বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আসছে নিষেধাজ্ঞা, উপকূলজুড়ে বিষাদের ছায়া

প্রকাশিত : ০৫:৫৯ অপরাহ্ণ, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রবিবার ৩৪ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ভরা মৌসুমে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরে আশানুরূপ দেখা মিলছে না ইলিশের। প্রতিবছর এ সময় নদী-সাগরজুড়ে ইলিশের ছড়াছড়ি থাকলেও এবার জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়ছে না। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন জেলে ও মাছ ব্যবসায়ী হাজারো পরিবার। ইতোমধ্যে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।

গত বছর ১২ অক্টোবর থেকে অভিযান শুরু হলেও এ বছর ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত সময় নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিদিন হাতিয়ার বিভিন্ন ঘাট থেকে হাজারো জেলে মাছ ধরতে গেলেও প্রায়ই খালি জাল টেনে ফিরছেন। যেসব নৌকায় অল্প ইলিশ ধরা পড়ছে, তা দিয়ে শ্রমিকের মজুরি ও জ্বালানির খরচও মেটানো যাচ্ছে না। বাজারেও সরবরাহ কম থাকায় ইলিশের দাম হু-হু করে বেড়ে গেছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে শুধু জেলেরাই নয়, ক্ষতির মুখে পড়বেন আড়তদার, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাজারের মাছ বিক্রেতারাও। অনেকেই পেশা পরিবর্তনের কথাও ভাবছেন।

স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, সাগর ও নদীতে ইলিশ থাকলেও আগের মতো আর জালে ধরা পড়ছে না। কিছু দিন সামান্য মাছ পেলেও নতুন করে ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা তাদের আবারও হতাশ করেছে। গত বছর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছিল ১২ অক্টোবর থেকে, তবে এবার তা এগিয়ে আনা হয়েছে ৩ অক্টোবর থেকে। ফলে অনেকে তারিখ পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছেন।

মৎস্য ব্যবসায়ী হাসান মাঝি জানান, পরিবার চালানো ভীষণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। শুধু জেলেরাই নয়, কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরাও। ইলিশের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ী, আড়তদার এবং বাজারের বিক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকেই ঋণ করে নৌকা ও জাল কিনেছিলেন, এখন ঋণ শোধ করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সূর্যমুখী মাছ ঘাটের সভাপতি মো. আলাউদ্দিন বলেন, ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল জেলেদের জীবনে বড় কষ্ট ডেকে এনেছে। জেলে, ব্যবসায়ী, আড়তদার ও শ্রমিক সবাই ঋণের বোঝায় জর্জরিত। কিছু ইলিশ যখন ধরা পড়া শুরু হয়, তখনই সরকার নিষেধাজ্ঞা দেয়। আমরা চাই তারিখ পুনর্নির্ধারণ করা হোক এবং ভারত-বাংলাদেশ একই সময়ে নিষেধাজ্ঞা দিক। নইলে তারা আমাদের এলাকায় মাছ ধরে নিয়ে যায়, এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই।

হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফাহাদ হাসান জানান, ডুবোচর, প্রতিকূল আবহাওয়া, অতিরিক্ত মাছ শিকার ও পরিবেশগত পরিবর্তনের কারণে ইলিশের প্রজনন ও মজুতে প্রভাব পড়তে পারে। সরকার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মা ইলিশ রক্ষায় এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে নদী ও সাগরে বড় ইলিশের সংখ্যা বাড়বে। তখন জেলেরা আরও বেশি মাছ ধরতে পারবেন এবং অনেক বেশি যা তাদের জীবনে স্বস্তি আনবে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT