বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সন্ধ্যা নামলেই মোবাইল ধরা নিষেধ যে গ্রামে

প্রকাশিত : ০৭:০৩ পূর্বাহ্ণ, ২৯ অক্টোবর ২০২২ শনিবার ৪৯ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

প্রযুক্তির উৎকর্ষের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে গ্রামে। কিশোর থেকে বয়স জ্যেষ্ঠ সবার হাতে স্মার্টফোন। সামাজিক বন্ধনের মিলনস্থল হিসেবে যে গ্রামকে আমরা জানি; গত কয়েক বছরে সেই গ্রাম আমূল বদলে গেছে। যে যার মতো মোবাইল হাতে ব্যস্ত। বিশেষ করে কোভিড মহামারী আসার পর এই আসক্তি আরও বেড়ে গেছে; যা সত্যিই ভয়াবহ।

আর এ থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে ভারতের মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলার ভারগাঁও গ্রামের ৩ হাজার গ্রামবাসী নিজেদের মধ্যে নতুন নিয়ম চালু করেছে। আর তা হলো ডিজিটাল ডেট অফ।

সন্ধ্যা নামলেই ওই বেজে ওঠে সাইরেন। আর সাইরেন শব্দে একে একে বন্ধ হয়ে যায় গ্রামের সমস্ত মোবাইল ও টেলিভিশন। দেড় ঘণ্টার জন্য অফলাইনে চলে যায় পুরো গ্রাম। পরবর্তী সাইরেন না বেজে ওঠা পর্যন্ত গ্রামের কেউ মোবাইল ব্যবহার করে না। স্ক্রিন আসক্তি কমাতে এমনি অদ্ভুত এক নিয়ম চালু করেছে ভারতের প্রত্যন্ত ওই গ্রামটি।

সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় এই ডিজিটাল ডেট অফ এবং শেষ হয় রাত সাড়ে ৮টায়। এই সময়টাতে গ্রামের বাচ্চাদের পড়াশোনা এবং গ্রামবাসীদের একে অপরের সঙ্গে মৌখিক কথোপকথনের মতো অসামাজিক কার্যকলাপে উৎসাহিত করা হয়।

ভারগাঁও গ্রামের কাউন্সিলর বিজয় মহিত এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এ বছর ভারতের স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন গ্রামের সবাই আলোচনায় বসে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরের দিন থেকেই এই নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।

কিন্তু কেন নেওয়া হলো এই সিদ্ধান্ত। এ প্রসঙ্গে বিজয় মহিত জানান, করোনা মহামারির লকডাউন শুরু হওয়ার পরে বাচ্চারা অতিমাত্রায় মোবাইল ফোন আসক্ত হয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে মহামারীর সময় বাধ্যতামূলক অনলাইন ক্লাস চালু হওয়ার পর থেকেই এই সমস্যা বাড়ছিল। অনলাইন ক্লাস শেষ হওয়ার পরেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল ফোনে মগ্ন থাকতো।

এমনকি নিয়মিত অফলাইন ক্লাস শুরু হলেও দেখা গেল বাচ্চাদের বেশিরভাগই ক্লাসে অমনোযোগী। এখানেই শেষ নয় স্ক্রিনে শক্তির প্রভাব পড়েছিল বড়দের মধ্যেও। দেখা গেল বড়রাও নিজেদের মধ্যে কথা বলা এবং পরিবারকে সময় দেওয়ার পরিবর্তে মোবাইলের পেছনে অনেক বেশি সময় ব্যয় করছে।

এমন পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য গ্রামের সবাই মিলে কাউন্সিলর এর কাছে গেল। গ্রাম্য কাউন্সিলরের পক্ষে ডিজিটাল দুনিয়ার অন্যতম এই আসক্তি থেকে সবাইকে দূরে রাখার কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। কাউন্সিলর তখন গ্রামের সবাইকে বিশেষ করে নারীদেরকে ডেকে আনেন এবং তাদের মতামত জানতে চান। নারীরা অকপটে স্বীকার করেন- টিভি সিরিয়াল দেখা ও মোবাইলের পিছনে তাদের অনেক সময় ব্যয় হয়ে যায়। গ্রামের নারীরা সবাই চান যেন পুরো গ্রামে কয়েক ঘণ্টার জন্য টিভি এবং মোবাইল বন্ধ রাখার নিয়ম করা হয়।

এরপর আরেকটি সভায় সিদ্ধান্ত হয়- গ্রামের মন্দিরের ওপর সাইরেন লাগানো হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে তা বাজানো হবে। তারপর থেকে নিয়ম মেনে দেড় ঘণ্টার জন্য অফলাইনে চলে যায় পুরো এই গ্রামটি। অন্তত কিছুটা সময়ের জন্য হলেও ডিজিটাল দুনিয়ার মোহ কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনকে উপভোগ করতে পারে তারা।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।



এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৩ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT