দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ফের এক দিনেই দেড় হাজার কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়; যা ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। ওইদিন এ বাজারে ১ হাজার ৮১০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল।
ফ্লোর প্রাইস আরোপের পরবর্তী সময়ে একের পর এক তালিকাভুক্ত অধিকাংশ শেয়ার ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছিল। এক পর্যায়ে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি কোম্পানির শেয়ারে পুরোপুরি ক্রেতাশূন্য অবস্থা দেখা গেছে। এ কারণে লেনদেন তলানিতে নেমেছিল। গত বছরের ১ জানুয়ারি এক দিনের লেনদেন মাত্র ১৪৬ কোটি টাকায় নামারও নজির সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দেড় বছর পর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর দুই সপ্তাহ ধরে ফের লেনদেন বাড়ছে।
গতকালসহ কয়েক দিনের লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রকৌশল, বস্ত্র এবং বীমা খাতের শেয়ারে বেশি লেনদেন হচ্ছে। তালিকাভুক্ত ৩৯৩ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে এই তিন খাতে ৪২-৪৫ শতাংশ পর্যন্ত লেনদেন হতে দেখা যাচ্ছে। এর বাইরে ওষুধ ও রসায়ন এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতেরও কিছু শেয়ারে উল্লেখযোগ্য লেনদেন হচ্ছে।
যেমন– গতকাল ২৫১ কোটি ২০ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে খাতওয়ারি লেনদেনে শীর্ষে ছিল প্রকৌশল খাত; যা মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। বীমা খাতে ২১৯ কোটি টাকার এবং বস্ত্র খাতে প্রায় ১৯০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
একক কোম্পানি হিসেবে ফু-ওয়াং ফুডেরই ৬৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনে এর পরের অবস্থানে থাকা খুলনা প্রিন্টিংয়ের ৫২ কোটি ২৮ লাখ, ফরচুন শুজের ৪৬ কোটি ৮০, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের পৌনে ৪৭ কোটি, অলিম্পিক অ্যাক্সেসরিজের পৌনে ৩৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এই সবগুলো শেয়ারই লোকসানি, বন্ধ বা অপেক্ষাকৃত রুগ্ণ কোম্পানি।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, লেনদেনের শীর্ষ ২০ কোম্পানির মোট ৬৩২ কোটি টাকারও বেশি মূল্যর শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৪০ শতাংশ। যদিও এ দিন ঢাকার এই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৯০ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়েছে। লেনদেন দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়ানোর দিনে গতকাল ডিএসইএক্স সূচকও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। পৌনে ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে সূচকটি ৬২৮০ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ দিনে সূচক বেড়েছে ২০১ পয়েন্ট। এই সূচকভুক্ত ২৫০ শেয়ারের মধ্যে ২০২ শেয়ারের দর বাড়ার বিপরীতে ৩৩টির দর কমেছে।
সার্বিক হিসাবে ৩২১ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে, কমেছে ৪৪টির দর। এর মধ্যে লেনদেনের মাঝে ৫১ কোম্পানির শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়। অবশ্য লেনদেনের শেষে এ সংখ্যা ২৪-এ নেমে আসে। এ দিন ৯ শতাংশের ওপর ২৮টি এবং ৫ শতাংশের ওপর ৯৬ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।