রবিবার ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ গণভোট ইস্যুতে মুখোমুখি বিএনপি-জামায়াত ◈ শাহজালালে যাত্রীর পাকস্থলীতে মিলল ৬৩৭৮ ইয়াবা ◈ চলতি বছর স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫০ বার, কমেছে কত বার? ◈ সকাল ৯টার মধ্যে ঢাকাসহ যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস ◈ বিএনপির একজন নেতার চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই গণভোট আয়োজন সম্ভব: পাটওয়ারী ◈ ঢাকায় জুলাইযোদ্ধা শাফিনের রহস্যজনক মৃত্যু ◈ জামায়াত নিষিদ্ধে আলালের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানালেন আবদুল হালিম ◈ বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে বোঝাপড়া হচ্ছে বলে শুনতে পাচ্ছি: পাটওয়ারী ◈ জামায়াত-বিএনপি ও এনসিপির কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন সম্ভব নয়: জাপা মহাসচিব ◈ নির্বাচন কমিশন ভাগাভাগি হয়ে গেছে: হাসনাত

ভারতের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ, বাংলাদেশের লাভ কতটা

প্রকাশিত : ০৬:০০ পূর্বাহ্ণ, ৭ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার ৪২ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রাখার ‘শাস্তি’ হিসেবে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (৬ আগস্ট) রাতে দেওয়া এই ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের আমদানি শুল্ক দাঁড়াল ৫০ শতাংশে, যা বাংলাদেশের চেয়ে ৩০ শতাংশ, চীনের তুলনায় ২০ শতাংশ এবং পাকিস্তানের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।

এর আগে বাংলাদেশসহ কমপক্ষে ৯০টি দেশের জন্য নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে দেশভেদে ৪১ থেকে ১০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। দর কষাকষির পর বাংলাদেশের শুল্ক ৩৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় ১৯ শতাংশ শুল্ক হার নিয়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে পাকিস্তান।

অন্যদিকে, প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্কের মুখে পড়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ (পারস্পরিক শুল্ক) তালিকা অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ অন্তত ৫০টি দেশের পণ্যে ভারতের তুলনায় কম শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্প সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি করেছেন, যা ভারতের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি বিশেষভাবে অনুকূল হতে পারে। যদিও ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই, তবুও ২০ শতাংশ শুল্কহার ভারতের ৫০ শতাংশের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে এই শুল্ক সুবিধা বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় পোশাক আমদানিকারক বাজার, যেখানে বাংলাদেশ ও ভারত দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষ প্রতিযোগী। এখন শুল্ক ব্যবধানের কারণে ভারতীয় রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই বাজার শেয়ার বাংলাদেশের হাতে আসতে পারে। ঘোষিত নতুন শুল্কহার আগামী ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

এশিয়ার অন্যান্য রপ্তানিকারক দেশও ভারতের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে। উদাহরণস্বরূপ, ভিয়েতনাম (২০ শতাংশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন (প্রতিটি ১৯ শতাংশ) ভারতের চেয়ে অনেক কম শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে। ফলে বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের বাজারে এসব দেশের প্রবেশাধিকার ভারতের তুলনায় অনেক বেশি হতে পারে।

একইভাবে, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার জন্য অনুকূল শুল্ক কাঠামো ভারতের দ্রুত বিকাশমান অ-চামড়াজাত জুতা শিল্প ও ইলেকট্রনিকস খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কহার যত কম, ততই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা সম্ভব। ভারতীয় তৈরি পোশাক, চামড়া এবং জুতা- এই তিনটি খাতই এখন সরাসরি চাপে পড়তে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের পোশাক খাত তুলনামূলক কম শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার পাবে, যা রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষ করে যদি মার্কিন খুচরা ক্রেতারা কম শুল্ক সুবিধার কারণে ভারতীয় পণ্যের বদলে বাংলাদেশের পণ্যকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করেন, তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের বাজার শেয়ার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে।

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি বর্তমানে কৃষি ও গাড়ি খাত সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আটকে আছে। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে, ভারত জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড (জিএম) ভুট্টা ও সয়াবিনসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক এবং মার্কিন দুগ্ধ ও কৃষিপণ্য আমদানির অনুমতি দিক। তবে ভারতের ছোট চাষিদের প্রাধান্য ও প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে জিএম পণ্যের নিয়ন্ত্রণ শিথিল করাও ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিতর্কিত ইস্যু।

ফলে বর্তমান শুল্কনীতিতে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বড় ধরনের প্রতিযোগিতামূলক অসুবিধায় পড়তে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি কৌশলগত সুযোগে পরিণত হতে পারে, বিশেষ করে পোশাক, চামড়া, জুতা এবং কিছু হালকা শিল্পপণ্যের ক্ষেত্রে। তবে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে বাংলাদেশকে দ্রুত উৎপাদন সক্ষমতা, মান নিয়ন্ত্রণ এবং লজিস্টিক অবকাঠামো উন্নত করতে হবে, যাতে মার্কিন বাজারে চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT