বুধবার ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৭শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোটারদের কেন্দ্রে আনাই চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত : ০৭:০০ পূর্বাহ্ণ, ৫ মে ২০২৩ শুক্রবার ১৫০ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন কেবল বর্জনই নয়, দলীয় সমর্থক ও ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে না যান সেজন্য বিএনপি প্রচারণা চালাবে। চট্টগ্রামের উপনির্বাচনের মতো বরিশালেও ভোট প্রদানের হার শতকরা ১৫ ভাগের নিচে রাখার টার্গেট তাদের।

এর মাধ্যমে তারা দেখাতে চান-সাধারণ মানুষ নির্বাচন বর্জন করেছেন। সিটি নির্বাচনকে তারা সরকারের পাতানো খেলাও বলছেন। লাঙ্গল ও হাতপাখার প্রার্থীকে আওয়ামী লীগের বিটিম বলে মন্তব্য তাদের। এমন পরিস্থিতিতে ১২ জুনের সিটি নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে আনাই লাঙ্গল ও হাতপাখার প্রার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন অনেকে।

এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিমকে বরিশালের মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ২৭ এপ্রিলের ওই ঘোষণার পাঁচ দিন পর বুধবার মেয়র পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তার ছোট ভাই মাওলানা ইসাহাক মো. আবুল খায়ের।

মাওলানা ইসাহাক ইসলামী আন্দোলনের বরিশাল জেলা সভাপতি। বড় ভাইকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর ছোট ভাইয়ের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। হাতপাখার মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করিম বলেন, ভোটের মাঠে রাজনীতির নানা খেলা চলে। এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা আমাদের সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে দেখছে। কোনো কারণ ছাড়াই আমার মনোনয়নপত্র বাতিল হতে পারে। নির্বাচনের মাঠে আমরা থাকব, লড়াইয়ের শেষ পর্যন্ত থাকব।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নৌকার ভোটাররা ঠিকই কেন্দ্রে যাবেন। তবে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে নেওয়া না গেলে লাঙ্গল-হাতপাখার জয়ী হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। কেননা বিএনপির ভোটারদের ওপরই নির্ভর করবে জয়-পরাজয়। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর জাহিদুল কবির বলেন, এ নির্বাচনে বিএনপি যাবে না।

এমনকি কাউন্সিলর পদেও আমাদের কেউ প্রার্থী হবেন না। নির্বাচন কেবল বর্জনই নয়, বিএনপি সমর্থিত ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে না যায় সে রকম কর্মসূচি নিয়ে আমরা মাঠে থাকব। চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে মাত্র ১৪ দশমিক ৫৫ ভাগ ভোট পড়েছে।

এটা কি হাস্যকর নয়! বিএনপি নেতা জাহিদুল কবির জানান, চট্টগ্রামের নির্বাচন প্রমাণ করেছে শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগের ভোট চুরি নির্বাচন বর্জন করেছে। বরিশালেও আমরা একইভাবে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত করব।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু বলেন, এটা তো পাতানো নির্বাচন। নৌকার বাইরে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হাতপাখা আর লাঙ্গল তো নৌকারই অংশ। জাতীয় পার্টি আর ইসলামী আন্দোলন তো আওয়ামী লীগের বিটিম।

তিনি বলেন, কদিন আগেও চরমোনাইর পির বলেছিলেন-বর্তমান সরকারের অধীনে তারা কোনো নির্বাচনে যাবেন না। তাহলে এখন তারা কীভাবে সিটি নির্বাচন করছেন? আবার বলছেন-জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে তারা (ইসলামী আন্দোলন) প্রার্থী দেবেন। নৌকার সঙ্গে নির্বাচনি লড়াইয়ের নাটকে নেমেছে লাঙ্গল আর হাতপাখা। তাদের আসল লক্ষ্য বর্তমান সরকারের অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া।

সিটি নির্বাচন ঘিরে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। নগরের ২৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা এনজিও কর্মী আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমি আমার ভোট দিতে পারিনি। আমার ভোট আগেই হয়ে যায়। তাই এবার ভোট দিতে যাব না।

২১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা গৃহবধূ মাহমুদা খাতুন বলেন, ভোট তো উঠে গেছে দেশ থেকে। শুধু শুধু কেন্দ্রে গিয়ে কী লাভ?

বরিশাল নাগরিক পরিষদের সদস্য সচিব ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ২০০৩, ২০০৮ আর ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী-বরিশালে বিএনপির ভোট মোট ভোটের শতকরা ৬০ ভাগ। তাই এ নির্বাচনে জিততে হলে লাঙ্গল-হাতপাখাকে বিএনপির ভোটের ওপর নির্ভর করতে হবে। বিএনপি এবার কাউন্সিলর পদেও প্রার্থী দিচ্ছে না। এ ৬০ ভাগ ভোটার কেন্দ্রে না গেলে বিনা লড়াইয়ে নৌকা জিতে যাবে। কারণ নৌকার ভোটাররা তো ঠিকই কেন্দ্রে যাবে। অপরদিকে অন্য মেয়র প্রার্থীদের জামানত হারাতে হবে। এবারের নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে নামা প্রার্থীদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে নেওয়া।

সাংবাদিকদের সঙ্গে নৌকা প্রার্থীর সৌজন্য সাক্ষাৎ : নির্বাচন উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছন আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বরিশাল প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে তিনি এ সাক্ষাৎ করেন।

মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, আমি একটি সুন্দর বরিশাল নগরী গড়ে তুলতে চাই, যা বিগত দিনে হয়নি। বর্তমানে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন কর্মযোগ্য চলছে তা থেকে বরিশালবাসী বঞ্চিত। বরিশাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী নাছির উদ্দিন বাবুলের সভাপতিত্বে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেনসহ নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি নগরীর সদর রোড থেকে শুরু করে হাসপাতাল রোড পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এ সময় তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT