সোমবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রতীক পেয়েই আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় প্রার্থীরা

প্রকাশিত : ০৮:৩১ পূর্বাহ্ণ, ১০ মে ২০২৩ বুধবার ১৫১ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর কাউন্সিলর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঝে তাদের পছন্দের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয়।

নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করতে পারেন। সরেজমিন রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়-মেয়র, সংরক্ষিত এবং সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থক নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছেন। রিটার্নিং অফিসারের হাত থেকে প্রার্থীরা নিজ পছন্দের প্রতীকের চিঠি নিয়ে কার্যালয় ত্যাগ করেন। মেয়র পদে ৮ জনসহ ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত আসনে ৩২৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। এতে সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী রয়েছেন ৭৭ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ২৩৯ জন।

মেয়র পদে দলীয় প্রতীক ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত প্রতীক থেকে তাদের পছন্দের প্রতীক দেওয়া হয়েছে। একই প্রতীকের একাধিক প্রার্থীর দাবি থাকলেও এ ক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের দলীয় প্রতীক নৌকা, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন পেয়েছেন দলীয় প্রতীক লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান পেয়েছেন (হাত পাখা), জাকের পার্টির প্রার্থী মো. অলিউর রহমান রাজু আহমেদ ফুল, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন (ঘড়ি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম (রনি সরকার) বরাদ্দ পেয়েছেন (হাতি) প্রতীক। এদিকে সকালে মেয়র প্রার্থীরা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে কার্যালয় প্রাঙ্গণে (তাজউদ্দীন আহমদ অডিটোরিয়ামে) গণমাধ্যমের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বলেন, আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচনি পরিবেশ গড়ে তুলতে চেষ্টা করব। সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত একটি সিটি করপোরেশন গড়ে তুলতে চাই। সেই লক্ষে ২৫ তারিখ নির্বাচনে তাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, জনগণের সেবার যে কাজগুলো আছে, অধিকারগুলো আছে তা সুনিশ্চিত করার জন্য আমি আপনাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছি। এ সময় তিনি সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করে বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে একটি উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে আমি মিটিং করেছি। তাদের সঙ্গে উঠান বৈঠক, মতবিনিময়ের কাজ সম্পূর্ণ করেছি। এতে আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে আন্তরিকতার এক পার্সেন্টও কমতি ছিল না। আমরা আজ এখান থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করছি। নির্বাচনি আচরণ বিধি মেনে নির্বাচনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে প্রচারণা করবে।

প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আশা করি আমরা (লাঙ্গল) জয়ী হব। আমি নির্বাচিত হতে পারলে একটি সুন্দর সিটি করপোরেশন গড়ে তুলব। একটি সুন্দর নগরী হবে, মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। আমি শুধু জাতীয় পার্টির নেতা হিসাবে নয়, গণমানুষের লোক হিসাবে গাজীপুরের অনেক উন্নয়ন কাজ করেছি। স্বস্থ্য সচিব থাকাবস্থায় গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট বিভিন্ন হাসপাতাল নির্মাণে কাজ করেছি। সে হিসাবে আমি স্বতঃস্ফুর্ত মানুষের সমর্থন পাচ্ছি। নির্বাচনে স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, মানুষ নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়েছে। যেখানে যাই সেখানেই মানুষ বলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা! আমি আহ্বান জানাব, নির্বাচন কমিশনকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন তারা উপহার দেবে। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ নিশ্চিত বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় তাজউদ্দীন অডিটোরিয়ারে উপস্থিত হন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। তিনি রিটার্নিং অফিসারের হাত থেকে তার পছন্দের প্রতীক ঘড়ির চিঠি বুঝে নেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এ সময় তিনি বলেন, নগরবাসীর নিকট মেয়র পদে ঘড়ি প্রতীকে নিজের জন্য একটি ভোট চাচ্ছি। সবার সহযোগিতা কামনা করছি। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তার সমর্থনে অডিটোরিয়ামের বাইরে শত শত কর্মী-সমর্থক ঘড়ি ঘড়ি বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মায়ের সঙ্গেই ছিলেন। তিনি সবাইকে তার হয়ে মায়ের ঘড়ি প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়ে গত ৩ বছরে নগরবাসীর জন্য তার নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে জাহাঙ্গীর কতিপয় ব্যক্তির দ্বারা তিনি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও হয়রানির শিকার বলে দাবি করেন।

এদিকে ইভিএম নিয়ে সংশয় দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারদলীয় প্রার্থীকে লোক দেখানো নোটিশ নয়, গাজীপুরবাসী ২৫ মে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের মেয়র নির্বাচন করতে চায়। সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে কোমর ঠিক রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ইভিএম নিয়ে জনমনে যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে তা দূর করতে হবে।

অপরদিকে বিএনপিঘেঁষা স্বতন্ত্রপ্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি (হাতি) ও জাকের পার্টির প্রার্থী অলিউর রহমান (গোলাপ ফুল) প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নিজদের পক্ষে ভোট চেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন।

গাজীপুরে নৌকার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না-মায়া : আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, নির্বাচন বানচাল করার জন্য কিছু বিশ্বাসঘাতক ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু গাজীপুরে নৌকার বিজয় হবে, এই বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।

গাজীপুরে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই, গাজীপুরে আওয়ামী লীগ এক ও একাকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, একজন (জাহাঙ্গীর আলম) কিছু দিন আগেও ছিল হিরো, এখন সে হয়ে গেছে জিরো। যারা আওয়ামী লীগের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাদের খন্দকার মোশতাকের দলে যেতে হবে। তাদেরকে দেখলে কেউ সালামও দেবেন না।

মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরের টেকনগ পাড়ায় সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে জেলা ও মহানগর যুবলীগের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান লিখনের সঞ্চালনায় এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভাকেট আজমত উল্লা খান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT