মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মৎস্য খামারি যখন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৯:১৯ পূর্বাহ্ণ, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার ১০ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

শাহরিয়ার আলম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মেয়াদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। পেশাগত জীবনে তার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কোনো পড়াশোনা নেই। এ বিষয়ে ছিল না তার কোনো ডিগ্রি বা পূর্ব অভিজ্ঞতা। তার পরও তিনি কীভাবে দেশের দ্বিতীয় প্রধান কূটনীতিক ছিলেন তা এক বিস্ময়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি মন্ত্রিত্ব বাগিয়েছিলেন। প্রতিমন্ত্রী হয়ে একদিকে যেমন তিনি লাগামহীন দুর্নীতির লাইসেন্স পান তেমনি হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তার অবৈধ সম্পদ বৈধ করতে তিনি অদ্ভুত কূটকৌশলের আশ্রয় নেন। বেশ কয়েকটি মাছের খামার করে সেখান থেকে তিনি আয় দেখান কোটি কোটি টাকা। বাংলাদেশের আয়কর আইন অনুযায়ী, কৃষি, মৎস্যসহ বেশ কিছু খাত আয়কর মুক্ত। এসব খাতে বিনিয়োগ ও মুনাফা আয়কর রেয়াতের আওতায় রয়েছে। চতুর শাহরিয়ার এ সুযোগ কাজে লাগান। রাজশাহী, লালমনিরহাট এবং ঠাকুরগাঁওয়ে শাহরিয়ার আলম গড়ে তোলেন কৃষি ও মৎস্য খামার।

ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাগানবাড়ি। ২৫ বিঘার এ বাগানবাড়ির নাম নর্থ বেঙ্গল অ্যাগ্রো ফার্মস লিমিটেড। স্থানীয়দের অভিযোগ, কেনা জমির আড়ালে জমি জবরদখল করে বাগানবাড়ি করেছেন তিনি। অন্যের পৈতৃক সম্পদ ও সরকারি সম্পত্তিও বাদ যায়নি। প্রভাব খাটিয়ে ফার্মের নামে কয়েক কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।

ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাগানবাড়ি। ২৫ বিঘার এ বাগানবাড়ির নাম নর্থ বেঙ্গল অ্যাগ্রো ফার্মস লিমিটেড। স্থানীয়দের অভিযোগ, কেনা জমির আড়ালে জমি জবরদখল করে বাগানবাড়ি করেছেন তিনি। অন্যের পৈতৃক সম্পদ ও সরকারি সম্পত্তিও বাদ যায়নি। প্রভাব খাটিয়ে ফার্মের নামে কয়েক কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।

লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায়ও ২০১৭ সালে ১৩ বিঘা জমি কেনেন শাহরিয়ার আলম। সেখানেও গড়ে তোলা হয়েছে খামারবাড়ি। বিভিন্ন দামি সবজি, মাছসহ নানা ধরনের ফসলের চাষাবাদ করা হচ্ছে সেখানে। মূলত শাহরিয়ার আলমের ছোটবেলা কেটেছে লালমনিরহাট জেলায়। সেই সুবাদে সেখানে জমি কিনে খামারবাড়ি গড়ে তুলেছেন। তার দীর্ঘদিনের এপিএস সিরাজের বাড়িও এই কালীগঞ্জ উপজেলায়। এ ছাড়াও রাজশাহীর চারঘাটে শাহরিয়ার আলম গড়ে তোলেন খামার।

এসব খামার ছিল শাহরিয়ারের বহুমাত্রিক জালিয়াতির অংশ। একদিকে যেমন, এসব খামারে অতিরিক্ত মুনাফা দেখিয়ে তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বৈধ করতেন। কালো টাকা সাদা করার পাশাপাশি, এসব খামার দেখিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে স্বল্পসুদে ঋণ নিতেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি এবং মৎস্য খামারের জন্য স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ব্যবস্থা আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শাহরিয়ার আলম ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়াও রয়েছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংক। এসব ঋণের কোনো টাকাই শোধ করেনি শাহরিয়ার। বর্তমানে তিনি পলাতক থাকায় ঋণের টাকা উদ্ধারের কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, সাবেক প্রতিমন্ত্রীর যে তিনটি খামার রয়েছে, সেগুলোর মূল্য ২৫ কোটি টাকার বেশি নয়। অথচ এসব খামার দেখিয়ে তিনি ঋণ নিয়েছেন ৩১২ কোটি টাকা। সুদ-আসলে যা এখন প্রায় সাড়ে তিন শ কোটি টাকার কাছাকাছি। শুধু তাই নয়, এসব খামারের বেশির ভাগ জমিই ছিল অন্যের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করা। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এসব জমি দখল করা হয়েছিল। পাঁচ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর, জমির আসল মালিকরা তাদের জমির দখল নিয়ে নেয়। যারা এখনো নিতে পারেনি তারা দখল গ্রহণের চেষ্টা করছে। এতে অবশ্য শাহরিয়ার আলমের কিছুই যায় আসে না। কারণ ভুয়া খামার দেখিয়ে ব্যাংক লুটের টাকা বিদেশে পাচার করে সেখানে নির্বিঘ্নে আছেন এই দুর্নীতিবাজ।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT