চট্টগ্রামে পাইকারি বাজারে কমেছে চালের দাম
প্রকাশিত : ০৮:১৩ পূর্বাহ্ণ, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার ১ বার পঠিত
চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি করা চাল বাজারে আসতে শুরু করা দামের এ পরিবর্তন এসেছে। তবে খুচরা বাজারে চালের দাম এখনো কমেনি। ভোক্তাদের অভিযোগ, চালের দাম কমার খবরে খুচরা বাজারে আরও ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, খুচরা পর্যায়ে অযৌক্তিকভাবে দাম ধরা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ কথার কার্যকারিতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে জুন মাস থেকেই চোখ রাঙাতে শুরু করেছিল চালের দাম। জুলাই মাসের শেষদিকে তা হয়ে আরও বেশি অস্থির, প্রতি কেজি চাল পাইকারিতে বেড়ে যায় ২ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে সেই দাম বাড়ে ১০ থেকে ১৫ টাকার বেশি। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আগস্টের মাঝামাঝি থেকে চাল আমদানির অনুমতির তিন মাস পর বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। ফলে আপাতত চার ধরনের চালে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। পাইকারিতে দাম কমেছে ৫ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ ২১ লাখ ৩১ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। বর্তমানে সরকারিভাবে ১৯ লাখ ৫৪ হাজার টন চাল এবং ১ লাখ ৭৭ হাজার টন গম মজুত রয়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে আরও ৫ লাখ টন চাল এবং ৪ লাখ টন গম আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের চাক্তাই ও পাহাড়তলীর ব্যবসায়ীরা জানান, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, ভারত ও মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করেছে সরকার। বর্তমানে কেজিতে কমেছে ৫ থেকে ৮ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে পাইকারি বাজারে কেজিতে ৩ টাকা কমে জিরা শাইল ৭১ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৫৪ টাকা ও কাটারি আতপ ৭৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ৪ টাকা কমে প্রতি কেজি বেতি আতপ ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া পাইকারিতে প্রতি কেজি নাজির শাইল মিনিকেট ৫৭ টাকা, মোটা সেদ্ধ চাল ৪৯ টাকা ও নুরজাহান স্বর্ণা ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, খাতুনগঞ্জ, পাহাড়তলী পাইকারি বাজারসহ বিভিন্ন খুচরা দোকানে দেখা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে মোটা, মাঝারি ও সরু চালের দাম বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কেজি দরে এই কমার হার ৫ থেকে ৮ টাকা। মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, আটাশ বালাম ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা, স্বর্ণা মোটা ৫০ থেকে ৫৬ টাকা, নাজির শাইল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, বাসমতি ৯৫ থেকে ১০০ টাকা এবং চিনিগুঁড়া ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে এখনো দাম বেশি। মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা, আটাশ বালাম ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, নাজির শাইল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা মোটা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পাইজাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, বাসমতি ৯৫ থেকে ১২০ টাকা এবং চিনিগুঁড়ার প্যাকেট ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন বলেন, চালে দাম এখন দাম অনেকটাই নিম্নমুখী। তবে চকবাজার এলাকার বাসিন্দা মনীষা আচার্য বলেন, ‘পাইকারিতে দাম বাড়লেও খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। উল্টো আমদানি বাড়ার খবরে খুচরা বাজারে দাম আরও ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ছাড়া এই দাম কমবে বলে মনে হয় না।’ তবে পাইকারি আড়তদার নুর হোসেন জানান, আমদানি করা চালে সরবরাহ বাড়ায় পাইকারিতে দাম কমতে শুরু করেছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়বে বলে তিনি জানান।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চালের বাজার অস্থির ছিল। এবার ভরা মৌসুমেও নানা কারসাজিতে পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। মানুষকে অন্তত ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। চালের দাম যাতে আর না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
চট্টগ্রাম ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘আমরা বাজার পর্যবেক্ষণ করছি। যদি দেখা যায় খুচরা পর্যায়ে অযৌক্তিকভাবে দাম ধরে রাখা হয়েছে, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।