কলকাতায় হয়ে গেল ‘মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ: সমাজ ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। শুক্রবার এ আলোচনার আয়োজন করে বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড নামে ভারতের একটি সংগঠন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশের কলকাতাস্থ উপরাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ থেকে আলোচনায় অংশ নেন পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।
উপরাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসার পরে এখন বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা এগিয়ে নিতে পেরেছি। স্বাধীনতাবিরোধীরা সব সময় ছিল, সত্তরের নির্বাচনেও আমরা দেখেছি তাদেরকে। সেই মানসিকতার লোক এখনও রয়েছে। যারা স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে সক্রিয় রয়েছে। একটা দেশের অস্তিত্বের প্রতি বিরোধী হওয়া কোনো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এটা মানা যায় না। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে থাকবে, যেখানে প্রত্যেকের মতপ্রকাশের অধিকার থাকবে এবং যেটা হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা।’
এদিন প্রাক্তন বিচারপতি চিত্রতোষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা যে পথ শুরু করে গেছেন মুজিব, সে পথেই আপনারা হাঁটবেন। আপনাদের লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়াটা আপনাদের পক্ষে তো নয়ই সে কথা বলাবাহুল্য ভারতবর্ষের পক্ষেও খুব শুভ কাজ হবে না। আমরা প্রত্যাশা করব সেখানে গণতন্ত্র অক্ষুন্ন থাকবে।’
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। যে গণতন্ত্রের ঐতিহ্য বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমি চাই সেই গণতন্ত্রের পরম্পরা চলুক।’
আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘এখনো অনেকে মনে করেন বাংলাদেশকে ইসলামিক স্টেট করা যাবে। হিন্দুরাষ্ট্র এবং মুসলিমরাষ্ট্র ভারত এবং বাংলাদেশের দু দেশেরই মৌলবাদীদের প্রচেষ্টা।’ বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা যদি মনে করেন তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে জিততে পারবেন না বা তাদের কথা মানুষ গ্রহণ করবে না, সুতরাং মানুষ গ্রহণ করছেন না এই রায় পাওয়ার আগেই আমি একটা প্রতিবাদী ঢঙে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। এটা তাদের কৌশল হতে পারে। বিএনপির ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী। মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্য যদি বজায় রাখতে হয়, মুক্তিযুদ্ধের মানে পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ নতুন দেশ তৈরি করা। আমি চাইব, আমার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হোক। ধর্মনিরপেক্ষ ব্যতীত মানবসভ্যতা টিকবে না। বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র থাকলে আমাদের অনেক শক্তি বাড়বে।’