রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রক্ত আছে রক্ত…?

প্রকাশিত : ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ, ২২ জুলাই ২০২৫ মঙ্গলবার ৩৬ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

হাজার হাজার মানুষ। যে যেভাবে পারছেন ছোটাছুটি করছে। উচ্চ শব্দে সাইরেন বাজিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স যেন ছুটেছে পাগলের মতো। ব্যস্তত্রস্ত স্বেচ্ছাসেবীরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন পথ থেকে মানুষ সরিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার জায়গা করে দিতে। দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকা শত শত পিতা-মাতা, ভাই-বোন ও স্বজনের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে আশপাশের এলাকা। তবে এসব কিছু পাশ কাটিয়ে একদল তরুণ-তরুণীকে খুব শান্তভাবে কিছু একটা করতে দেখা যায়। হাতে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে গেলেন রাস্তার দুই ধারে। মাথার ওপরে ধরে রাখা সাদা কাগজে দ্রুত এলোমেলো হাতে লেখা ‘রক্ত আছে, রক্ত…?’, ‘রক্ত লাগবে?’—এমন সব শব্দ। গতকাল সোমবার বিকেল থেকেই রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে ছিল এমন দৃশ্য।

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনাস্থল থেকে আসা দগ্ধ ও আহতদের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে অভিনব এই পন্থা অবলম্বন করছিলেন এসব তরুণ-তরুণী। যাদের বেশিরভাগই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের একজন রাসেল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দগ্ধ ও আহতদের জন্য নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের বেশ সংকটের কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এমন পরিস্থিতিতে আহত ও দগ্ধদের স্বজনদের পক্ষে রক্ত সংগ্রহ করা খুবই কঠিন কাজ। তাই আগ-পিছ না ভেবে আমরাই এ দায়িত্ব নিয়েছি।’

তাদের এই উদ্যোগের যথাযথ প্রয়োজনীয়তা বোঝা গেল বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের সামনে গিয়ে। শত শত মানুষের ভিড়ে কেউ একজনকে চিৎকার করে বলতে শোনা গেল, ‘এখানে মাহমুদার কোনো স্বজন আছেন? মাহমুদার কেউ আছেন? তার জন্য ও-নেগেটিভ রক্ত লাগবে। দ্রুত ম্যানেজ করতে হবে।’ টানা কয়েকবার তিনি এই আকুতি জানালেন। ভিড়ের মধ্যে পরিচয় পাওয়া গেল না। তবে পরনের অ্যাপ্রোন দেখে অনুমান করা গেল, চিৎকার করে মাহমুদার জন্য রক্ত চাওয়া মানুষটি বার্ন ইনস্টিটিউটের একজন সেবিকা। প্রায় অভিন্ন চিত্র ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটের সামনে। সেখানেও জরুরি বিভাগের সামনে খুবই বিষণ্ন মনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় স্কুল ইউনিফর্ম পরিহিত দুই শিক্ষার্থীকে। ভেতরে তাদের ভাই জারিফ ফারহান আগুনে পুড়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। কোনো এক সেবিকা এসে জানালেন রক্ত লাগবে। এটা শোনার পর আর এক মুহূর্ত কালক্ষেপণ না করে তারা চলে গেলেন রক্তের সন্ধানে। সেখানে ফারহানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তার ভাইয়ের বন্ধু মো. আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ফারহানের অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল৷। ডাক্তাররা ব্ল্যাড ম্যানেজ করতে বলছেন। ওর মুখ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। উরু পুড়ে গেছে। দেখার মতো অবস্থা নেই।’

শুধু ঢামেক কিংবা বার্ন ইনস্টিটিউট নয়, প্ল্যাকার্ড হাতে রক্ত সংগ্রহ করতে দেখা গেছে উত্তরা আধুনিক মেফডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনেও। এসব জায়গা থেকে রক্তদাতা সংগ্রহ করে সেনা ও বিমানবাহিনীর গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল রক্ত নেওয়ার জন্য।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT