বৃহস্পতিবার ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষতি পোষাতে নজর নগদ সহায়তার দিকে

প্রকাশিত : ০৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ, ১০ অক্টোবর ২০২৪ বৃহস্পতিবার ৯৪ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

তৈরি পোশাকশিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ ও আন্দোলনের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জোর দেওয়া হচ্ছে বকেয়া সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার নগদ প্রণোদনা আদায়ে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সেপ্টেম্বরের বেতন-ভাতা পরিশোধে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে ব ল্লা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। সম্প্রতি প্রস্তাব দুটি নিয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিজিএমইএ-এর নেতারা। এর আগে সংগঠনটি স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের জন্য অর্থ উপদেষ্টাকে চিঠি দেয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

বিকেএমইএ-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বুধবার জানান, শ্রমকিদের বেতন পরিশোধের জন্য ব্যাংক ঋণ দেওয়ার বিষয়টি অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন আমাদের। এরপরও ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আমাদের পড়ে থাকা নগদ রপ্তানি সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছি। বিজিএমইএ-এর হিসাবে গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তার অঙ্ক ৬ হাজার কোটি টাকা, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা আছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে ১৪০০ কোটি টাকা ছাড় করেছে। বাকি আছে ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এ মুহূর্তে ৩ হাজার কোটি টাকা পাওয়া গেলেও আর্থিক সংকট অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হতো। মঙ্গলবার এ বিষয়টি অর্থসচিবকেও অবহিত করেছেন বলেন জানান তিনি।

সম্প্রতি শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে সাভার ও আশুলিয়া এ ল্লাকার কারখানাগুলোয়। ওই সময় ভাঙচুর, হাম ল্লা, লুটতরাজের কারণে ৩৯টি কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারখানাগুলো প্রায় ২০ দিন বন্ধ ছিল এবং কোনো উৎপাদন হয়নি। কারখানাগুলো হচ্ছে এআর জিনস প্রোডাক্টকশন, আগামী অ্যাপারেলস, আলপস অ্যাপেয়ার্স লি., এআর ওয়েট প্রসেসিং, ক্রাফট অ্যাপারেলস লি., ক্রুজওয়ার ইন্ডাস্ট্রিজ, ডিলপস অ্যাপারেল লি., ডুকতি অ্যাপারেলস, ডেকো ডিজাইন ও ড্রেসি ক্লথিং লি., ইথিক্যাল গার্মেন্টস এবং ফ্রেবিকা নিট কম্পোজিট লি.। এছাড়া এফজিএস ডেনিম ওয়ার লি.. এফএনএম ট্রেন্ড ফ্যাশন, ফিউটার ক্লথিং, ফ্যাশন ফোরাম লি., ফ্যাশন কম লি., জিমেক্স ক্লথিং, গ্রিন ল্লাইফ নিটেক্স, হারুটস নিটওয়্যার, হেংটং বিডি লি., ইমান নিটওয়্যার, মিলেনিয়াম ড্রেস, মিলেনিয়াম টেক্সটাইল, রেডিয়্যান্স ফ্যাশন, রেডিয়্যান জিন্স, সাউথয়ার্ন ক্লথিং, সাউথয়ার্ন সার্ভিস লি. ও স্পার্টন ফ্যাশন লি.।

সূত্রমতে, মঙ্গলবার পোশাকশিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা। ওই বৈঠকে সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। সেখানে শ্রমিক আন্দোলনের কারণে বন্ধ থাকায় ৩৯টি শিল্পকারখানায় বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আন্দোলনের সময় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও এখন বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলো দারুণ আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। ফলে তাদের পক্ষে সেপ্টেম্বরের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা দুরূহ হয়ে পড়ছে। রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে ওই বৈঠকে ব ল্লা হয়, এমনিতে দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, তার ওপরে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়াতে হচ্ছে। কিন্তু পোশাকের ক্রেতারা কোনোভাবে দাম বাড়াতে রাজি নন। এ অবস্থায় পাওনা বাকি নগদ সহায়তার অর্থছাড় করা দরকার। কিন্তু সময়মতো প্রাপ্য এ সহায়তা না পাওয়ায় পরিস্থিতি সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে।

সূত্রমতে, পোশাক খাতের আর্থিক সংকট নিয়ে গত সপ্তাহে চিঠি দিয়ে অর্থ উপদেষ্টাকে অবহিত করেছে বিজিএমইএ। সংগঠনের সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইস ল্লাম অর্থ উপদেষ্টার কাছে দেওয়া চিঠিতে বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন ও হামাস ইসরাইল যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবি ল্লা করছে পোশাকশিল্প। এর মধ্যে দেশে গণ-অভ্যুত্থানের কারণে প্রতিযোগী বিদেশি রাষ্ট্র এবং দেশের একদল স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এ শিল্প ধ্বংসে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে সাভার ও আশুলিয়া এ ল্লাকার কারখানাগুলোয় কিছু স্বার্থান্বেষী বহিরাগত লোকজন স্থানীয় লোকের সহায়তায় ভাঙচুর, লুটতরাজসহ হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে। যে কারণে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়, আবার চালু করলেও পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হয়নি। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে চলমান রপ্তানির আদেশগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। লিড টাইমের মধ্যে রপ্তানি পণ্য পৌঁছাতে না পারলে অর্ডার বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সুযোগ নিয়ে বিদেশি অনেক ক্রেতা মূল্যে ডিসকাউন্টও দাবি করছে। এদিকে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে দেশের রপ্তানি আয়ের শীর্ষ খাত তৈরি পোশাকশিল্পে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতেও সেপ্টেম্বরে এ খাতের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ৩৮৬ কোটি ড ল্লার। গত বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৩৩২ কোটি ড ল্লার।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT