রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজানে দান-সদকা বাড়িয়ে দিন

প্রকাশিত : ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ, ১৭ মার্চ ২০২৪ রবিবার ১৪০ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

‘যদি তোমরা দান প্রকাশ্যে করো তবে তা উত্তম; আর যদি তা গোপনে করো এবং অভাবীদের দাও, তবে তা তোমাদের জন্য শ্রেয়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের মন্দগুলো মোচন করে দেবেন। তোমরা যা করো, আল্লাহ তা অবগত আছেন।’ (সূরা বাকারা-২৭১)।

রমজান মাস দান-সদকার মাধ্যমে অধিক সওয়াব অর্জনের মাস। রমজান দয়া ও করুণার মাস। এ মাসে রোজাদার উপবাস থাকার মাধ্যমে অভাবী মানুষের প্রতিদিনকার দুঃখগুলো অনুভব করার চেষ্টা করেন। ক্ষুধা ও পিপাসায় নিজেকে কষ্ট দিয়ে সহমর্মী হন গরিব দুঃখী মানুষের প্রতি।

সিয়াম সাধনা মানুষকে দানশীলতা, বদান্যতার শিক্ষা দেয়। মহান আল্লাহ এ মাসে মানুষকে রহমত করে অন্যের প্রতি দয়া ও রহমতের শিক্ষা দিয়েছেন। করুণা ও দয়ার উপদেশ দিয়েছেন।

হাদিসে এসেছে-‘নবিজি (সা.) এমনিতেই অধিক পরিমাণে দান করতেন। যখন থেকে জিবরাইল (আ.) তাঁর কাছে আসা শুরু করেন, তখন থেকে মাহে রমজানে তিনি প্রবহমান বাতাসের মতো উন্মুক্ত হস্তে অধিকতর দাতা হয়ে যেতেন।’

হজরত আনাস (রা.) আরও বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)কে জিজ্ঞেস করা হলো, সবচেয়ে উত্তম সদকাহ কী? তিনি বললেন, ‘রমজান মাসের সদকা।’ হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত-রাসূলুল্লাহ (সা.) পবিত্র রমজান মাসে বিপুল পরিমাণে দান করতেন। (সুনানে তিরমিজি-২৩৫১)।

হজরত আনাস (রা.) বলেন, ‘নবি করিম (সা.)-এর চেয়ে বেশি দানশীল আমি আর কাউকে দেখিনি।’ (সহিহ মুসলিম-১৮৪২)।

দানশীলতা সম্পর্কে হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত আছে-‘আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, তুমি দান করতে থাকো, আমিও তোমাকে দান করব।’ (সহিহ বুখারি-১৬৩১)। আমরা স্বভাবতই কমবেশি দান করে থাকি। কখনো দানের জন্য একটি মোক্ষম সময়ও আমরা অনুসন্ধান করি। সেই সেরা সময়টি হলো রমজান।

রমজানের পবিত্র আবহে দানের বিষয়টি সম্পূর্ণই আলাদা। এর তাৎপর্য নিঃসন্দেহে অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি। তাই প্রিয় নবিজি (সা.) এ মাসে বেশি দান করতেন এবং দানে উৎসাহিত করতেন।

আমাদের সমাজে এমন অনেক অসহায়-নিঃস্ব মানুষ আছেন, যারা সেহরি ও ইফতারে সামান্য খাবার জোগাড় করতেও হিমশিম খান। বছরের অন্য সময় কোনোভাবে চলে গেলেও বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে তারা আরও দুর্ভোগ ও দুর্দশায় আছেন। অনেক মানুষ লজ্জায় মানুষের কাছে চাইতেও পারে না।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাদের যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় করো। অন্যথায় বলবে, হে আমার রব, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলেন না কেন? তাহলে আমি দান-সদকা করতাম এবং ভালো লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’ (সূরা মুনাফিকুন-১০)।

তাই বছরের অন্য মাসগুলোর তুলনায় এ মাসে অধিক দান-সদকা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। নবিজির দুয়ারে এসে কেউ খালি হাতে ফিরে যেত না।

মহানবি (সা.) এ মাসকে ‘শাহরুল মুওয়াসাত’ বা সহমর্মিতার মাস নামে অবিহিত করেছেন। যে লোক শুধু প্রথাগত উপবাস করে। মাহে রমজানেও যে দানশীলতা ও বদান্যতার মাধ্যমে সহমর্মিতা ও সহানুভূতির চর্চা করে না, তার উপবাসকে প্রকৃত পক্ষে সিয়াম সাধনা বলা যায় না।

মাহে রমজানে উপবাসের সঙ্গে মানবতার সেবায় সাধ্যমতো দান-সদকা করা হলো প্রকৃত সিয়াম সাধনা। আল্লাহতায়ালাই একমাত্র তাওফিকদাতা।

লেখক : মহাপরিচালক, জামিয়া আরাবিয়া নুরুল ইসলাম, চানপাড়া, উত্তরখান, ঢাকা

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT