বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হ্যালোইনের স্মৃতিচারণ

প্রকাশিত : ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ, ২১ অক্টোবর ২০২২ শুক্রবার ৮৯ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

মরতে তো একদিন হবেই। এই চিরন্তন সত্যকথন সবাই জানে। মৃত্যুতে কি মজা, না কি সাজা? তা শুধু সেই জেনেছে যে মরেছে। তবে সহজ ও সরল ভাষাতে কাগজের পাতায় লিখে গেছেন শরৎচন্দ্র তার শ্রীকান্ত উপন্যাসে- ‘মরতে তো একদিন হবেই’। এটা এক চিরন্তন সত্য কথা এবং যা ঘটতে পারে যে কোনো সময়।

তারপরও থেমে নেই জীবন। জীবন চলমান, ভালো মন্দের এক মিশ্র প্রতিক্রিয়াই চলছে মানবজীবন। জন্ম-মৃত্যুর মাঝখানে রয়েছে সময়। এই সময়ের মধ্যে চলছে সংগ্রাম, বেঁচে থাকার সংগ্রাম। এই সময়ে আপন হচ্ছে পর, পর হচ্ছে আপন, ধনী হচ্ছে গরীব, গরীব হচ্ছে বড়লোক। রাত হচ্ছে দিন, দিন হচ্ছে রাত। মরার পর কি হচ্ছে? তা জানিনে, তবে ধর্মীয় মতে নানা ধর্মে নানা বিশ্লেষণ রয়েছে।

আজ কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করব, আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সময়ের ওপর। এমন একটি সময় অক্টোবরের শেষের দিন এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের উইকেন্ডে, ্ধবীরা বলেছে কেন এই ছুটি এবং কিসের জন্য ছুটি? অক্টোবরের শেষের দিন এবং নভেম্বরের প্রথম উইকেন্ড ধর্মীয়ভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই উইকেন্ডে এরা সেজে গুজে ফুলের তোড়া সাথে মোমবাতি নিয়ে ‘সির্কগোর্ডেন’ বা কবরস্থানে যেয়ে মৃত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া- প্রার্থনা করে থাকে। এটা এই সময়ের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান যা এদের ভাষাতে বলা হয় ‘আল হেলগোন’ বাংলায় বলা যেতে পারে সপ্তাহের বা উইকেন্ডের পবিত্র দিন।

একই সাথে অ্যামেরিকাতে এবং আরো কিছু দেশে এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয়ে থাকে, যাকে বলা হয় ‘হ্যালোইন উইকেন্ড’। হ্যালোইন উৎসব পালন ্ধানে পাড়ি জমাতে শুরু করে অ্যামেরিকাতে। আইরিশদের অ্যামেরিকা আগমনে এরা নিয়ে আসে এদের ঐতিয্য যাকে বলা হয় ‘হ্যালোইন’।

হ্যালোইন বড় আকারে এবং ট্রেডিশনালি পালন হয়ে আসছে অ্যামেরিকাতে তখন থেকে। তখনকার সময়ে আইরিশদের ধারণা ছিল মৃত ব্যক্তিরা পৃথিবীতে ফিরে আসে এই উইকেন্ডে, এক বিস্ময়কর ও ভয়ংকর রূপ ধারণ করে, যার কারণে হ্যালোইনের পোশাক -আশাকেরও এক ভিন্ন রূপ যা আমাদের ভাষাতে অনেকটা ভূত-প্রেত্নীর রূপে সেজে দিব্বি এক ভয়ানক দৃশ্যের সৃষ্টি করে নিজেদেরকে, যা দেখলে ভয় না পাবার কোনো কারণ নেই, যদি কেও বিষয়টি সম্পর্কে না জানে। একই সময় এবং একই ধর্মে বিশ্বাসী মানবজাতি এই ধর্মীয় উৎসবকে ভিন্নভাবে পালন করে চলেছে, শুধু পার্থক্য এদের বসবাস ভিন্ন দেশে।

বহু বছর হতে চলছে দেখা যাচ্ছে যে সুইডেনেও এই অ্যামেরিকান হ্যালোইন একই উইকেন্ডে পালন হচ্ছে। নরমালি শুক্রবার রাতে হ্যালোইন উৎসব পালন করা হয় এবং শনি বারে আল হেলগোন পালন করা হয়ে থাকে। ছোট ছোট বাচ্চারা ভূত-পেত্নীর রুপে সেজে বেশ আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে এই উইকেন্ড পালন করে। মিষ্টি কুমড়া নানা ভাবে ডেকোরেট করা হয় এবং এই মিষ্টি কুমড়ার ওপর খাবারের বিশেষ আইটেম তৈরি করা হয় এই দিনে। মৃত ব্যক্তিকে স্মরণ করা হয় ঠিকই, তবে ধরণ এবং কারণটি কিছুটা ভিন্ন। এই উইকেন্ডের একই উদ্যেশ্য তবে পালন করা হয় ভিন্ন রকমে।

তাহলে কি মৃত্যুর পর ভালো কর্মের ফলে কেও হবে এঞ্জেল, খারাপ কর্মে কেও হবে ভূত-পেত্নী, তাই কি এমনটি করে পালন করা? যাই হোক না কেনো, এত বছর ধরে বিষয়টি লক্ষণীয় সত্ত্বেও এমনটি করে ভেবে দেখিনি এর আগে যা আজ লিখতে বসেছি।

্ধকার। আশপাশে তেমন কেউ নেই, বেশ একাকি। ওয়েদার খুবই জঘন্য বলতে হয়, ্ধবী কেউ সেখানে নেই। উইকেন্ড, তাই সবাই যার যার বাড়িতে চলে গেছে। ডর্মিটরিতে শুধু আমি একা।

হঠাৎ দরজার বেল বেজে উঠল। দরজা খুলতেই সামনে তাকিয়ে দেখি দুই পেত্নীর চেহারা। পেত্নী কি? শুধু কল্পনাতে বাংলাদেশে থাকতে শুনেছি অনেকের থেকে যে চেহারাই এক কুৎসিত ভয়ংকর রূপ। চোখে দেখিনি শুধু শুনেছি। ভূত ্ধকার রাতে আমার রুমের সামনে কেনো বা কিসের জন্য দুই প্রেত্নীর চেহারাযুক্ত জীবের আবির্ভাব? গা অবশ হয়ে গেছে দেখা মাত্রই। সুইডেনে ভূত? বাংলাদেশে এর নাম শুনেছি, চোখে দেখিনি। আজ সরাসরি ভূতের দেখা, তাও দরজার সামনে? দরজা খুলতেই নিচে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি। কিছুক্ষণের জন্য মৃত্যুর স্বাধ গ্রহনও করেছি মনে হচ্ছে, তবে কিছুই মনে নেই। আমি তো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি, মরে গেছি। হঠাৎ হুঁশ হতেই স্মৃতি চারণের সাথে সাথে উপলব্ধি করতে শুরু করছি, দুই সুন্দরী রমণী আমার বিছনাতে এবং আমার জ্ঞান ফেরাতে মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে চেষ্টা করছে। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে বেশ এক মধুময় আবেগের সৃষ্টির সাথে আমি আমাকে ফিরে পেতেই চোখ মেলে দেখি দুই রমণী, সাথে চলছে রমণীদের চুম্বনের ঢেউ। জ্ঞান ফিরছে এবং ভালোই লাগছে। একই সাথে নড়াচড়া করতে ভয় হচ্ছে, ভুত-প্রেত্নীর ব্যাপার কখন কি করে? হঠাৎ তাদের কথা শুনতে পারছি। ্ধবী, ছারা আর সুজান, কী ব্যাপার? চোখের পাতা তুলতেই তো তারা ্ধবীরা আমাকে হ্যালোইনের পার্টিতে সারপ্রাইজ দিতে যে প্লান করেছিল তা পুরোপুরি সার্থক না হলেও আংশিক পূর্ণ হয়েছিল ঠিকই তবে ভয় তারাও পেয়েছিল সেদিন, কারণ তারা মনে করেছিল আমি হার্টফেল করেছি। সেদিন সেই রাতের আদর-যত্ন ছিল ক্ষনিকের এক ব্যস্ত সময়। তাদের ্ধবীর সব গল্প এবং ঘটনা শুনতে শুনতে কখন রাত যে সকালে পরিণত হয়েছিল জানিনে, তবে সেদিন প্রথম জেনেছিলাম হ্যালোইন দিনটির কথা। দিনের মূল উদ্যেশ্য নানা ভাবে সেজে-গুঁজে একে অপরকে ভয় দিতে চেষ্টা করা।

্ধবীর সমন্বয়ে। আজ মনে পড়ে গেলো সেদিনের সেই মেমোরি। সামনে সুইডেনে হ্যালোইন সাথে আল হেলগোনের দিন। এমন দিনে পৃথিবীর মানবজাতি এক ভালোবাসার সমন্বয়, অন্য, বস্ত্র, ভাষা, কালচার, ধর্ম, বর্ণ, ক্লাইমেট ও নেচারের পরিবর্তন সত্ত্বেও সুন্দরভাবে একত্রে বসবাস করছি with mutual respect, understanding, tolerance and love – এর চেয়ে সুন্দর পরিবেশ আর কী হতে পারে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।



এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT