সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিপিং সেক্টরে নতুন উদ্বেগ জলদস্যুদের অপতৎপরতা

প্রকাশিত : ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ, ১৪ মার্চ ২০২৪ বৃহস্পতিবার ১০৩ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে সোমালি জলদস্যুরা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অপতৎপরতায় সমুদ্রযাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার জলদস্যুরা ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দখল হওয়ার পর আন্তর্জাতিক শিপিং সেক্টরে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের দুটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে প্রায় ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। মোগাদিসু থেকে প্রায় ৬০০ নটিকেল মাইল দূরে চট্টগ্রামভিত্তিক এসআর শিপিংয়ের মালিকাধীন জাহাজটি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দস্যুরা। জাহাজের ২৩জন নাবিককে তারা জিম্মি করেছে।

গত মাসে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থা থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল-হুথি বিদ্রোহীদের হামলায় লোহিত সাগরে অস্থিরতা দেখা দেওয়ার সুযোগে সোমালি জলদস্যুরা সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। এমন আশঙ্কার মধ্যে এমভি আবদুল্লাহ দস্যুদের কবলে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী- ডিসেম্বরের পর থেকে সোমালিয়ার সমুদ্র উপকূলে এটাই প্রথম দস্যুতা। এর আগে ১৪ ডিসেম্বর সোমালি জলদস্যুরা বুলগেরিয়ার মালিকানাধীন ‘রুয়েন’ নামের বাল্ক ক্যারিয়ার ছিনতাই করেছিল। এছাড়া ‘লিলা নরফোক’ নামের একটি জাহাজও তারা আটক করেছিল।

শিপিং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হুথি বিদ্রোহীদের তৎপরতায় ডিসেম্বর থেকে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশ্বের বড় বড় শিপিং কোম্পানি লোহিত সাগরের রুট পরিবর্তন করে আফ্রিকার ভেতর দিয়ে ঘুরপথে জাহাজ পরিচালনা করছে। এতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাহাজ ভাড়া প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ২০১০ সালে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’ জলদস্যুদের কবলে পড়ে। নানামুখি তৎপরতার পর প্রায় ১০০ দিনের মাথায় জাহাজের নাবিকদের মুক্ত করা সম্ভব হয়। এরপর তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ওই সময় সোমালি জলদস্যুদের অপতৎপরতা বেড়ে গিয়েছিল। এরপর আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থাগুলোর নানা উদ্যোগে তা অনেকটাই কমে আসে। সম্প্রতি এ তৎপরতা আবার বেড়েছে। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি জানান, সোমালিয়া একটি দরিদ্র দেশ। দেশটির দস্যুরা সাধারণত মুক্তিপণের জন্য জাহাজ ছিনতাই করে। তারা নাবিকদের ক্ষতি করে না।

শিপিং সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পতাকাবাহী ৯০টি সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে আটটি কনটেইনারবাহী। বাকিগুলো বাল্ক ক্যারিয়ার। চট্টগ্রামভিত্তিক এসআর শিপিংয়ের ২৩টি জাহাজ আছে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজগুলো বিশ্বের বিভিন্ন রুটে ভাড়ায় চলাচল করছে। এর মধ্যে অনেকগুলোই বিভিন্ন কোম্পানির কাছে দীর্ঘমেয়াদে ভাড়া (চার্টার) দেওয়া।

সংঘবদ্ধ সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করার মতো প্রস্তুতি সমুদ্রগামী জাহাজগুলোতে থাকে না জানিয়ে সৈয়দ মোহাম্মদ আরফি আরও বলেন, নাবিকদের সঙ্গে নামেমাত্র আগ্নেয়াস্ত্র থাকে। তা দিয়ে ছোটখাটো বিপদ মোকাবিলা করা যায়। কিন্তু একসঙ্গে ৪০-৫০ জনের মতো সশস্ত্র জলদস্যুকে মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা থাকে না।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT