anusandhan24.com
‘আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব’ সংসদের বাইরে হুংকার মহুয়ার
শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:১১ অপরাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সংসদের বাইরে এসে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য মহুয়া মৈত্র। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এথিক্স কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিন মহুয়ার এমপি পদ খারিজ করে দেওয়ার পর লোকসভায় তাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি।

এরপর লোকসভা থেকে বেরিয়ে গর্জে উঠেন মহুয়া মৈত্র। তিনি জানান, এ ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি। এমনকি আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভেতরে ও বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত এই এমপি।

মহুয়া বলেন, লোকসভার এথিক্স কমিটিতে ‘এথিক্স’ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তারা সব নিয়ম ভেঙে ফেলেছে। এমন একটা কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হলো, যা লোকসভার সব সদস্যের মধ্যে প্রচলিত একটি অভ্যাস। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনো উপহার নিয়েছি, তার কোনো প্রমাণ নেই।

তিনি আরও বলেন, মোদি সরকার যদি ভেবে থাকে, আমাকে এভাবে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা মুক্তি পাবে, তবে ভুল ভাবছে।

তৃণমূলের বহিষ্কৃত এই এমপি আশঙ্কা করছেন, লোকসভা থেকে বহিষ্কারের পর তার কাছেও সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থা পাঠানো হবে এবং তাদের দিয়ে আমাকে হেনস্থা করা হবে।

কয়েক মাস যাবৎ আদানি গোষ্ঠীর ব্যবসা–বাণিজ্য নিয়ে মহুয়া বেশ কিছু প্রশ্ন করছিলেন। ঝাড়খন্ড জেলার গোড্ডা (ওখানে আদানির প্রকল্প থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি হয়) কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বিজেপির নিশিকান্ত দুবে স্পিকারকে চিঠি লিখে মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘অনৈতিকতার’ অভিযোগ আনেন।

তার অভিযোগ, শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে নানাবিধ ‘সুবিধা’ নিয়ে তার ব্যবসায়িক স্বার্থে মহুয়া প্রশ্নই শুধু করেননি, ই-মেইলের লগইন পাসওয়ার্ড পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীকে দিয়েছিলেন, যাতে তিনি সরাসরি প্রশ্ন পাঠাতে পারেন। দুবের অভিযোগ, দুবাইয়ে বসে হিরানন্দানি সেই কাজ করেছেন, যা ‘দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক’।

এ ঘটনায় মহুয়া মৈত্রর সংসদ সদস্যপদ খারিজের সুপারিশ করে ‘এথিকস কমিটি’। তার বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার যে অভিযোগ শাসক দল বিজেপি করেছিল, তার ‘তদন্ত’ শেষ করে এথিকস কমিটি ওই সুপারিশ চূড়ান্ত করে।

প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠার রিপোর্টে মহুয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করতে সরকারকেও সুপারিশ করা হয়। এথিকস কমিটির ওই সুপারিশ গত ১০ নভেম্বর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে পেশ করা হয়। স্পিকার এ বিষয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রস্তাব পাশ করান লোকসভায়। এরপর আজ তার সংসদ সদস্য পদ খারিজ করা হয়।

এদিকে দলের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের ঘটনায় স্তম্ভিত তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের বার্তাও দিয়েছেন তিনি।