anusandhan24.com
টঙ্গীর কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে
সোমবার, ৮ মে ২০২৩ ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী গাজীপুরা সাতাইশ এলাকায় একটি ক্যাপ তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাত ৯টার দিকে জি জে ক্যাপস অ্যান্ড হেডওয্যার লিমিটেড নামের কারখানার সাততলা ভবনের পঞ্চম তলায় এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ইকবাল হাসান জানান, ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট রাত ১১টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এছাড়াও প্রতিমাসেই তাদেরকে অতিরিক্ত কাজের টার্গেট দেওয়া হতো। টার্গেট পূরণ করতে না পারলেই ওইসব শ্রমিককে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হতো। এ নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছিল। বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কাজের টার্গেট নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজনের সঙ্গে শনিবার দুপুরে শ্রমিকদের কথাকাটাকাটি হয়। এতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দুপুরের খাবারের পর কাজ বন্ধ করে দেয়।

এ নিয়ে মালিকপক্ষ, পুলিশ ও শ্রমিকপক্ষের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হওয়ার পরও কোনো সুরাহা না হওয়ায় রাতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। খবর পেয়ে থানা ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে রাত পৌনে ৯টার দিকে কারখানার ৫ম তলায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠে। এ সময় পাঁচতলা থেকে আগুনের লেলিহান শিখা চতুর্থ ও তৃতীয়তলার তৈরি ক্যাপ ও কাঁচামালে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে টঙ্গী, উত্তরা ও গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের কেবলমাত্র মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। আগামী বুধবার তাদের বেতন পরিশোধের কথা ছিল। এছাড়াও টার্গেট ফিলআপের বিষয় নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে একটা সমস্যা চলছিল। সমস্যা সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার ফাঁকে কারখানায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছে শ্রমিকরা। কারখানার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।

টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান জানান, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানে ইট-পাটকেল ছুড়ে ভাংচুর চালালে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে পুলিশ। একপর্যায়ে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পঞ্চম তলার ফ্লোরে আগুন লাগিয়ে দেয়।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইকবাল হাসান জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পিংকি ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট যায়। পরে আগুনের ভয়াবহতা দেখে আরও ইউনিট এসে যোগ দেয়।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা খবর পাই ৮টা ৫৫ মিনিটে। ১১টা ৩৬ মিনিটে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হই। কারখানার ভবনটির সিফটি ইক্যুইপমেন্টগুলোতে সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির ব্যবস্থা ছিল না। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।

শিল্প পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মাসুদ আহাম্মেদ বলেন, কারখানায় অসন্তোষের একটি বিষয় ছিল। এই বিষয়টি লোকাল থানা ও শিল্প পুলিশ অবগত। রোববার কারখানায় শ্রমিকরা আন্দোলন করতে থাকে।সন্ধ্যার পর পর কারখানায় আগুন লাগার খবর পাই। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।