শুক্রবার ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অগ্রগতি পর্যালোচনা বছরের শেষ দিকে

প্রকাশিত : ১০:১৩ অপরাহ্ণ, ১৬ এপ্রিল ২০২৩ রবিবার ১৫৬ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশকে দেওয়া শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে চলতি বছরের শেষ দিকে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশ উৎপাদনের )জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে ৫ শতাংশ এটি একেবারে মন্দ নয়।

বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন আইএমএফের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠক চলাকালে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অগ্রগতি নিয়ে ভার্চুয়াল এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এতে তিনি বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন আরও বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৈদেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতি বাংলাদেশের প্রতিকূলে চলে গেছে। মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবের ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করেছে। এই চাপ মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ঋণ চায়।

আইএমএফ একটি ঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে এতে সক্রিয়ভাবে সাড়া দিয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি স্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। এর অংশ হিসাবে বাংলাদেশ কিছু সংস্কার কাজ শুরু করেছে। এই বছরের শেষ দিকে ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে। এটি সম্পন্ন হলে দেশটির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের হালনাগাদ অগ্রগতি জানা যাবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে তারা ভর্তুকি কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বাজারভিত্তিক একটি একক বিনিময় হার চালুর চেষ্টা করছে।

জিডিপির প্রবৃদ্ধি প্রসঙ্গে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এই পরিচালক বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাড়ে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনকে মন্দ বলা যাবে না। মন্দার কারণে বৈশ্বিকভাবে চাহিদা কমেছে। এ কারণে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে চাহিদা এখন নিুমুখী। এতে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি ঋণের প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পেয়েছে। ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি আগামী নভেম্বরে পাওয়ার কথা। এর আগে আগামী জুনের মধ্যে আইএমএফের যেসব শর্ত বাস্তবায়নের কথা ছিল ও আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে সেগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে আইএমএফ মিশন এ বছরের শেষ দিকে।

সূত্র জানায়, আগামী জুনের মধ্যে আইএমএফের ৮টি শর্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। এগুলো হচ্ছে, আগামী অর্থবছরের মোট জিডিপির আকারের দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া, ব্যাংকের ঋণ নবায়নকারীদের তালিকা ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বার্ষিক আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনে প্রকাশ করা, ব্যাংকগুলোতে ঝুঁকিভিত্তিক সুপারভিশন ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া, ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল সংসদে উপস্থাপন, সরকারি কেনাকাটার নিয়ম আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নেওয়া, সুদ হারের সীমা তুল দেওয়া, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিট হিসাব প্রকাশ করা। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আগামী জুলাই থেকে সুদ হারের সীমা তুলে দেওয়া হবে। বিনিময় হার বাজারভিত্তি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিট হিসাব প্রকাশ করা হবে। ঝুঁকিভিত্তিক সুপারভিশন ব্যবস্থা বর্তমানে চালু আছে, এটিকে আরও কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের প্রস্তাব ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদে পাশ হয়েছে। ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন সংশোধনের কাজ চলছে।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক ও ভ্যাট উইংয়ে সমন্বিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিট স্থাপন করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে জ্বালানি পণ্যের দাম সমন্বয় করতে কাঠামো তৈরি, ব্যাংককে আন্তর্জাতিক মানের অডিট ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া, সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমানোর পরিকল্পনা প্রনয়ন, ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে জিডিপির হিসাব প্রকাশ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি বিষয়ক তথ্য প্রকাশের নীতি করার উদ্যোগ নিতে হবে। এদিকে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে বাংলাদেশের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঋণের শর্ত পূরণে বাংলাদেশের উদ্যোগে খুশি আইএমএফ। তিনি দৃঢ় আশাবাদী ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতেও কোনো সমস্যা হবে না।

গভর্নর আরও জানিয়েছেন, এ মাসের শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বব্যাংক সফরের সময় ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তার ঘোষণা আসতে পারে। শ্রীলংকার কাছ থেকে পাওনা ২০ কোটি ডলারও ফেরত পাওয়া যাবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT