বুধবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ চাকসু নির্বাচন: দ্বিতীয় দিনে ১৪১ জনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ◈ নারায়ণগঞ্জে ফ্ল্যাটে স্বামী-স্ত্রী ও চার বছরের শিশুর লাশ ◈ ‘সরকারি বেতন-রেশন খাস না, গুলি করবি না কেন?’ ◈ প্রশাসনের ১৭ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন দূতাবাসে বদলি, তালিকা প্রকাশ ◈ একদিনে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ◈ টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস ◈ সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ফ্ল্যাট-জমি জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ ◈ শুধু নিন্দা জানিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানো সম্ভব নয়: মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ◈ নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীরও পদত্যাগ চায় জেন-জি ◈ গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী বেছে নিল নেপালের জেন-জিরা

কারফিউ ভাঙার নির্দেশ আসে বিদেশ থেকে

প্রকাশিত : ০৯:১০ পূর্বাহ্ণ, ২৯ জুলাই ২০২৪ সোমবার ৮১ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে উঠা ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ওতপেতে ছিল তৃতীয় পক্ষ। বিষয়টি নিয়ে সরকারকে প্রতিবেদনও দেয় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। ১৭ জুলাই থেকেই মূলত আন্দোলন ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এরপর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটতে থাকে একের পর এক নাশকতা। পরিস্থিতি দ্রুতই অবনতি হতে থাকে। চলতে থাকে স্মরণকালের ভয়াবহ নৈরাজ্য। এ অবস্থায় দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। কিন্তু এ কারফিউ ভাঙার নির্দেশ আসে বিদেশ থেকে। নেতাকর্মীদের বলা হয়, যে কোনো মূল্যে কারফিউ ভাঙতে হবে। কারফিউ ভাঙতে না পারলে নেতাকর্মীরা যেন চুড়ি-ফিতার ব্যবসা করেন-সেই নির্দেশনাও আসে। এই নির্দেশনার কারণে কারফিউ জারির পরও রাজপথে ছিলেন সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রাথমিক অনুসন্ধানে মিলেছে এসব তথ্য।

ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে ‘ঘোলা পানিতে মাছ’ শিকারের চেষ্টা করেছে সরকারবিরোধী একাধিক রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি সুযোগ নিতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। কিন্তু কারফিউ জারি করে দ্রুত ববস্থা নেওয়ায় সুযোগ সন্ধানীরা আপাত দৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু থেমে নেই তাদের তৎপরতা। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ওই সূত্র আরও জানায়, অন্দোলনে উসকানিদাতাদের নাম এবং মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে। যারা টাকা দিয়েছে তাদের নাম-পরিচয় জানা গেছে। আন্দোলন চাঙা করতে ঢাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুরকে চার লাখ টাকা দিয়েছেন একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান।

এদিকে কোটা সংস্কার অন্দোলন এবং সাম্প্রতিক নাশকতার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আন্দোলনকে ঘিরে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তা স্বাভাবিক সূত্রে মেলাতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, কোনো কোনো স্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের একাংশ। তারা জানিয়েছেন, অতীতের অন্দোলনে কয়েক হাজার ছাত্রের মধ্যে একজন কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু কোনো সমস্যা হয়নি। এবার আন্দোলনের শুরুতে পুলিশ কোনো অ্যাকশনে যায়নি। তারপরও পুলিশের ওপর নৃশংস হামলা এবং ব্যাপক নাশকতা ঘটেছে। এর পেছনে রয়েছে দেশি-বিদেশি শক্তিশালী হাত। সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, কোটা সংস্কারের বিষয়টি মাসের পর মাস আদালতে ফেলে রাখা ঠিক হয়নি। শুরুতে আন্দোলনকারীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা উচিত হয়নি। সরকারের একাধিক মন্ত্রীর অতিকথনে ভুল বার্তা তৈরি হয়েছিল। সরকার যখন আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়েছিল তখন আন্দোলন আর ছাত্রদের হাতে ছিল না।

ব্যাপক নাশকতার বিষয়ে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ছাত্রদের আন্দোলন যখন তুঙ্গে ছিল তখন সরকাবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মোমেন্টামকে কাজে লাগাতে চেয়েছে। তারা নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচার করেছে যে, এত বড় মোমেন্টাম আর পাওয়া যাবে না। তারা সব স্তরেই মোমেন্টামকে কাজে লাগাতে চেয়েছে। সুযোগ সন্ধানীরা ধাপে ধাপে আন্দোলনকারীদের মাঝে ঢুকেছে। শুরুতে খাবার এবং পানি দিয়ে সহায়তা করেছে। পরে টাকা-পয়সা ছড়িয়েছে। মমতাময়ী মায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন কোনো কোনো নেত্রী।

সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি খাতে লোকজন নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য এক হয়ে কাজ করায় পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটে। আন্দোলনে ছাত্র এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও যুক্ত হয়েছিলেন। নানা কারণে ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ থাকায় যানবাহন চালকরাও রাস্তায় নেমেছিলেন। থানা পুলিশের প্রতি ক্ষোভ থেকে রাস্তায় নেমেছিলেন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও। প্রলোভন দেখিয়ে আন্দোলনে নামানো হয়েছিল বস্তিবাসীসহ নিম্ন আয়ের মানুষদের। বিহারিদের আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন বিদেশিরাও। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে-আন্দোলনে যুক্ত ছিল আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের একাংশও। কারণ, তারা স্থানীয় পর্যায়ে বর্তমান নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা কোনো পদ-পদবি পাচ্ছিলেন না। নানা করণে তারা ছিলেন বঞ্চিত অবস্থায়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, নাশকতায় কার কী ভূমিকা ছিল সবই আমরা বের করেছি। যার যতটুকু অপরাধ তাকে ততটুকু শাস্তি ভোগ করতে হবে। যারা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি চায় না, তারাই আন্দোলনের নামে নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা সবাইকেই একে একে আইনের আওতায় আনব।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT