সামান্য ইফতার কিনতেই হিমশিম খেটে খাওয়া মানুষের
প্রকাশিত : ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ, ২৮ মার্চ ২০২৩ মঙ্গলবার ১১৪ বার পঠিত
সন্ধ্যার একটু আগে শাহবাগে ফুটপাতের একটি ইফতার পণ্যের দোকানে আসেন রিকশাচালক মোসলেউদ্দিন। দুটি ছোট আলুর চপ আর দুটি পেঁয়াজু কেনার পর দোকানিকে ১০ টাকার ছোলা দিতে বলেন। কিন্তু দোকানি সাফ জানিয়ে দেন, ১০ টাকার ছোলা নেই। কমপক্ষে ২০ টাকার কিনতে হবে। মোসলেউদ্দিন ছোলা না কিনে পাশের দোকান থেকে ১০ টাকার মুড়ি কিনে ফুটপাতে বসে ইফতারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। পাশে একটা পানির বোতল।
জিজ্ঞেস করতেই মোসলেউদ্দিন বলেন, সারা দিন রাস্তায় জ্যাম থাকে। রোজায় জ্যাম আরও বেড়ে যায়। হাফবেলায় যা কামাই হয় তাতে আসলে ২০-৩০ টাকার বেশি ইফতারের পেছনে ব্যয় করতে পারি না। তাছাড়া রাতের খাবার, সেহরির খাবারের পাশাপাশি ঘরভাড়া আছে। মাস শেষে বাড়িতে টাকা পাঠানো লাগে। সবকিছুর দাম এত বেশি যে, মোটামুটি খাওয়ারও উপায় নেই। যেসব রিকশাওয়ালা রোজা রাখেন না তাদের সবার একই দশা।
সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নিম্ন আয়ের বিশেষ করে যারা দিন আনে দিন খান তাদের অনেকেই ভালোভাবে ইফতার করতে পারেন না। কাওরান বাজারে মিনতির কাজ করেন রাইসুল, হামিদ, আবুলসহ আরও কয়েকজন। ইফতার নিয়ে জিজ্ঞেস করতেই তারা বললেন, আমাদের মধ্যে সবাই রোজা রাখে না, কয়েকজন রাখে। তবে রোজা রাখুক বা না রাখুক যারা রোজা রাখে তাদের সঙ্গে সবাই ইফতার করে। তারা ইফতারিতে কী খেয়ে থাকেন জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ইফতারের জন্য আমরা চাঁদা তুলি। একটু শরবত আর মুড়ি ভর্তা হলেই আমরা খুশি।
কাওরান বাজারেই কথা হয় বাসের হেলপার বাদশা মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, হেলপারি করে রোজা রাখা কষ্ট। তবে আমি মাঝে মধ্যে রাখি। ইফতার করার কোনো ঠিক-ঠিকানা থাকে না। অনেক সময় জ্যামে বসে থাকি। তখন শুধু একটু পানি বা ফুটপাতের দোকান থেকে আলুচপ, পেঁয়াজু বা বেগুনি কিনে খাই। সেগুলোও তো এখন বেশি করে খাওয়ার সুযোগ নেই। পিস ১০ টাকা রাখে। আবার কেউ পাঁচ টাকা রাখে। যেগুলো পাঁচ টাকা সেগুলো সাইজ একেবারেই ছোট।
এলিফ্যান্ট রোডের রেইবো গলির উলটো দিকে বসে নানারকম ইফতার সামগ্রীর দোকান। রাশেদুল নামে এক দোকানি বলেন, আলুচপ, বেগুনি, পেঁয়াজুর দাম ১০ টাকার কম রাখলে লাভ থাকে না। তেল, বেসন, ডাল, পেঁয়াজ, আলু, বেগুন কোনোটার দামই তো কম নয়। যে বেগুন পাল্লা কিনেছি ২০০ টাকায়, সেই বেগুনের পাল্লা এখন ৩০০-৩৫০ টাকা। দেশে তো বেগুনের উৎপাদন কম না। হঠাৎ করে কী হলো যে, বেগুনের দাম বেড়ে গেল?
ধানমন্ডি ১ ও ২ নং রোডের মাঝামাঝি রাস্তার পাশে ছোট ছোট বেশ কয়েকটি দোকানে ইফতারসামগ্রী বিক্রি হয়। এখানে মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ, রিকশা-ভ্যানচালক এবং সাধারণ মানুষ ইফতারি পণ্য কেনেন। এক দোকানি বলেন, আমরা চেষ্টা করি এ মানুষগুলোকে তুলনামূলক কম টাকায় ইফতার পণ্য সরবরাহ করতে। মুড়ি মাখিয়েও বিক্রি করি। ৩০-৪০ টাকার মধ্যেই তারা ইফতার সারতে পারেন।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।