ফরিদপুর মেডিকেলে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় নার্সকে চড়, পাল্টা মারধর স্বজনকে
প্রকাশিত : ১০:১১ অপরাহ্ণ, ৭ এপ্রিল ২০২৩ শুক্রবার ১২৭ বার পঠিত
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ৩ এপ্রিল রাতে ভর্তি হন হৃদরোগে আক্রান্ত মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার চৌগাছা গ্রামের লালন বিশ্বাসের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫৫)। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের সিসিইউতে তিনি মারা যান। তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, ভুল ওষুধের প্রয়োগের কারণে মৃত্যু হয়েছে আনোয়ারা বেগমের। এ নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে সিসিইউতে কর্তব্যরত নার্সের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মৃতার ছোট ছেলের শ্যালক এক নার্সকে চড় দেন। এতে কর্তব্যরত নার্সরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে রোগীর ওই স্বজন ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরে মৃতের ছোট ছেলে অহিদুল ইসলামকে হাসপাতালের একটি কক্ষে আটকে নার্স ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা মারধর করেন। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে গেলে তাঁদের ছবি তুলতে ও ভিডিও ধারণে বাধা দেওয়া হয়।
অহিদুল ইসলামের স্ত্রী সোনিয়া আক্তারের দাবি, তাঁর স্বামীকে হাসপাতালের তিন তলার একটি কক্ষে আটকে মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে। যে নার্সকে চড় মেরেছিল, তাঁকে না আনলে অহিদুলকে হত্যারও হুমকি দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে আমি আমার ভাইকে হাসপাতালে ডেকে আনি। এর পর তাঁকেও ওই কক্ষে আটকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছানোর পরেও নির্যাতনকারী নার্স ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা শান্ত হননি। তাঁরা পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে আমার স্বামী ও ভাইকে মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মৃত রোগীর এক স্বজন নার্সকে চড় মারার কথা ছড়িয়ে পড়লে গোটা হাসপাতাল এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। ক্ষুব্ধ নার্সদের সঙ্গে যোগ দেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। এক পর্যায়ে নার্স ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা মৃত রোগীর ছেলেকে মারধর করে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে গেলে তাঁদের ছবি তুলতে ও ভিডিও ধারণে বাধা দেওয়া হয়। শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন কোনো ছবি ও ভিডিও করা হয়েছে কিনা।
ঘটনার পরপরই ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল হাসপাতালে আসেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকারও যান। পরে রাত ১২টার দিকে আটকে রাখা অহিদুল নামে রোগীর ছেলেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। আনোয়ারা বেগমের মৃত্যুর প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর লাশ নিয়ে তাঁর স্বজনরা হাসপাতাল ত্যাগে সক্ষম হন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে হাসপাতালের পরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘পুলিশ আসার পর যে ব্যক্তি নার্সকে মেরেছেন, তিনি ভুল স্বীকার করেন। এরপর বিষয়টির মীমাংসা হয়। রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় শোকে স্বজনদের এ ধরনের ক্ষোভের ঘটনা প্রায়ই হাসপাতালে ঘটে। এটি ধরলে অনেক কিছু; আবার না ধরলে কিছুই না।’
অতিরিক্ত এসপি সুমন রঞ্জন জানান, এরই মধ্যে উভয় পক্ষ নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ঘটনার সমাধান করেছে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
























