২০২৫ সালের হজ নিবন্ধনে প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি
প্রকাশিত : ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ সোমবার ১৭ বার পঠিত
২০২৫ সালের হজের জন্য নিবন্ধনের সময় রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) শেষ হলেও প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি। গত বছরের তুলনায় খরচ এক লাখ টাকার বেশি কমানো এবং নিবন্ধনের সময় একাধিকবার বাড়িয়েও কোটা পূরণ সম্ভব হয়নি। সৌদি সরকারের বরাদ্দকৃত ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটার বিপরীতে মাত্র ৭০ হাজার হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন, যা মোট কোটার ৫৫ শতাংশ।
নিবন্ধনের বর্তমান অবস্থা
রবিবার রাত ৮টা পর্যন্ত হজ পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন ৬২ হাজার ২১২ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করেছেন ৪ হাজার ৭৫৯ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৭ হাজার ৪৫৩ জন। এছাড়া প্রায় ৮ হাজার হজযাত্রী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছেন। তবে জমাকৃত টাকার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক কর্মদিবস লাগবে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের ছুটি থাকায়, এসব টাকা মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) জমা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সময় বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ অনুবিভাগ) ড. মো. মঞ্জুরুল হক জানিয়েছেন, সময় বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, “সৌদি সরকারের আল্টিমেটামের কারণে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে হজযাত্রীদের টাকা পাঠাতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত ৫নং তাঁবু পাওয়া যাবে না।”
বিমান ভাড়া কমানোর দাবি
নিবন্ধনের হতাশাজনক পরিস্থিতিতে হজ কোটা পূরণে ধর্ম মন্ত্রণালয় বিমান ভাড়া আরও কমানোর সুপারিশ করেছে। ইতোমধ্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়কে বিমান ভাড়া ২৭ হাজার ৮২০ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছেন। তার মতে, বিমান ভাড়া কমালে নিবন্ধনের হার বাড়তে পারে এবং বাংলাদেশ সরকারের সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।
প্যাকেজের বিশদ বিবরণ
সরকার ৩০ অক্টোবর দুই ধরনের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। সাশ্রয়ী প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৪২ টাকা এবং আরেকটি প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। যদিও এ বছর খাবারের জন্য ৪০ হাজার টাকা এবং কোরবানির জন্য ৭৫০ সৌদি রিয়াল আলাদাভাবে দিতে হবে। এটি গত বছরের চেয়ে ভিন্ন, কারণ গত বছর খাবারের খরচ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বেসরকারি এজেন্সিগুলোও এসব প্যাকেজের সঙ্গে মিল রেখে খরচ নির্ধারণ করেছে এবং বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়েছে।
উদ্বেগ ও প্রভাব
২০২৫ সালের হজে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, খরচ কমানোর পরেও নিবন্ধনের এমন নিম্ন হার বেশ কিছু কারণকে ইঙ্গিত করে। এর মধ্যে বিমান ভাড়া, অর্থনৈতিক চাপ, এবং সামগ্রিক পরিকল্পনা ঘাটতির মতো বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য। নিবন্ধন কম থাকায় সৌদি আরবে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য বরাদ্দ কোটার সুষ্ঠু ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলে হজ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে। বিমান ভাড়া কমানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে হজ ব্যবস্থাপনার আরও স্বচ্ছ ও আকর্ষণীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি। সরকারের উচিত প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতার কথা বিবেচনা করে হজ প্যাকেজ পুনর্গঠন এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।