
anusandhan24.com :
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরু বাজারের হাসিলের টাকা ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন।
গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার নাম রিফাতুল ইসলাম রিফাত (২৩)। তিনি সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য এবং সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াবাড়ির মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ রিফাতকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার (১০ জুলাই) রাত ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মদিনা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সোনাইমুড়ী পৌরসভার হাইস্কুল মাঠে ঈদুল আজহা উপলক্ষে একটি গরু বাজার সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হয়। ওই গরু বাজারের হাসিল আদায়ের টাকা সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয় করে শিডিউল ক্রয়কারীদের মধ্যে বিতরণ করার সিন্ধান্ত নেয় স্থানীয় নেতারা।
তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে সোনাইমুড়ী পৌরসভার বানুয়াই মহল্লার সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হাসিলের ৪০ পার্সেন্ট, নাওতলা গ্রামের নেতাকর্মীদের ২০ পার্সেন্ট টাকা এবং পৌরসভার ৫-৬ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের হাসিলের ৪০ পার্সেন্টের টাকা ভাগ করে দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে আমাকে হাসিল আদায়ের ২০ পার্সেন্ট টাকা ও উপজেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সম্পাদক রাসেল মাহমুদের লোকজনকে ২০ পার্সেন্টের টাকা দেওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার স্থানীয় নেতারা হাসিল আদায়ের টাকা ভাগ করে রাসেলের কাছে দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে রাসেল টাকা ভাগ হবে না ঘোষণা দিলে বিরোধ দেখা দেয়।
জুয়েল অভিযোগ করে আরও বলেন, এ নিয়ে শুক্রবার রাতে আমার সাথে রাসেলের সাথে বাগবিতণ্ডা হয়। পরের দিন জানতে পারি যাদের নামে সিডিআর ফরম কেনা হয়েছে তাদেরকে ফরমপ্রতি ৪০ হাজার টাকা করে দিয়ে দেওয়া হয়। যে সব শিডিউল বিক্রি হয়েছে তার ৫টি রাসেলদের লোকজন ক্রয় করে। শনিবার সন্ধ্যায় তারা আমাকে বাইপাস এলাকার একটি বাড়িতে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে ওই স্থানে তারা আমার ২জন লোককে মারধর করে। এরপর রোববার বিকেলের দিকে রাসেলও তার সাঙ্গপাঙ্গরা শিপন নামে আমার আরেক অনুসারীকে মারধর করে।
ওই সময় আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর রোববার রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগকর্মী রিফাত তার দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে মদিনা ভবনের সামনে তাকে গতিরোধ করে রাসেল, জয়নালসহ তাদের ১০-১৫ জন তার ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে রাসেলের নির্দেশে জয়নাল নামে এক যুবক রিফাতের পায়ে গুলি চালায়।
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সম্পাদক রাসেল মাহমুদ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক শামল উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত রাসেল বছরখানেক আগে জামায়াত-শিবির থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। কিছু দিন আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। গরু বাজারের হাসিলের টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে রিফাতকে গুলি করে রাসেল ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রিফাত নামে এক যুবকের পায়ের পাতায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গুলির আঘাতের চিহ্ন কি না তা ডাক্তারি রিপোর্ট হাতে পেলে বলা যাবে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গুলির ঘটনায় সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।