মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১লা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ চাকসু নির্বাচন: দ্বিতীয় দিনে ১৪১ জনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ◈ নারায়ণগঞ্জে ফ্ল্যাটে স্বামী-স্ত্রী ও চার বছরের শিশুর লাশ ◈ ‘সরকারি বেতন-রেশন খাস না, গুলি করবি না কেন?’ ◈ প্রশাসনের ১৭ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন দূতাবাসে বদলি, তালিকা প্রকাশ ◈ একদিনে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ◈ টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস ◈ সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ফ্ল্যাট-জমি জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ ◈ শুধু নিন্দা জানিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানো সম্ভব নয়: মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ◈ নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীরও পদত্যাগ চায় জেন-জি ◈ গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী বেছে নিল নেপালের জেন-জিরা

ঢামেক হাসপাতালের পাহারায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

প্রকাশিত : ০৮:৫২ পূর্বাহ্ণ, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার ৬৮ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালজুড়ে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি এক ধরনের ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে প্রতিটি গেট ও ভেতরে অবস্থান নিয়েছে নিরাপত্তাকর্মীরা। চিকিৎসকদের চার দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা বলছেন, নিরাপত্তায় তারা খুশি। তাদের দাবি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যেন নিরাপত্তার সদস্য দেওয়া হয়। তবে এত নিরাপত্তায় ব্রিবত ও ভীত সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনরা। তাদের প্রশ্ন, হাসপাতালজুড়ে এত নিরাপত্তা কেন, এত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আউটডোরে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এর আগে শনিবার মধ্যরাত থেকে সোমবার পর্যন্ত আউটডোরে কোনো ধরনের চিকিৎসা দেননি চিকিৎসকরা। ওই সময়ে শত শত রোগী আউটডোরে ভিড় জমান। কিন্তু চিকিৎসা না পেয়ে তাদের ফিরে যেতে হয়।

এদিকে সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঢামেক হাসপাতাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পুরো হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সেনাবাহিনীর একাধিক সাজোয়া যান, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সারিবদ্ধ পিকআপ ভ্যান দাঁড়িয়ে আছে। সাধারণ রোগী, স্বজনরা যখন জরুরি বিভাগ হয়ে হাসপাতালটির ভেতরে প্রবেশ করছে, অনেকেই চোখ ঘুরিয়ে ওই যান ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের দেখছেন। বাইরের অবস্থা ভেদ করে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ছে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের লাইন।

জরুরি বিভাগ, ওয়ার্ড মর্গ সব জায়গায় তারা পাহারা দিচ্ছেন। প্রায় দুদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার হাসপাতালটিতে রোগী ও রোগীর স্বজনদের ছোটাছুটি ছিল চোখে পড়ার মতো। কেউ ওয়ার্ডে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন, তাদের বাড়ির লোকটা কেমন আছে। কেউ ছুটছেন চিকিৎসকবা নার্সের সন্ধানে। দুদিন পর্যন্ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে থাকা রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা পাননি, অভিযোগ রোগী ও রোগীর স্বজনদের। সোমবার ভোর থেকেই একেবারেই বদলে গেল ঢামেক হাসপাতালের চেনা চেহারাটা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, দেশের সবচেয়ে বড় ঢামেক হাসপাতাল। ফলে জখম কিংবা মৃতদের এখানেই নিয়ে আসা হয়। জরুরি বিভাগে কর্মরত ডাক্তার জাহিদ জানান, প্রায় ২দিন সেবা বন্ধের পর রোববার রাত থেকেই জরুরি বিভাগে পুরোদমে চিকিৎসাসেবা শুরু হয়েছে। শনিবার জরুরি বিভাগেই প্রকাশ্যে এক রোগীকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল দুর্বৃত্তরা। ওই সময় প্রাণ বাঁচাতে চিকিৎসক, নার্স, স্টাফরা নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছিল। কেউ কেউ আহতও হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে যে ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা খুশি। কিন্তু ভয়ভীতি ঠিকই তাড়া করছে। এর আগে ঢামেক হাসপাতালের ভেতর এমন নৃশংসতা হয়নি। চিকিৎসকদের পিটিয়ে টেনেহিঁচড়ে নেওয়া হয়নি।

৭ নম্বর জরুরি এক্স-রে রুমে গিয়ে দেখা যায়, স্টাফরা রোগীদের এক্স-রে করছেন। রুমের দুপাশে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্য। এক্স-রে রুমের দায়িত্বে মেডিকেল টেকনিশিয়ান রিফাত বলেন, এখন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কাজ করছি। কিন্তু রোগীদের মধ্যে ভয়ভীতি দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন জরুরি নিউরো সার্জারি রুমে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক আর রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। রুমটির সামনে অন্তত ৮ জন বিজিবি, পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। শনিবার রাতে এ রুমটিতে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে ৩-৪ জন ডাক্তারকে পিটিয়েছে। কাউকে কাউকে ধরে টেনেহিঁচড়ে পরিচালকের রুমে নিয়ে যান। এখনো গুরুতর আহত অন্তত তিনজন ডাক্তার চিকিৎসাধীন।

সার্জারি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মোমেন বলেন, এ রুমেই শনিবার চিকিৎসকদের পেটানো হয়েছিল। সোমবার ভোর থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি।ভয়ভীতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মামলা করা হয়েছে, এখনো সব আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি।

আজ থেকে আউটডোর চালু: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগ মঙ্গলবার থেকে চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের মুখপাত্র নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. আব্দুল আহাদ। সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, মঙ্গলবার থেকে ঢামেকের বহির্বিভাগ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চালু থাকবে। এছাড়া সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
ডা. আহাদ দুদফা ঘোষণা দিয়ে বলেন, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে যেন এই ধরনের অপরাধ না হয়।

রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে পদক্ষেপ নিতে হবে। অতি দ্রুত জেলা, উপজেলার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও রোগীর সুরক্ষায় নিরাপত্তা বাহিনী প্রদান করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘দেশে গণ-আন্দোলনের প্রধান দাবি ছিল ফ্যাসিবাদের সংস্কার। কিন্তু দেশের সবচেয়ে বড় মন্ত্রণালয় হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো সংস্কার হয়নি। দেশে আগেও চিকিৎসকদের ওপর হামলা হয়েছে, অথচ বিচার হয়নি।’ ঢাকা মেডিকেল কলেজে হামলাকারীদের মধ্যে একজন সন্ত্রাসী ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চারজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

ঢামেক হাসপাতালের নিউরো সার্জন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুবিনয় কৃষ্ণ পাল জানান, সোমবার থেকে জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালে ইনডোর সেবা প্রদান করা হয়। তবে আমাদের ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের মধ্যে এখনো ভীতি কাজ করছে। জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালের বিভিন্ন গেটে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে নিরাপত্তা চাই। রোগী, রোগীর স্বজনরা প্রায়ই উত্তেজিত হয়ে ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের ওপর চড়াও হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, নারী চিকিৎসক ও নার্সরা ভয়ভীতিতে রয়েছেন।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT