রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফসলি জমি ধ্বংসের মহোৎসব

প্রকাশিত : ০৯:০৭ পূর্বাহ্ণ, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ শুক্রবার ১১২ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

একটি স্বয়ংক্রিয় ইট তৈরির কারখানা মানিকগঞ্জের ঘিওর ও শিবালয় উপজেলার হাজারো কৃষকের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত ২ লাখ ইট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কারখানাটিতে মাটির জোগান দিতে ধ্বংস করা হচ্ছে শত শত বিঘা ফসলি জমি। এ মহোৎসবে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীও। জানা যায়, এ পর্যন্ত অন্তত ১০ গ্রামের প্রায় কয়েক শ বিঘা তিন ফসলি জমির মাটি কেটে এ কারখানায় বিক্রি করেছেন তারা। অভিযোগ আছে, জমির মালিকদের প্রলোভন, ভয়ভীতি কিংবা কূটকৌশল খাটিয়ে রাতের অন্ধকারে মাটি কেটে নেন তারা। সম্প্রতি এলাকার কৃষকরা ফসলি জমির মাটি কাটতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তে একাট্টা হয়েছেন এবং মামলা করেছেন ‘মাটিখেকো’ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ইট তৈরির কারখানাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ঘিওর উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশও কেন কার্যকর করা হচ্ছে না, তা রহস্যজনক।

জানা যায়, কারখানাটি ২০১৮ সালে ছোট আকারে চালু করা হয়। শুরুর দিকে কারখানার আশপাশের জমি কিনে সেখান থেকে মাটি কেটে ইট তৈরির কাজ চালানো হতো। পরবর্তী সময়ে কারখানার পরিসর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে মাটির চাহিদা। আর তখনই শুরু হয় ফসলি জমি ধ্বংসের মহোৎসব। জানা যায়, ডাম্প ট্রাকে মাটি বহনকালে বিভিন্ন ব্যক্তির জমির ফসলও নষ্ট করা হয়েছে; ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্মাণাধীন একটি সড়ক। সড়কটির বেশ কয়েকটি জায়গায় ফাটলও ধরেছে। অতিরিক্ত ওজনের মাটিবাহী ট্রাক বেইলি ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচলের কারণে ব্রিজও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া মাটিবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একটি বেড়িবাঁধও। বেড়িবাঁধ রক্ষায় পাউবোর একজন উপসহকারী প্রকৌশলী ঘিওর থানায় মামলা করেছেন।

কেবল মানিকগঞ্জেই নয়, দেশেই বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনা ঘটছে। কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবেই ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে একদিকে কৃষিজমির পরিমাণ কমছে, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে মাটির উর্বরতা শক্তিও। এ অবৈধ কাজ চলতে থাকলে ফসলের উৎপাদনে কী ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি হবে, তা সহজেই অনুমেয়। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন অনুযায়ী আবাসিক, সংরক্ষিত ও বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষিজমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। অথচ এ আইন লঙ্ঘন করেই চলছে অবৈধ ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম। এগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা সত্ত্বেও কেন সুফল মিলছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। যেহেতু অবৈধ ইটভাটার কারণে দেশের বায়ু, মাটিসহ প্রকৃতির বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে; সেহেতু এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। ইটভাটার কারণে যাতে দেশের কৃষি, জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতির কোনো ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে যারা আইন অমান্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT