শুক্রবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাই নির্ধারণ করবে চাকসুর ফল

প্রকাশিত : ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার ১৩ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হওয়ার পর থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনী আমেজ। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন প্রার্থী চূড়ান্তকরণে ব্যস্ত সময় পার করছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি সংগঠন প্যানেল ঘোষণা করেছে, বাকিরা নিচ্ছেন প্রস্তুতি। তবে এবারের নির্বাচনে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে অন্যতম অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোটদান এবং তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চাকসু নির্বাচনের ফল নির্ধারণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবেন এই শিক্ষার্থীরাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার ৫১৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য আবাসিক হল রয়েছে মাত্র ১৪টি, যেখানে আসনসংখ্যা প্রায় ৬ হাজার ৩৬৯টি। নানাভাবে ভাগাভাগি করে সর্বোচ্চ ৯ হাজার শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করতে পারলেও বাকি প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী হলের বাইরে অবস্থান করছেন, যাদের বড় একটি অংশ শহরে বসবাস করছেন। অনেকেই গ্রামে থাকা কটেজ ছেড়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে শহরে উঠে এসেছেন। ফলে এই বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরে থাকা শিক্ষার্থীদের ভোট নিশ্চিত করতে বিশেষ বাস সার্ভিস, শাটল ট্রেনের সময়সূচি বাড়ানো কিংবা শহরেই ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দাবি উঠেছে। আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আল মোদাসসের বলেন, শহরে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করা হলে তারা ভোটদানে আগ্রহী হবে। সমাজতত্ত্ব বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রায়হান আলম মনে করেন, শহরে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা গেলে ভোটারদের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে।

ছাত্রদলের শাখা সিনিয়র সহসভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, গ্রামবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর অনেকে নিরাপত্তা শঙ্কায় শহরে চলে গেছেন। তাই শহরে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করলে অংশগ্রহণ বাড়বে। প্রশাসনের সুবিধাজনক স্থানে তিন থেকে পাঁচটি ভোটকেন্দ্র করা যেতে পারে।

স্টুডেন্টস এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসির মুখপাত্র জগলুল আহমেদ বলেন, শহরের শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এ জন্য তাদের জন্য শাটল ট্রেনের সময়সূচি বাড়ানো এবং প্রয়োজন হলে শহরে ভোটকেন্দ্র করা যেতে পারে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব রোমান রহমান বলেন, শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ও উপজেলাগুলোতে বাস সার্ভিস চালু করতে হবে। না হলে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হবে।

তবে ভিন্ন মত পোষণ করেন ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। তিনি মনে করেন, শহরে ভোটকেন্দ্র করা হলে নির্বাচনে অস্বচ্ছতা তৈরি হবে এবং পেশিশক্তি ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।

এদিকে এখনো চূড়ান্ত হয়নি কোন ধরনের ব্যালট বক্স ব্যবহার হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, স্বচ্ছ ব্যালট বক্স ব্যবহারের চেষ্টা চলছে, তা সম্ভব না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ব্যালট বক্স ব্যবহৃত হবে। ভোট গণনা হাতে নাকি ওএমআর মেশিনে হবে, সেটিও এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন জানিয়েছেন, ভোটকেন্দ্র ক্যাম্পাসেই থাকবে। শহরে কেন্দ্র করার সুযোগ নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

সবদিক বিবেচনায় অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন পরিপূর্ণ হবে না—এমনটাই মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংগঠনের নেতারা। তারা বলছেন, এই বিশাল ভোটার গোষ্ঠীই নির্ধারণ করে দিতে পারে এবারের চাকসুর ভাগ্য।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT