রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চতুর্থ দিনেও চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ, ভোগান্তিতে রোগীরা

প্রকাশিত : ০৬:২৮ অপরাহ্ণ, ৩১ মে ২০২৫ শনিবার ৬৬ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে সম্প্রতি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের মারামারি-সংঘর্ষের জেরে শনিবারও (৩১ মে) রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। এতে করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে।

বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এ অচলাবস্থা চলছে। চিকিৎসাসেবা কখন চালু হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আজ দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ও নার্স নেই। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নতুন রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আগে যেসব রোগী এখান থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের অনেকেই ফলোআপের জন্য এসে চলে যাচ্ছেন। ফলে রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকে সকাল থেকে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।

রোগীরা বলেন, সরকারি হাসপাতালে কয়েকদিন ধরে সেবা বন্ধ, সরকার কেন উদ্যোগ নিচ্ছে না। সাধারণ জনগণ চিকিৎসাসেবা কোথা থেকে নেবে। অর্থের সংকট থাকায় বেসরকারি হাসপাতালেও সেবা নিতে পারছি না।

এদিকে অচলাবস্থা কাটাতে শুক্রবার (৩০ মে) হাসপাতালের সচিব, হাসপাতাল প্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধিদের বৈঠক হলেও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তারা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সেবা কার্যক্রম পুরোপুরি স্থগিত রয়েছে। কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করছেন। তাদের ভাষ্য, হাসপাতালের ভেতর ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটেছে কয়েকবার। এতে আতঙ্কে রয়েছেন চিকিৎসক ও স্টাফরা।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম গণমাধ্যম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও কর্মীরা কাজে ফিরতে অনিচ্ছুক।

আগে যা ঘটেছিল:

উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ তুলে গত রোববার চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জুলাই যোদ্ধা বিষপান করেন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তারা সহযোদ্ধাদের নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা বাদে সেনাবাহিনীর সহায়তায় অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান হাসপাতাল পরিচালক। এর মধ্যে আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ গায়ে কেরোসিন-পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে পুলিশের ভাষ্য।

পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং আহতদের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন হাসপাতালের কর্মচারীরা। এ অবস্থায় হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন জুলাই যোদ্ধারা। পরে আহতদের সঙ্গে যোগ দেন বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীর স্বজনরাও।

হাসপাতালের এক চিকিৎসকের ভাষ্য, জুলাইয়ের আহতরা হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনেও হামলা চালায় এবং কর্মচারীদের শাস্তির দাবিতে তারা সেখানে স্লোগানও দেন।

খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে দুপুরে কোস্টগার্ড সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। তারপর সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে কর্মচারীদের কর্মবিরতি এবং চিকিৎসকরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ায় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT