anusandhan24.com
‘দেশে অতি দ্রুত ধনী হওয়ার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়বে’
শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২ ০৭:০৯ অপরাহ্ণ
anusandhan24.com anusandhan24.com :

প্রস্তাবিত বাজেটে ‘আয় বৈষম্য ও সম্পদ বৈষম্য হ্রাস করে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের কোনো রাজনৈতিক নির্দেশনা’ নেই বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পদক্ষেপ, লক্ষ্য এবং নীতিকৌশল নির্ধারণ করেছেন- তাতে বাংলাদেশে বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের অবসান হবে না বরং বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পাবে, অতি দ্রুত ধনী হওয়ার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়বে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য দূর করার কোনো দিকনির্দেশনা বাজেটে নেই। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্র্যতাসহ ৬ কোটি শ্রমজীবী মানুষের কর্মের নিশ্চয়তা এবং বেকারত্বের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার যথার্থ পরিকল্পনা বাজেটে পরিলক্ষিত হয়নি।’

তারা বলেন, ‘সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি ও উৎপাদনে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্তায় সামাজিক বৈষম্য হ্রাস এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় হতদরিদ্র ও কর্মহীন সমগ্র জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় এনে ডিজিটাল ব্যবস্থায় তাদের নগদ অর্থ প্রদান করতে হবে। দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির কথা বহুবার এসেছে। বাংলাদেশ মূল্যস্ফীতির চাপ অনেক বেশি। মূল্যস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি নিয়ে বাজেটে যা বলা হয়েছে- তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত নয়।’

অর্থপাচার নিয়ে জেএসডি সভাপতি-সম্পাদক বলেন, ‘পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনার প্রস্তাবিত ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের দিক থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের সংবিধান ২০ অনুচ্ছেদে অনুপার্জিত আয় ভোগ করাকে নিষিদ্ধ করেছে।’

তারা বলেন, ‘উত্থাপিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। অর্থাৎ সমন্বয়ের নামে বছরে কয়েকবার দাম বাড়ানো হবে। এতে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়ভার মারাত্মকভাবে বেড়ে যাবে, যা কোনোক্রমেই সহনীয় পর্যায়ে থাকবে না।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর দ্রব্যাদির ওপর করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, জনস্বাস্থ্যের বিবেচনায় যা অত্যন্ত আতঙ্কজনক। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে জিডিপির কমপক্ষে ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও বাজেটে সেই পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।’

নেতারা বলেন, ‘বিদ্যমান শাসন ব্যবস্থায় বাজেট প্রণয়ন পদ্ধতি একেবারেই যুগোপযোগী নয়। এতে জনগণের অংশগ্রহণ এবং সৃজনশীল চিন্তা প্রয়োগের কোনো সুযোগ নেই। ফলে গণমুখী বাজেট প্রণয়নও সম্ভব হয় না।’

‘ঔপনিবেশিক শাসন পদ্ধতি পরিবর্তন করে জনগণের অংশগ্রহণ ভিত্তিক রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বাজেট প্রণীত হলেই বিপজ্জনক আয় বৈষম্যে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া দূরীভূত করা সম্ভব হবে’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন রব-ছানোয়ার।