বুধবার ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরাসরি চাঁদে আঘাত হানতে পারে গ্রহাণু, মহাজাগতিক বিস্ফোরণের শঙ্কা

প্রকাশিত : ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ, ২৯ জুলাই ২০২৫ মঙ্গলবার ৬৯ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে ছুটে যাবে ভয়ংকর এক গ্রহাণু (অ্যাস্টেরয়েড)। গ্রহাণুটির নাম ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’। এর আকার প্রায় ১৫ তলা ভবনের সমান, অর্থাৎ প্রায় ২০০ ফুট চওড়া। পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে গেলেও এটি সরাসরি চাঁদের বুকে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, যদি এই গ্রহাণুটি সত্যিই চাঁদের গায়ে আছড়ে পড়ে, তাহলে এটা হবে এই দশকের সবচেয়ে নাটকীয় ও দৃশ্যমান মহাজাগতিক ঘটনা—যা সাধারণ টেলিস্কোপ দিয়েও খালি চোখে দেখা যাবে। বিশাল এই সংঘর্ষে চাঁদের পৃষ্ঠে এক কিলোমিটার চওড়া গর্ত তৈরি হতে পারে এবং ঘটতে পারে বিশাল এক বিস্ফোরণ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহাজাগতিক এই ঘটনা ঘটতে পারে ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর। নাসার সর্বশেষ হিসাব বলছে, এর চাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে প্রায় ৪.৩ শতাংশ।

তবে আশঙ্কার কিছু নেই—এই ধাক্কা চাঁদের কক্ষপথে বা পৃথিবীর ওপর সরাসরি কোনো প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু এতে চাঁদের কিছু ধ্বংসাবশেষ (মেটিওর) বুলেটের মতো গতিতে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসতে পারে। যদিও বেশিরভাগ টুকরো বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পুড়ে যাবে, তবে কিছু অংশ স্যাটেলাইট ও জিপিএস, ইন্টারনেট, আবহাওয়া পূর্বাভাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রযুক্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

নাসার প্ল্যানেটারি ডিফেন্স ইউনিটের মলি ওয়াসার জানান, এই গ্রহাণুটি এখন সূর্যের চারপাশে ঘুরছে এবং এর গতি ও কক্ষপথ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে। এর আগে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা ধরা হয়েছিল ৩.৮ শতাংশ, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৩ শতাংশে।

নাসা ছাড়াও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং আরও কিছু আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থা এখন এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যদি ‘নিউমির’ নামের ইনফ্রারেড টেলিস্কোপটি আগে থেকেই সচল থাকত, তাহলে এই গ্রহাণুটি আরও এক মাস আগে শনাক্ত করা যেত। বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হয়ে থাকবে।

এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, মহাকাশে আমাদের অবস্থান কতটা অনিশ্চিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ। পৃথিবী সরাসরি এই সংঘর্ষের শিকার না হলেও, এটি হতে পারে এক যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের সুযোগ—যা গ্রহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা যাচাই করার ক্ষেত্রেও একটি পরীক্ষা হয়ে উঠতে পারে।

গ্রহাণুটি যদি শেষ পর্যন্ত চাঁদের গায়ে আঘাত হানে, তাহলে তা হবে একদিকে মহাজাগতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য দৃশ্য, অন্যদিকে পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে বেড়ানো উপগ্রহগুলোর জন্য বড় ধরনের প্রযুক্তিগত হুমকি। ফলে ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর দিনটি এখন থেকেই মহাকাশপ্রেমীদের ক্যালেন্ডারে লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করে রাখাই যথাযথ।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT