈনিক মর্নিং নিউজ। বাংলার জল-হাওয়ায় পুষ্ট হওয়া সত্ত্বেও এর সাংবাদিকতার প্রধান কাজ হয়ে ওঠে বাংলা-বাঙালির বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে লাগা।

‘অবজারভার’ ছিল ভাষা আন্দোলনের পক্ষে একমাত্র ইংরেজি পত্রিকা এবং এর মাধ্যমেই আন্দোলনের সঠিক খবর ইংরেজি জানা মানুষ, বিশেষত পশ্চিম পাকিস্তানের অবাঙালি শাসকশ্রেণির কাছে পৌঁছেছে, তারা তা গ্রহণ করুক আর নাই করুক। নুরুল আমীন সরকার এ বিষয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল। তাই সুযোগ পাওয়ামাত্রই পত্রিকাটির প্রকাশ নিষিদ্ধ করে। ফলে পূর্ববঙ্গীয় ভাষিক রাজনীতির ইংরেজি ভাষ্যের খবরের জন্য মর্নিং নিউজ হয়ে ওঠে একমাত্র পত্রিকা, যার পাতায় পাতায় ভাষা আন্দোলন নিয়ে মিথ্যার বেসাতি। এমনটাই চেয়েছিল নুরুল আমীন সরকার। সামনে সম্ভাব্য প্রাদেশিক নির্বাচন।

সেক্ষেত্রে সংবাদপত্রের থাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাই অবজারভার নিষিদ্ধ করার দরকার ছিল সরকারের।

ইতোমধ্যে মর্নিং নিউজের বাংলাবিরোধী ভূমিকা সম্পর্কে ‘ঢাকা প্রকাশ’-এর সম্পাদকীয়তে চমকপ্রদ মন্তব্য প্রকাশিত হয়। তাতে লেখা হয়- ‘সহযোগী মর্নিং নিউজ আদাপানি খেয়ে নেমে গেছে উর্দুর পক্ষে। উহার শ্রাদ্ধশান্তি না হওয়া পর্যন্ত যে ইনি ক্ষান্ত হবেন না এ দেশের লোক তা ভালো করেই জানে। কিন্তু টাকা ও ক্ষমতার বলে কাম ফতে করার দিন আর নেই। জনবল চাই, জনগণের সাপোর্ট পেতে হলে জনগণের মতামতকে গ্রাহ্য করতে হয়।’

না, ওরা কেউ জনমত গ্রাহ্য করেনি। এর পরিণাম ভালো হয়নি। ‘ঢাকা প্রকাশ’-এর বক্তব্য সত্য হয়ে দাঁড়ায়। মুসলিম লীগ ও তার সরকার ক্রমেই জনসমর্থন হারায় তাদের দুঃশাসনে ও ভাষা আন্দোলনের অভিঘাতে।