মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১লা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ চাকসু নির্বাচন: দ্বিতীয় দিনে ১৪১ জনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ◈ নারায়ণগঞ্জে ফ্ল্যাটে স্বামী-স্ত্রী ও চার বছরের শিশুর লাশ ◈ ‘সরকারি বেতন-রেশন খাস না, গুলি করবি না কেন?’ ◈ প্রশাসনের ১৭ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন দূতাবাসে বদলি, তালিকা প্রকাশ ◈ একদিনে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ◈ টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস ◈ সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ফ্ল্যাট-জমি জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ ◈ শুধু নিন্দা জানিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানো সম্ভব নয়: মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ◈ নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীরও পদত্যাগ চায় জেন-জি ◈ গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী বেছে নিল নেপালের জেন-জিরা

বড় জাতির কাছে সম্মান পেলাম না

প্রকাশিত : ০৭:৩০ পূর্বাহ্ণ, ২৬ মার্চ ২০২৩ রবিবার ১১২ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

সাধারণ মানুষ হিসেবে আদিবাসী মানুষ হিসেবে কয়েকটি কথা বলতে চাই। ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে একটি নতুন ধারা যুক্ত হলো। ছয়ের দুইয়ের এই ধারায় বলা হলো, বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশি বলে পরিচয় দেবেন। আমি তো জনগণ তবে আমি তো গারো, তাহলে আমি কীভাবে বাঙালি বলে পরিচিত হব। আমি এটার কোনো অর্থ খুঁজে পাই না। এটা এমন অস্বীকৃতি এমন কঠিন… তবে এটা নিয়ে কোনো হইচই হয়নি। ২৩-এর ক ধারায় বলা হয়, রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি ক্ষুদ্র নৃজাতিসত্তা গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করবেন। একদিকে বলছেন জাতি হিসেবে বাঙালি, আবার তাদের বলছেন ‘উপজাতি’ ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ ‘সম্প্রদায়’ ইত্যাদি। বায়ান্ন বছরে এসে এখনও আমরা বাঙালি জাতির বাইরের কোনো জাতির পরিচয় স্বীকার করতে পারলাম না। আবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালে পঞ্চাশ জাতির নাম দিয়েছে।

তাদের বলা হচ্ছে, তফশিলে বর্ণিত আদিবাসী হিসেবে। এদেরকে নৃ গোষ্ঠী বলা হবে। এই যে কতরকমভাবে আমাদের পরিচয় বলা হচ্ছে। আবার এই সরকার নোটিশ জারি করে পরিচয়কেন্দ্রিক একটি শব্দ বলা বন্ধ করে দিয়েছে। স্বাধীনতার বায়ান্ন বছরে এসে এ কথাগুলো বললাম।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের একটি বই আছে বাংলাদশের নৃ বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা। এই বইয়ে বাংলাদেশে মাতৃভাষা পাওয়া গেছে ৪১টি। এরমধ্যে বাংলা উর্দু তেলেগু বাদে ৩৭/৩৮টি ভাষা আমার মতো গারো হাজং এরকম। সরকারের এই প্রতিষ্ঠান বলছে, ৪১টি মাতৃভাষার মধ্যে ১৪টি হারিয়ে গিয়েছে। আমার জানামতে আরও ২৫টি বিপন্ন। এটাও হারিয়ে যাবে। অনেক অনেক এগিয়েছি আমরা কিন্তু এই তথ্যগুলোও সত্য।

পাহাড়ি মানুষের কাছে মাথাপিছু আয় একটি নিষ্ঠুর তামাশার মত। গত ১৫ বছরের আগে এত তাচ্ছিল্য আমি দেখিনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ২৫ বছর আগে হয়েছিল। অনেক কথা হয়েছিল। এখন তো কথাই বলা যাচ্ছে না। চুক্তির কোনো অনুষ্ঠানে সরকারের কাউকে পাওয়াই যাচ্ছে না। ‘আদিবাসী’ দিবসগুলোতেও অন্তত ‘আদিবাসী’ অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিদের এই আমলেও পাওয়া যেত, এখন আর কাউকে পাওয়া যায় না। অবাঙালী অঞ্চলের মানুষের মূল্য একেবারে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আমরা এখন ফোন করতে পারি না। ফোন করলে সৌজন্যতাবোধ পাই না।

এখন আসি উন্নয়নে। মধুপুরে জাতীয় পার্ক, পার্বত্য চট্টগ্রাম, গারো পাহাড়, সুন্দরবন বলেন, আমাদের অঞ্চলের নদীগুলো বলেন। বুড়িগঙ্গা তুরাগ বাদ দেন, আমাদের নদীগুলো যা মেঘালয় থেকে নেমে আসছে। ওইগুলোতে কিছু স্বচ্ছ পানি ছিল। এখন সোমেশ্বরী, মহাটেউ, বোগাই নদীগুলো শেষ। আমার ধারণা পাঁচ দশ বছর পর এসব নদী আর থাকবে না। আমাদের কাছে এ ধরনের উন্নয়ন কাম্য ছিল না। আমরা আদিবাসীরা দিনদিন অসহায় হয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, জাতিগত বৈচিত্র্য, বহুত্ববাদকে সম্মান দেওয়া উদযাপন করা এ ধারণাই তৈরি হয়নি। সংবিধানে বলা হলো রাষ্ট্রভাষা বাংলা। তবে বাংলার বাইরে অন্য জাতির ভাষাগুলোর মর্যাদার কথা নেই। স্বাধীনতার বায়ান্ন বছরে এসে অন্য জাতির ভিন্ন জাতির মানুষকে প্রান্তিকীকরণের প্রক্রিয়া চলছে। বৃহৎ জাতি অন্য জাতির সম্মান মর্যাদা দিতে পারলো না। এটা দুঃখজনক।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT