কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এটি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে–ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল এবং টোটাল কোলেস্টেরল। এর মধ্যে একটি হলো উপকারী। বাকি তিনটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
কখনও কখনও আপনার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলেও শরীরে কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায় না। হয়তো আপনার অনেক বছর ধরেই উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল আছে কিন্তু আপনি বুঝতে পারেননি। এটি নির্ণয় করা জরুরি। কারণ উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের সঙ্গে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সম্পর্ক রয়েছে।
সবসময় বোঝা না গেলেও কিছু কিছু উপসর্গের মাধ্যমে আপনি উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগছেন কিনা তা জানা যায়। যেমন–
১. চোখের পাতায় বা চোখের নিচের দিকে ব্যথাহীন হলুদাভ ভাব দেখলে তা এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। এটি চোখের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা করে না। কিন্তু এটি উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ প্রকাশ করে।
২. আয়নার খুব কাছাকাছি গিয়ে লক্ষ্য করুন আপনার চোখের মণির চারপাশে ধূসর রঙের কোনো গোলাকার দাগ দেখা যাচ্ছে কিনা? এটি সাধারণত ৪০ বছরের পরে বেশি দেখা যায়। এটিও কোলেস্টেরলের উপসর্গ বলে ধরা হয়।
৩. উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে রক্তনালিতে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যেতে পারে। তখন হৃদরোগের ভয়াবহ ঝুঁকি থাকে।
৪. উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে মস্তিষ্কেও অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি হতে পারে। এ কারণে ঘাড়ে এবং কাঁধে মাঝেমধ্যে তীব্র ব্যথা হতে পারে। অনেক চিকিৎসকের মতে, উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে মাথার পেছনেও তীব্র ব্যথা দেখা দিতে পারে।
৫. অতিরিক্ত হৃৎস্পন্দন বেশির ভাগ সময়ই ক্ষতিকর নয়। সাধারণত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের পর হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। কখনও এটি উদ্বিগ্নতা কিংবা বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও হয়। তবে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া কখনও কখনও হৃদরোগের কারণেও হতে পারে। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকলে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়।
৬. অতিরিক্ত ফ্যাটি খাবার খেলে এবং ফলমূল ও শাকসবজি না খেলে কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে। আবার অতিরিক্ত ওজন, অ্যালকোহল পান এবং কোনো ধরনের ব্যায়াম না করলেও কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা থাকে। কারও পরিবারে যদি কোলেস্টেরলের ইতিহাস থাকে, তাদেরও কোলেস্টেরল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
তারপরও কোলেস্টেরলের মাত্রা সুনির্দিষ্টভাবে কী পরিমাণ রয়েছে, তা জানার জন্য খালি পেটে রক্তের লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষাটি প্রতিবছর অন্তত একবার করে দেখুন।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবারে অভ্যস্ত হোন, নিয়মিত ব্যায়াম করুন, ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। পাশাপাশি দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপনের চেষ্টা করুন।
লেখক: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
প্রকাশক মোঃ সোহেল রানা ও সম্পাদক: মোঃ মোজাম্মেল হক। ২৭, কমরেড রওসন আলী রোড, বজলুর মোড়, কুষ্টিয়া-৭০০০।
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | Design and Developed by- DONET IT